মাওবাদীদের 'আসল রূপ' ফাঁস করতে 'বস্তার থা মাতা' অভিযানে নামল বস্তার পুলিস

গত ২ দশক ধরে বস্তারে একের পর এক অভিযান চালিয়ে সিপিআই মাওবাদীদের শক্ত মাটি ধসিয়ে দিয়েছে সিআরপিএফ, বিএসএফ, আইটিবিপি ও এসএসবি-র মতো বাহিনী

Edited By: সিকান্দর আবু জ়াফর | Updated By: Sep 15, 2020, 07:06 PM IST
মাওবাদীদের 'আসল রূপ' ফাঁস করতে 'বস্তার থা মাতা' অভিযানে নামল বস্তার পুলিস
ছবি-নিজস্ব

মৌপিয়া নন্দী

ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে মাওবাদীদের জনবিরোধী কার্যকলাপ মানুষের সামনে তুলে ধরতে প্রচার অভিযানে নেমে পড়ল বস্তার পুলিস। একেবারে এলাকার মানুষের ভাষায়।

স্থানীয় গোন্ডি, হালবি-সহ অন্যান্য ভাষায় পুস্তিকা ছাপিয়ে, অডিও ক্লিপের মাধ্যমে প্রচার অভিযানে নামল প্রশাসন। গোন্ডি ভাষায় এই প্রচার অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে 'বস্তার থা মাতা' ও হালবিতে 'বস্তার চো আওয়াজ'।

আরও পড়ুন-কোভিড হাসপাতালের মেনুতে বদল, বাড়ল রোগীর মাথাপিছু খাবারের বরাদ্দ

বাস্তবিকই, বস্তারের প্রত্যন্ত এলাকায় প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগসূত্র তৈরির আগে পরিচয় হয়েছিল মাওবাদীদের সঙ্গে। কয়েক দশক ধরে এলাকায় চলে আসছে মাওবাদীদের রমরমা। সেই প্রভাব থেকে সাধারণ মানুষকে বের করতে পুলিসি অভিযানের পাশাপাশি একেবারে সাধারণ মানুষের ভাষাতেই তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা শুরু করল প্রশাসন।

কীভাবে করা হচ্ছে ওই মাও বিরোধী প্রচার অভিযান!

বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ছাপিয়ে বিলি করা হচ্ছে আদিবাসীদের মধ্যে। সেখানে তুলে ধরা হচ্ছে মাওবাদীদের অত্যাচারের কাহিনী। এছাড়াও বিভিন্ন শর্ট ফিল্ম, অডিয়ো ক্লিপসের মাধ্যমে বলার চেষ্টা হচ্ছে, আদিবাসীদের কল্যাণের নামে তাদেরকে সরকারের থেকে বিচ্ছিন্ন করছে মাওবাদীরা, এলাকায় উন্নয়ণ রুখে দিচ্ছে। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকেই।

উল্লেখ্য, গত ২ দশক ধরে বস্তারে একের পর এক অভিযান চালিয়ে সিপিআই মাওবাদীদের শক্ত মাটি ধসিয়ে দিয়েছে সিআরপিএফ, বিএসএফ, আইটিবিপি ও এসএসবি-র মতো বাহিনী। শুধু তাই নয়, মাওবাদীদের উপদ্রব রুখতে নামানো হয়েছে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত DRG, STF ও CoBRA বাহিনীকে। তাতে সুফল মিলেছে অনেকটাই। 

আরও পড়ুন-অরুণাচল সীমান্তেও এবার জড়ো হচ্ছে লাল ফৌজ! সতর্ক করা হল ভারতীয় সেনাকে 

এনিয়ে কী বললেন বস্তার রেঞ্জের আইজি পি সুন্দররাজ

বস্তারে মাওবাদীর এখন এক লুঠেরা গ্যাং হিসেবে কাজ করছে। এদের কোনও নেতৃত্ব নেই, কোনও দিশাও নেই। এদের অধিকাংশ নেতা বাইরের রাজ্যের। স্থানীয় মাওবাদী নেতাদের এরা ভুল বুঝিয়ে এলাকার বহু নিরপরাধ মানুষের ওপরে হামলা করছে, তাদের মেরে ফেলছে। এলাকার মানুষের সুবিধের জন্য তৈরি রাস্তা, সেতুর ক্ষতি করা, আদিবাসী শিশুদের জন্য তৈরি স্কুলে ভাঙচুর করাই এখন এদের কাজ। 

সুন্দররাজ আরও বলেন, বস্তার এলাকাকে আতঙ্ক মুক্ত করতে প্রশাসন চালু করেছে 'বিশ্বাস-বিকাশ-সুরক্ষা' যোজনা। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল মানুষকে সাহস দেওয়া, তাদের বিশ্বাস অর্জন করা ও সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়া। আমজনতা এর সুফল বুঝতে পেরেছে। মানুষ এই প্রকল্পকে সমর্থনও করছে। মাওবাদী সংগঠন এখন ভাঙতে বসেছে। তাই এই হিংসার পথ তারা বেছে নিয়েছে।  আমাদের আশা এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মাওবাদীদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ মানুষের কাছে ফাঁস করতে পারব। 

.