কৈলাসে কেলেঙ্কারি? রাহুলের তীর্থযাত্রা নিয়ে সরগরম টুইটার!
অনেকেরই সন্দেহ, রাহুলের ছবিগুলি গুগল থেকে নেওয়া এবং নকল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাহুল গান্ধি কি সত্যিই কৈলাস মানস সরোবর গিয়েছেন? কংগ্রেস সভাপতির 'তীর্য যাত্রা' প্রসঙ্গে এমনই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন একাধিক নেটিজেন। তাঁদের প্রশ্ন, রাহুল যদি সত্যিই সেখানে গিয়ে থাকেন, তাহলে তার ছবি (পড়ুন, প্রমাণ) কোথায়? আর যেসব ছবিগুলি দেখা যাচ্ছে, সেখানে কেন রাহুল নেই? এই বিতর্ক যখন মধ্য গগণে, ঠিক তখনই টুইটারে ছবি আপলোড করেছেন রাগা। তবে সেই ছবি দেখেও সন্তুষ্ট হননি 'টুইটার জনতা'। তারা এইসব ছবিগুলি আসল কি না তা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছেন।
#WATCH:Congress President Rahul Gandhi during #KailashMansarovarYatra with other pilgrims pic.twitter.com/G4XUjss0zu
— ANI (@ANI) September 7, 2018
রাহুল গান্ধীর টুইট করা ছবি এবং ভিডিওতে তাঁকে সহ-তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় দেখা যাচ্ছে। পথ চলতি তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে এক স্থির ছবিতেও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেকেরই সন্দেহ, এই ছবিগুলি গুগল থেকে নেওয়া। এরপরই তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, রাহুল গান্ধী কেন সেলফি তুলছেন না? কারণ, সেলফি তুললেই প্রমাণ হয়ে যাবে তিনি আদৌ সেখানে গিয়েছেন কি না!
Congress President Rahul Gandhi during #KailashMansarovarYatra with other pilgrims pic.twitter.com/hMLqL6KzOw
— ANI (@ANI) September 7, 2018
'তীর্থযাত্রা' নিয়ে টুইটারে যতই প্রশ্ন উঠুক, 'তীর্থযাত্রী রাহুল' কিন্তু 'ভক্তিতে অটল'। কৈলাস মানস সরোবরের একটি ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, "মানস সরোবরের জল স্বচ্ছ, শান্ত ও নির্মল। এই সরোবর শুধু দেয়, এখানে কিছুই হারানোর নেই। এই জল যে কেউ পানও করতে পারেন। এই সরোবরে কোনও ঘৃণা-অশান্তির লেশ মাত্র নেই। আর তাই সকলে একে পূজা করা হয়"। এরপরই রাহুল বলেন, "কৈলাস না ডাকলে সেখানে যাওয়া যায় না। তিনি এই ডাক পেয়েছেন"।
. @RahulGandhi Are you downloading pics from the internet and tweeting? Are you really at Mansarovar or some place else? pic.twitter.com/mkQuCJiXA2
— Priti Gandhi (@MrsGandhi) September 5, 2018
Shiva is the Universe. #KailashYatra pic.twitter.com/1do7SW9eb4
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) September 7, 2018
কংগ্রেস সভাপতির কৈলাস মানোস সরোবর যাত্রা নিয়ে এখানেই বিতর্কের আবসান হয়নি। একদল ব্যক্তি দাবি করেন, যাত্রা শুরুর আগে রাহুল গান্ধী আমিষ খেয়েছেন। স্থানীয় একটি ওয়েবসাইটের দাবি, কৈলাসের যাত্রাপথে এক রেস্তোরাঁয় রাহুল চিকেন কুরকুরে এবং মোমো খেয়েছেন। 'তীর্থযাত্রী'র এহেন আমিষ ভোজন নিয়ে যখন বিতর্ক সপ্তমে চড়েছে, সে সময় সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ অবশ্য ক্রেতার পাশেই দাঁড়িয়েছে। তারা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, রাহুল এসেছিলেন এবং ভোজনও করেছেন। তবে সেখানে তিনি একেবারে 'বিশুদ্ধ নিরামিষ' খাবারই খেয়েছেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩১ অগস্ট রাহুল 'দেশ ও দেশবাসীর শান্তি এবং সমৃদ্ধির উদ্দেশে' কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা শুরু করেন। কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন রাহুলের বিমান বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। সেই সময় বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত, কিন্তু শোষ পর্যন্ত বেঁচে যান সকলেই। এরপরই রাহুল কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা করবেন বলে মনস্থ করেছেন বলে দাবি কংগ্রেস সূত্রে। তবে কংগ্রেস যাই বলুক, রাহুলের এই 'তীর্থযাত্রা'কে আসলে চিনের সঙ্গে গোপন যোগাযোগের উদ্দেশ্য হিসাবেই দেখছে বিজেপি। এ নিয়ে সরাসরি প্রশ্নও তুলেছেন পদ্ম শিবিরের মুখপাত্র।
রাজনৈতিক মহলের মতে, গুজরাট এবং কর্ণাটক নির্বাচনের সময় থেকেই রাহুল গান্ধী নিজের 'হিন্দু ভাবমূর্তি' গড়ে তুলতে মরিয়া। কংগ্রেস মুখপাত্রও বিভিন্ন সময়ে তাঁর দলীয় সভাপতিকে কখনও 'পৈতেধারী ব্রাহ্মণ' অথবা 'শিবের ভক্ত' হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এরপর লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাহুলের এমন মানস সরোবর যাত্রাও নিঃসন্দেহে তাত্পর্যবাহী। রাহুল যে বিজেপির চিরচেনা 'হিন্দুত্বের অস্ত্রে'ই তাদের রোখার চেষ্টা করছেন সে বিষয়ে মোটামুটি একমত বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ।