ইতিবাচক ফল পেতেই ৬ কোটি করোনা প্রতিষেধক তৈরি শুরু করল ভারতের ভ্যাকসিন সংস্থা
নাওয়ালা জানান, সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া একটি প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা। সেখানে কোনও সাধারণ মানুষ বা ব্যাংকার বিনিয়োগ করেননি। তাই তিনি এই বিপুল অঙ্কের ঝুঁকি নিতে পেরেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় ইতিবাচক রেজাল্ট এসেছে। এখনও মানুষের উপর চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়া বাকি। তবে তার আগেই সময় নষ্ট না করে করোনাভাইরাসের টিকার (Vaccine) মাস প্রোডাকশনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। আপাতত তাদের হাতে থাকা ফর্মুলাতেই প্রায় ৬ কোটি ডোজ বানাবে সংস্থা। সেপ্টেম্বর নাগাদ চূড়ান্ত পরীক্ষায় পাশ করলেই প্রতিষেধক বাজারে আনবে সংস্থা।
কিন্তু সবেমাত্র প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষার পরেই এমন পদক্ষেপ কেন? সংস্থার প্রধান আদার পুনাওয়ালা বললেন, "চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হতে এখনো কয়েক মাস লাগবে। কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিজ্ঞানীরা এই প্রকল্পে কাজ করছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে।" সময় বাঁচাতে তাই আগে থেকেই ভ্যাকসিন তৈরিতে নামতে চাইছে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন সংস্থা।
তবে অন্তিম পর্যায়ের পরীক্ষার রেজাস্টে গ্রিন সিগন্যালের আগেই ভ্যাকসিন প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আর্থিক ঝুঁকি থেকে যায় প্রচুর। শেষ পর্যায়ে কোনও কারণে বাতিল হলে চূড়ান্ত আর্থিক ক্ষতি হবে সংস্থার। সে বিষয়ে পুনাওয়ালা জানান, সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া একটি প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা। সেখানে কোনও সাধারণ মানুষ বা ব্যাংকার বিনিয়োগ করেননি। তাই তিনি এই বিপুল অঙ্কের ঝুঁকি নিতে পেরেছেন। সংস্থার অন্যান্য প্রকল্পের বরাদ্দ কাটছাঁট করে এই খাতে খরচ করতে চলেছেন তিনি।
প্রতিমাসে ৩০-৫০ লক্ষ ভ্যাকসিন তৈরি করতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা খরচ করবে সিরাম ইনস্টিটিউট। পুনাওয়ালা জানান, "এই ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে সরকার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছে। তবে এখনও সেই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।"
দেশের অন্যতম ধনী ব্যক্তি পুনাওয়ালা জানান, "পুনের ২ ওষুধ কারখানায় ভ্যাকসিন তৈরি হবে।" পরবর্তী পর্যায়ে কি প্রোডাকশন আরও বৃদ্ধি করা হবে? "সবকিছুই সেপ্টেম্বরে অন্তিম স্তরের পরীক্ষার রেজাল্টের উপর নির্ভর করছে," জানালেন পুনাওয়ালা।
এর আগে প্রতিটি ভ্যাকসিনের দাম হাজার টাকার আশেপাশে হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন পুনাওয়ালা জানান, সরকারি তরফে সবাইকে বিনামূল্যেই প্রতিষেধক দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্তত প্রাথমিক পর্যায়ে ভারতেই বেশি পরিমাণ ভ্যাকসিনের জোগান দেওয়া হবে বলে জানালেন তিনি। পরবর্তী পর্যায়ে প্রয়োজনমাফিক প্রতিটি দেশকে সমানভাবে ভ্যাকসিন সাপ্লাই করা হবে।