অস্তিত্ব রক্ষার নির্মম লড়াই, বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলল বাঙালির ফটোগ্রাফি

Updated By: Nov 9, 2017, 12:05 PM IST
অস্তিত্ব রক্ষার নির্মম লড়াই, বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলল বাঙালির ফটোগ্রাফি

নিজস্ব প্রতিবেদন:  রাস্তার উপর দিয়ে ছুটছে মা। পিছনে ভীত সন্ত্রস্ত্র তার শিশু। মাত্র কয়েক মাস বয়স তার। পাশে বিস্ফোরণের পর তাদের গায়ে ছিটকে গিয়ে লাগছে বারুদের ফুলকি। জ্বালা সহ্য করতে না পেরে উন্মত্তের মতো দাপাদাপি করছে দুজনেই। তারস্বরে চেঁচিয়ে বাঁচার আর্তি জানাচ্ছে তারা। সম্প্রতি স্যাঞ্চুয়ারি এশিয়ায় প্রকাশিত এক ছবিতে বিশ্বজুড়ে প্রকৃতিপ্রেমীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বিদেশ বিভুঁই নয়, বন্যপ্রাণ আলোকচিত্রী বিপ্লব হাজরার তোলা ছবিটি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার।

‘নরক এখানেই’, শীর্ষক বিপ্লবের এই ছবিকে এবছরের সেরা ছবির পুরস্কার দিয়েছে স্যাঞ্চুয়ারি এশিয়া। ছবিতে ফুটে উঠেছে রাঢ়বঙ্গের বণ্যপ্রাণ ও মানুষের এলাকা দখলের লড়াইয়ের নগ্ন ছবিটা। আর তাতেই বাজিমাত করেছেন বিপ্লব।

হস্তিবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচরণক্ষেত্রে খাবারের অভাব হলে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতির দল। তখন অনেক সময়েই তাদের তাড়াতে মশাল জ্বালিয়ে তাড়া করেন গ্রামবাসীরা। ফাটাতে থাকেন পটকা। ছোড়েন বোমা। স্থানীয় ভাষায় হাতি তাড়ানোর এই দলকে বলে হুলা পার্টি। বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হাতি ও মানুষের মুখোমুখি হওয়া প্রায় নৈমিত্তিক ঘটনা। বিশেষ করে ধান পাকার মরসুমে কচি ধানের লোভে ছোটনাগপুরের মালভূমি থেকে চাষের জমিতে ঢুকে পড়ে দলমার হাতির পাল। সঙ্গে থাকে শাবকরাও। আর চাষের জমিতে ঢুকতেই তাদের তাড়া করেন স্থানীয়রা। শুরু হয় মানুষ ও বন্যপ্রাণের আদিম ও চিরন্তন লড়াই।

এছাড়া বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রয়েছে দলমার হাতির বিচরণক্ষেত্র। ফলে নির্দিষ্ট সময় খাবারের খোঁজে সেখানে এসে পড়ে হাতির দল। জলের খোঁজে পৌঁছে যায় লোকালয়ের কাছে। তখনই শুরু হয় দুপক্ষের সংঘর্ষ।   

বিপ্লবের ছবিটি প্রকাশ করে স্যাঞ্চুয়ারি এশিয়ার বার্তা, ‘’ একটি হাতি ও তার শিশুর গায়ি আগুন ধরিয়ে একদল মানুষ মজা পাচ্ছে। ছবিটি দেখে নিশ্চয়ই কোথাও একটা খোঁচা লাগছে আপনার মনে, প্রাণীপ্রেমীদের চোখের কোণটা ভিজেও আসতে পারে। আপনার হয়তো খুব রাগ হবে, নয়তো দুঃখ, তবে এই ছবি আরও একবার আপনাকে এশিয় হাতি সম্পর্কে বুঝতে শেখাবে। এশিয় হাতিদের অভ্যাস, তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান হতে পারে আপনার।‘’

 

.