আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে পিএমও
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার-সহ কয়েকটি রাজ্যকে উন্নয়ন খাতে আর্থিক সাহায্য দিতে পারে কেন্দ্র। সে জন্য বুধবার ওই রাজ্যের মুখ্য সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর(পিএমও)। তবে তালিকায় নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার-সহ কয়েকটি রাজ্যকে উন্নয়ন খাতে আর্থিক সাহায্য দিতে পারে কেন্দ্র। সে জন্য বুধবার ওই রাজ্যের মুখ্য সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর(পিএমও)। তবে তালিকায় নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের। অর্থমন্ত্রকের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সুদ মকুব সংক্রান্ত দাবি সংবিধান সম্মত নয়। তাই আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ব্যাপারে সমস্যা রয়েছে।
ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যগুলির আর্থিক সাহায্যের দাবি নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু কেন্দ্রের জোট রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলগুলির গুরুত্ব বাড়ার পর থেকে কেন্দ্র-রাজ্য আর্থিক সম্পর্ক এক নতুন মাত্রা নিয়েছে। তবে গত এক বছরে কেন্দ্রের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি করে সব থেকে বেশি সরব হয়েছে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের অন্যতম শরিক তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের দাবি, ৩ বছরের জন্য সুদ মুকুব করুক কেন্দ্র। যার পরিমাণ বাত্সরিক প্রায় ২৩,০০০ কোটি টাকা।
পশ্চিমবঙ্গ এই দাবি তোলার পর থেকেই আর্থিক সাহায্যের দাবি নিয়ে সরব হতে থাকে বিহার, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশের মত একাধিক রাজ্য। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগেই উত্তরপ্রদেশ ও বিহার-সহ বেশকয়েকটি রাজ্যকে উন্নয়ন খাতে আর্থিক সাহায্য দিতে পারে দিল্লি। সেই লক্ষ্যে বুধবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব সহ কয়েকটি রাজ্যের সচিবদের নিয়ে বৈঠকে বসছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। কিন্তু তাত্পর্যপূর্ণভাবে কেন্দ্রের এই তালিকায় নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের।
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের ঋণ মকুবের দাবি সংবিধান সম্মত নয়। সেক্ষেত্রে রাজ্যের দাবি মেনে নিলে, একই সুবিধা দিতে হবে কেরালা, পঞ্জাবের মত ঋণগ্রস্ত রাজ্যগুলিকেও। অর্থমন্ত্রকের বক্তব্য, একাধিক প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গকে যে অর্থ দিয়েছে কেন্দ্র, তা এখনও খরচ করতে পারেনি রাজ্য। কয়েকটি ক্ষেত্রে খরচের হিসেবও দিতে পারেনি রাজ্য। তাই নতুন করে পশ্চিমবঙ্গকে অর্থ দিতে নারাজ দিল্লি।
অন্যদিকে বিহারের দাবি, তাদের বিশেষ রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কেন্দ্র এই স্বীকৃতি দিলে বিশেষ কিছু আর্থিক সুবিধা পাবে বিহার। বিশেষ রাজ্যের তকমা পাওয়ায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাজ্য এই সুবিধা পাচ্ছে, যা সম্পুর্ণ সংবিধান সম্মত। এছাড়াও যোজনা কমিশনের কাছে পাঁচ বছরের জন্য পরিকাঠামো উন্নয়নে ২০,০০০ কোটি টাকা চেয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের দাবি হল, রাজ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের বকেয়া টাকা। এছাড়া জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মত একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্যেকে যে অর্থ দেয়, সেই টাকা। যার পরিমাণ আনুমানিক ৯০,০০০ কোটি টাকা।
প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং সমাজবাদী পার্টি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করার জন্যই কী তারা এখন কেন্দ্রের সুনজরে ? যদিও অর্থমন্ত্রকের বক্তব্য, শেষপর্যন্ত আর্থিক সাহায্য দেওয়া হলেও, তার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সংবিধান মেনেই তা করা হবে। এবং পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সেই সংবিধানই।