কংগ্রেসের জমানায় রাম রহিমের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করার চাপ সিবিআইকে?
ওয়েব ডেস্ক: পঞ্জাব, হরিয়ানার রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ওঠবসা ছিল রাম রহিমের। কোটি কোটি ভক্ত। জোড়া ধর্ষণ মামলায় এমন প্রভাবশালী ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো ছিল অত্যন্ত কঠিন। সেই কাজটিই করে দেখিয়েছেন মুলিঞ্জা নারায়ণন। তাঁর জন্যই বিচার পেলেন নির্যাতিতারা।
২০০৭ সালে ধর্ষণ মামলার তদন্তভার হাতে পায় সিবিআই। তদন্তের দায়িত্ব নেন ডিআইজি মুলিঞ্জা নারায়ণন। রাম রহিমের অনুগামীদের হুমকি তো ছিলই, রাম রহিমকে বাঁচাতে চাপ দিচ্ছিলেন রাজনৈতিক নেতারাও। সেই পরিস্থিতিতেও দায়িত্ব এড়িয়ে যাননি নারায়ণন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রকে তিনি জানান, "নির্যাতিতারা বিচার পাওয়ায় আমি খুশি।" অনেকেই চেয়েছিলেন, তদন্ত না করে ফাইল বন্ধ করে দিতে। সেই অভিজ্ঞতার কথা মনে করে নারায়ণন বলেন,"একদিন আমার সিনিয়র ঘরে এলেন। বললেন,”মামলা বন্ধ করে দিতেই তদন্তভার আমার হাতে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ শুনতে পারব না বলে আমি জানিয়ে দিয়েছিলাম।” চাপের মুখে মাথানত করেননি তিনি।
২০০২ সালে এফআইআর দায়ের হয়েছিল রাম রহিমের বিরুদ্ধে। কিন্তু পাঁচ বছরেও তদন্ত এগোয়নি। এরপর মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেয় হাইকোর্ট। নারায়ণনের কথায়,"শুধু রাম রহিমের অনুগামীরা নয়, রাজনীতিবিদরাও ফোন করেছেন। তার মধ্যে ছিলেন হরিয়ানার সাংসদরাও।" হুমকিফোন ছাড়াও তদন্তে এসেছিল একাধিক বাধা। প্রসঙ্গত ২০০৭ সালে হরিয়ানায় ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ইউপিএ সরকার কেন্দ্রের ক্ষমতায়।
রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন নির্যাতিতা। সেই চিঠিতে কারও নাম ছিল না। ফলে অভিযোগকারিণীকে খুঁজে পেতে কালঘাম ছুটে গিয়েছিল তদন্তকারীদের। নির্যাতিতার কাছে পৌঁছনো গেলেও তিনি ভয়ে মুখ খুলতে চাইছিলেন না। নারায়ণন বলেন,"ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বয়ান দেওয়ার জন্য নির্যাতিতাকে অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছিলাম। ডেরায় গিয়ে রাম রহিমকে জেরা করাও বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। তিনি আধ ঘণ্টার সময় দিয়েছিলেন। আমরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা জেরা করেছিলাম। কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেননি।"
২০০৯ সালে অবসর নেন এই অফিসার। তাঁর আশা, রাম রহিমের বিরুদ্ধে জোড়া খুনের মামলার বিচারও শীঘ্রই হবে।
আরও পড়ুন, নিজের মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল রাম রহিমের, দাবি জামাইয়ের