আত্মহত্যা না খুন? ঘুড়ি উত্সবের বলি টিয়া
আরও একটা মৃত্যু। নিঃশব্দে। একা একা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: আরও একটা মৃত্যু। নিঃশব্দে। একা একা। ও উড়ছিল। কখনও হারিয়ে যাচ্ছিল দিগন্ত চেরা আকাশে। কখনও সবুজ অরণ্যে যাচ্ছিল মিশে। লাল ঠোঁট, সবজে পশম, চোখগুলো টানা টানা। আহা, কী দারুণ-ই না ছিল। অফুরান জীবনে কতবারই না ও পরিযায়ী হয়েছিল। কে জানত, ওই উড়ানটাই ছিল শেষ উড়ান। টিয়া কী জানত, ওর ক্লান্ত ডানা, ওর একটু জিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছাই অন্ধকার নিয়ে আসবে। ওর জানা ছিল না, সেখানেই পাতা ছিল মৃত্যু ফাঁদ!
আরও পড়ুন- এনআরএস-এ নৃশংসতা! উদ্ধার হল প্যাকেটবন্দি ১৬টি কুকুরছানার দেহ
ঘুড়ির সুতোয় আটকে মৃত্যু হয়েছে টিয়া পাখির। যে গাছের ডাল ছিল ওর নীড়, সেখানেই ঝুলতে হল ওকে। চোখ বুজে, জিভ বার করে শরীর ছেড়ে দিয়ে ছটফট করতে করতে প্রাণটা বেরিয়ে গেল। মুক্তির আবহেই মুক্ত হল সে। ‘ছুটি’ হল তার। এভাবেই কত টিয়ার যে মৃত্যু হচ্ছে, তার ইয়ত্তা নেই। সম্প্রতি এমনই একটি ছবি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার ভাভিক ঠাকরে। প্রতিবাদ জানিয়েছেন নিজের মতো করে।
কয়েকদিন আগই গোটা ভারতে ঘুড়ি উত্সব পালিত হয়েছে। সেই উত্সবে কতশত ঘুড়িই না ঠিকানা হারিয়েছে। মালিক বদলেছে হাজারো পেটকাটি, চাঁদিয়াল, মুখপোড়া, ময়ূরপঙ্খীর। কেউ কেটেছে আর কেউ লুটেছে। আনন্দ আর আনন্দ। অগচোরেই থেকে গিয়েছে বন্যপ্রাণের কথাগুলো। মাঞ্জায় মাঞ্জায় কাটাকুটি, আর ঘুড়ির সঙ্গেই ভোকাট্টা হয়ে যাচ্ছে কত বন্যপ্রাণের জীবন। ‘মানব দয়ার’ এটাও বোধহয় আরও এক অনন্য নজির।
এভাবে বন্যপ্রাণের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাঙালি অভিনেত্রী বিদিতা বাগ। টুইটে ভাবিক ঠাকরের ছবিটি পোস্ট করে বলি অভিনেত্রী লিখেছেন, “লজ্জায় মাথা নত হয়ে যাচ্ছে। এই ছবিটি পোস্ট করেছেন ভাবিক ঠাকরে। যার শিরোনাম ‘কাইপো চে?’ যথাযোগ্যভাবে এই বন্যপ্রাণের সঙ্কটাপন্ন দশাকে শোকেজ করার জন্য ধন্যবাদ। ঘুড়ি উত্সবের জন্য দুর্ভাগ্যবশত এভাবেই শতশত পাখি প্রাণ হারাচ্ছে। অবিলম্বে চাইনিজ সুতো বা মাঞ্জা ব্যবহার বন্ধ করুন।”
We hang our head in shame. This hard hitting image has been shared by Bhavik Thaker, titled "kaypo che?". Thanks for aptly showcasing the plight of these beautiful creatures. Unfortunately, hundreds of birds loose their life during kite festival. stop using chinese/manja threads. pic.twitter.com/TcJlTVJXAw
— Bidita Bag (@biditabag) 15 January 2019
টুইট, রিটুইট, লাইক, শেয়ারে এই ছবি দেওয়াল থেকে দেওয়ালে পৌঁছে যাচ্ছে। একই সঙ্গে পৌঁছে যাচ্ছে ম্যানকাইন্ড-এর বার্তাও। তবে আসল ছবিটা কি বদলাচ্ছে? প্রশ্নটা মানব সভ্যতার প্রথম দিনেও ছিল, রয়েছে আজও।