কেন বাড়ছে দেশে আত্মহত্যা? রিপোর্ট পেশ করল ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো

কৃষকদের আত্মহত্যার হার গত কয়েক বছরে নাড়িয়ে দিয়েছে ভিত। আধুনিক ভারতের অন্যতম বড় সমস্যা আত্মহত্যা। শুধু কৃষকরা নন, গৃহবধূ, সদ্য বয়ঃসন্ধি পেরনো কিশোর কিশোরী থেকে হাই প্রোফাইল ইঞ্জিনিয়র, ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনালরাও অবলীলায় বেছে নিচ্ছেন আত্মহননের পথ। কেন? তারই কারণ খুঁজলো ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো(NCRB)। এই প্রথম বার।

Updated By: Jul 23, 2015, 09:06 PM IST
কেন বাড়ছে দেশে আত্মহত্যা? রিপোর্ট পেশ করল ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো

ওয়েব ডেস্ক: কৃষকদের আত্মহত্যার হার গত কয়েক বছরে নাড়িয়ে দিয়েছে ভিত। আধুনিক ভারতের অন্যতম বড় সমস্যা আত্মহত্যা। শুধু কৃষকরা নন, গৃহবধূ, সদ্য বয়ঃসন্ধি পেরনো কিশোর কিশোরী থেকে হাই প্রোফাইল ইঞ্জিনিয়র, ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনালরাও অবলীলায় বেছে নিচ্ছেন আত্মহননের পথ। কেন? তারই কারণ খুঁজলো ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো(NCRB)। এই প্রথম বার।

২০১৪ সালে মোট ৫,৬৫০ জন কৃষকের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গিয়েছে। যা গত বছর দেশের মোট আত্মহত্যাকারীর সংখ্যার ৪.৩ শতাংশ। রিপোর্ট বলছে, মূলত ঋণ শোধ করতে না পারা ও পারিবারিক কারণে আত্মহত্যার পথ নিয়েছেন কৃষকরা। এর মধ্যে প্রথম কারণে আত্মহত্যা করেছেন ২০.৬ শতাংশ কৃষক, যেখানে ২০.১ শতাংশ আত্মহত্যা করেছেন দ্বিতীয় কারণে। বাকি রয়েছে ফসল উত্পাদন না হওয়া(১৬.৮%), অসুস্থতা(১৩.২%) ও মাদক সেবনের(৪.৯%) মতো কারণ।

রাজ্যভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে মহারাষ্ট্রে আত্মহত্যা করেছেন ২,৫৮৬ জন কৃষক(যা মোট সংখ্যার ৪৫.৫ শতাংশ), তেলেঙ্গানায় আত্মহত্যা করেছেন ৮৯৮ জন কৃষক(মোট সংখ্যার ১৫.৯ শতাংশ), মধ্য প্রদেশে আত্মহত্যা করেছেন ১৪.৬ জন কৃষক(মোট সংখ্যার ১৪.৬ শতাংশ), ছত্তিসগড়ে ৪৪৩ জন(৭.৮ শতাংশ) ও কর্ণাটকে(৫.৭ শতাংশ)। আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া কৃষকদের মধ্যে ৮৯ শতাংশের বাস এই ৫ রাজ্যেই। ৫,৬৫০ জন কৃষকের মধ্যে আত্মহননের পথ ৫,০৫৬ কৃষকই এই ৫ রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে গত ১ দশকে (২০০৪-২০১৪) দেশে আত্মহত্যার ঘটনা ১৫.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও, ২০১০ সালের পর থেকে কিছুটা কমেছে হার। এই দশকে সবথেকে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্র(১৬,৩০৭), তামিল নাড়ু(১৬,১২২) ও পশ্চিমবঙ্গে(১৪,৩১০)। যেদিক থেকে দেখতে গেলে সবথেকে জনবহুল রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও আত্মহত্যার হার অনেকটাই কম উত্তর প্রদেশে।

মূলত যেই কারণ গুলি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, পারিবারিক সমস্যা(২১.৭ শতাংশ), অসুস্থতা(১৮.০ শতাংশ), বিয়ে সংক্রান্ত সমস্যা(৫.১ শতাংশ), প্রেমের সমস্যা(৩.২ শতাংশ), নেশা(২.৮ শতাংশ), ঋণের বোঝা(১.৮ শতাংশ), পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া(১.৮ শতাংশ), বেকারত্ব(১.৭ শতাংশ), দারিদ্র(১.৩ শতাংশ), সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ(০.৮ শতাংশ), প্রিয়জনের মৃত্যু(০.৭ শতাংশ)। আত্মহননকারীদের পুরুষ:মহিলা অনুপাত ৬৭.৭:৩২.৩।

মূলত অল্পবয়সী(১৮-৩০) ও মাঝবয়সীদের(৩০-৪৫) মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি দেখা গিয়েছে। আত্মহত্যাকারী ৮৯,১২৯ পুরুষের মধ্যে ২২,৯৭৪ জন ছিলেন ব্যবসায়ী, ১৩,৯৪৪ চাকুরিজীবী। অন্যদিকে, আত্মহত্যাকারী ৪২,৫২১ মহিলার মধ্যে ২০,১৪৮ জন ছিলেন গৃহবধূ, ৩,৮০৭ জন ছাত্রী ও ২,৯২৮ জন ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে ৬৫.৯ জন ছিলেন বিবাহিত, ২১.১ জন অবিবাহিত। বিষ খাওয়া, উঁচু জায়গা থেকে ঝাঁপ দেওয়া, কুয়োয় ঝাঁপ দেওয়া, গলায় ফাঁস দেওয়া এমনকী, নিজেকে গুলি করেও আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন মানুষ।

 

 

 

.