আর কমের সত্ত্ব বিক্রির ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

২০০৫ সালে অনিল ও মুকেশ আম্বানিক ইচ্ছেতেই ভাগ হয়ে যায় আম্বানির শিল্পসাম্রাজ্য। তেল ও গ্যাসের ব্যবসার দায়িত্ব নেন মুকশ আম্বানি। অন্যদিকে টেলিকমের ব্যাটন নিজের হাতে রাখেন ধীরুভাই আম্বানির ছোট ছেলে অনিল।

Updated By: Mar 22, 2018, 02:48 PM IST
আর কমের সত্ত্ব বিক্রির ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদন : ঋণগ্রস্ত রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্স (আর কম)-এর সত্ত্ব হস্তান্তরের ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। গত ডিসেম্বরে ছোট ভাই অনিল আম্বানির ঋণগ্রস্ত সংস্থা রিলায়েন্স কমিউনিকেশন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বড়ভাই মুকেশ আম্বানির সংস্থা। সেই প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারক। সেই সঙ্গে আর কমকে তাদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।  

গত কয়েক বছর ধরে ক্রমশ ঋণের বোঝা বাড়ছিল অনিল আম্বানির আর কম-এর। ঋণের পরিমান পৌঁছেছে ৪৫,০০০ কোটিতে। এই পরিস্থিততে সংস্থায় ২৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করে মুকেশ আম্বানির সংস্থা। ধীরুভাই আম্বানির ৮৫তম জন্মদিনে চুক্তিতে সম্মত হন দুই ভাই। চুক্তি অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আর কমের কাছ থেকে ওয়্যারলেস স্পেক্ট্রাম, টাওয়ার, ফাইবার ও মিডিয়া কনভারজেন্স নোড কিনবে মুকেশের রিলায়েন্স জিও।

আরও পড়ুন- ভাইকে সাহায্য বড়'দার, মুকেশের জিও কিনছে অনিলের আরকম

দুই ভাইয়ের সংস্থার এই চুক্তির সিদ্ধান্তের কথা সামনে আসতেই, তার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন করে দূরসঞ্চার যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী সংস্থা এরিকসন। আর কমের কাছ থেকে তাদের বকেয়া ১ হাজার ১২ কোটি টাকা উদ্ধারের জন্যই এই আবেদন বলে এরিকসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সেই আবেদনে সম্মতি জানিয়ে গত ৮ মার্চ সংস্থা বিক্রির ওপর স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।

যদিও, আর কমের বিক্রির পক্ষে জোরালো সওয়াল করে স্টেট ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের মত ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক। তারা আর কমকে, অত্যন্ত ভরসাযোগ্য গ্রাহক বলে দাবি করে আদালতে সওয়াল করে ব্যাঙ্কগুলি। প্রসঙ্গত, এই ২৫টি ব্যাঙ্ক থেকেই ঋণ নিয়েছিলেন অনিল আম্বানি।

আরও পড়ুন- আধার মামলায় রাজীব গান্ধীর মন্তব্যকে ঢাল করল কেন্দ্র

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে অনিল ও মুকেশ আম্বানিক ইচ্ছেতেই ভাগ হয়ে যায় আম্বানির শিল্পসাম্রাজ্য। তেল ও গ্যাসের ব্যবসার দায়িত্ব নেন মুকশ আম্বানি। অন্যদিকে টেলিকমের ব্যাটন নিজের হাতে রাখেন ধীরুভাই আম্বানির ছোট ছেলে অনিল। এরপর এক দশকের মাথায় জিও প্রকল্প চালু করে টেলিকম দুনিয়ায় ফিরে আসেন মুকেশ। যার ধাক্কায় কার্যত ধরাশায়ী হয়ে যায় প্রতিযোগী টেলিকম সংস্থাগুলি।

এই জিও ঝড় থেকে রেহাই পায়নি অনিল আম্বানির আর কমও। অবশেষে দাদা মুকেশ আম্বানির হাত ধরেই ধাক্কা সামলাতে তৎপর হয়ে ওঠেন ভাই অনিল। দেশে বিদেশে বর্তমানে অনিলের সংস্থার প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ। আর সে কারণেই রিলায়েন্স জিও ইনফোকমের কাছেই নিজের সংস্থা বিক্রি করতে চায় আর কম।

এদিকে, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, বিনা অনুমতিতে এভাবে সংস্থা হস্তান্তর করা যায় না। তাই এবার আর কমের কোন সত্ত্ব বিক্রি করার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।

.