কালো টাকা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ অর্থমন্ত্রীর
গত ১৪ ডিসেম্বর সংসদে লালকৃষ্ণ আডবাণীর আনা কালো টাকা সংক্রান্ত মুলতুবি প্রস্তাব নিয়ে জবাবী ভাষণের সময় তিনি বলেছিলেন, কালো টাকা উদ্ধারে সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, সবিস্তার বিবরণ দিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। সোমবার সেই প্রতিশ্রুতি মেনেই সংসদে কালো টাকা নিয়ে শ্বেতপত্র পেশ করতে করলেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।
গত ১৪ ডিসেম্বর সংসদে লালকৃষ্ণ আডবাণীর আনা কালো টাকা সংক্রান্ত মুলতুবি প্রস্তাব নিয়ে জবাবী ভাষণের সময় তিনি বলেছিলেন, কালো টাকা উদ্ধারে সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, সবিস্তার বিবরণ দিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। সোমবার সেই প্রতিশ্রুতি মেনেই সংসদে কালো টাকা নিয়ে শ্বেতপত্র পেশ করতে করলেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।
ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে কালো টাকা উদ্ধারে 'ব্যর্থতা' কে তুলে ধরে মূলত তিনটি দাবি জানান হয়েছিল বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলির তরফে-১) বিদেশের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকার পরিমাণ জানাক সরকার। ২) বিদেশি ব্যাঙ্কে কালো টাকা যাঁরা রেখেছেন, অবিলম্বে তাঁদের নাম প্রকাশ্যে এনে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ করা হোক। ৩) শ্বেতপত্র প্রকাশ করে সরকার জানাক, এ যাবৎ কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। এদিনের শ্বেতপত্রে সবগুলি দাবির সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ার অসন্তুষ্ট বিজেপি শিবির একে 'হতাশাজনক' বলে বর্ণনা করেছেন। সংসদের বাইরে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে বিজেপি সাংসদ যশোবন্ত সিনহা, অর্থমন্ত্রীর শ্বেতপত্রকে তুলনা করেছেন লজ্জা ঢাকার বিকিনি'র সঙ্গে।
সোমবার সংসদে অর্থমন্ত্রীর পেশ করা ৯৭ পাতার 'কালো টাকার সাদা চিঠি' জানাচ্ছে, ২০০৬ সালে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত কর ফাঁকি দেওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ২৩,৩৭৩ কোটি টাকা। কিন্তু কড়া সরকারি নজরদারির কারণে ২০১০ সালে তা নেমে আসে ৯,২৯৫ কোটিতে। এ ক্ষেত্রে কর ফাঁকির মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া পাঁচ দফা পদক্ষেপ যথেষ্ট ফলপ্রসূ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে শ্বেতপত্রে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শ্বেতপত্রে কালো টাকার প্রধান উত্স হিসেবে জমি ও রিয়েল এস্টেটের কারবার, রত্ন ও অলঙ্কার ব্যবসা এবং তাত্পর্যপূর্ণভাবে এনজিও ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক ভোডাফোন কর ফাঁকি বিতর্কের প্রসঙ্গ তুলে প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলি যাতে ব্যবসায়ীক অংশিদারিদারিত্ব হাতবদলের সময় কর এড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করবে সরকার।
প্রণববাবু বলেছেন, দেশের বাইরে সঞ্চিত কালো টাকার পরিমাণ নির্দিষ্টভাবে জানতে তিনটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিগুলি তাদের রিপোর্ট পেশ করবে আগামী জুলাই-অগাস্ট মাসে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি রিপোর্ট পেশ করলে তাও সংসদে পেশ করা হবে। কালো টাকা সংক্রান্ত আর্থিক অপরাধগুলির মোকাবিলায় কড়া লোকপাল ও লোকায়ুক্ত বিল প্রণয়নেরও সুপারিশ করা হয়েছে এই শ্বেতপত্রে। রয়েছে, কালো টাকার উত্স আটকাতে সম্পত্তি কেনাবেচার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি ও আয়কর দফতরের এনওসি ছাড়াও ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব। সেই সঙ্গে, কালো টাকা সঞ্চয়কারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ করার সময়ই সংসদকে সে ব্যাপারে অবহিত করা হবে বলেও প্রকাশিত শ্বেতপত্রে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।