মুম্বই পুরসভা ফের সেনা-বিজেপি'র হাতে, অন্যত্র মিশ্র ফল

টানা দু'দশক ধরে বৃহন্মুম্বই পুরসভার (বিএমসি) দখল হাতে রাখার রেকর্ড গড়ল শিবসেনা। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর ২২৭টি আসনের মধ্যে ৭৫টি আসন পেল বালাসাহেব ঠাকরের দল।

Updated By: Feb 16, 2012, 12:50 PM IST

টানা দু'দশক ধরে বৃহন্মুম্বই পুরসভার (বিএমসি) দখল হাতে রাখার রেকর্ড গড়ল শিবসেনা। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর ২২৭টি আসনের মধ্যে ৭৫টি আসন পেল বালাসাহেব ঠাকরের দল। জোট শরিক বিজেপি এবং রামদাস আটওয়ালের নেতৃত্বাধীন আরপিআই পেয়েছে যথাক্রমে ৩২ ও ১টি আসন। অন্য দিকে কংগ্রেস ও এনসিপি ৫০ এবং ১৪টি কেন্দ্রে জিতেছে। রাজ ঠাকরের এমএনএস পেয়েছে ২৮টি। সমাজবাদী পার্টির দখলে ৭ এবং নির্দল ও অন্যান্য দলের প্রার্থীদের দখলে ২১টি ওয়ার্ড গেছে। ম্যাজিক ফিগার ১১৪-তে পৌঁছতে না পারলেও নির্দলদের সমর্থন নিয়ে টানা চতুর্থবারের জন্য গেরুয়া শিবিরের মুম্বই-দখল নিশ্চিত।
অর্থিক ভাবে দেশের বৃহত্তম পুরসভা হল বিএমসি। বিগত দেড় দশক ধরে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর দখল ছিল শিবসেনা-বিজেপি জোটের দখলে। ২০০৭ সালে আসন রফা করে লড়ে মুম্বই পুরসভার ২২৭টি আসনের মধ্যে শিবসেনা ৭৮ ও বিজেপি ২৬টি আসনে জিতেছিল। আলাদা ভাবে লড়ে কংগ্রেস এবং এনসিপি পেয়েছিল ৬৫ ও ১৪টি আসন। রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-এর প্রার্থীরা জিতেছিলেন ৭টি ওয়ার্ডে। এবার কেন্দ্র ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন দুই ইউপিএ শরিক আসন সমঝোতা করায় যথেষ্ট চাপে ছিল বালাসাহেব ঠাকরের দল। রফাসূত্র অনুযায়ী কংগ্রেস ১৬৯ এবং এনসিপি ৫৮টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছিল।
এই পরিস্থিতিতে বিএমসি দখলে রাখতে মরিয়া শিবাসেনা নেতৃত্ব বিজেপি`র পাশাপাশি জোটে টানে দলিত নেতা রামদাস আঠওয়ালের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়া (আরপিআই)-কে। আরপিআই প্রার্থীদের ২৯টি ওয়ার্ড ছেড়ে দিয়ে শিবসেনা ১৩৫ এবং বিজেপি ৬৩ ওয়ার্ডে লড়ে। ভোটের ফল বলছে, অশীতিপর বালাসাহেবের এই কৌশল যথেষ্ট কার্যকরী হয়েছে। সেই সঙ্গে ভোট-পণ্ডিতদের যাবতীয় ধারণা ভুল প্রমাণিত করে, কংগ্রেসের মারাঠি ভোটব্যাংক কার্যত তছনছ করে দিয়েছেন রাজ ঠাকরে। অন্যদিকে নিজেদের মারাঠি ভোটব্যাংক ধরে রেখে সাফল্য পেয়েছে শিবসেনা।
আসন কমলেও মুম্বইয়ের উপকণ্ঠের থানে পুরসভারও দখল হাতে রেখেছে শিবসেনা-বিজেপি জোট। ১৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে শিবসেনা ৫৩, বিজেপি ৮, এনসিপি ৩৪, কংগ্রেস ১৮, এমএনএস ৭, নির্দল ও অন্যান্যরা ১০টি আসনে জিতেছে।
তবে সেনা-বিজেপি জোটের হাতে থাকা নাসিক পুরসভায় এবার ১২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪০টি'তে জিতে একক বৃহত্তম দল হয়েছে এমএনএস। শিবসেনা ১৯, বিজেপি ১৪, এনসিপি ২০, কংগ্রেস ১৫, সিপিআইএম ৩ এবং নির্দল ও অন্যান্যরা ১১টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে।
পুনে পুরসভার ১৫২টি আসনের মধ্যে এনসিপি ৫১, কংগ্রেস ২৮, শিবসেনা ১৫ বিজেপি ২৬, এমএনএস ২৯, আরপিআই ২ এবং নির্দল ১ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
নাগপুর পুরসভার দখল এবারও হাতে রেখেছে গৈরিক শিবির। বিদর্ভের 'রাজধানী' শহরের ১৪৫টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৬২ ও শিবসেনা ৬টি'তে জিতেছে। কংগ্রেস ৪১, এনসিপি ৬, এমএনএস ২, বহুজন সমাজ পার্টি ১২ এবং নির্দল ও অন্যান্য দলের প্রার্থীদের ঝুলিতে গিয়েছে ১৬টি ওয়ার্ড।
জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে নিয়ে এবারও পিম্পরি-চিঞ্চিওয়াদ পুরসভার দখল বজায় রেখেছে এনসিপি। ১২৭টি টি আসনের মধ্যে শরদ পাওয়ারের দল পেয়েছে ৮৪টি। কংগ্রেস ১৫, শিবসেনা ১৩, বিজেপি ৩, এমএনএস ৪ এবং নির্দল ও অন্যান্যরা ৯টি কেন্দ্রে জিতেছে।

শোলাপুর পুরসভার ১০২টি আসনের মধ্যে ৪৫টি'তে জিতে একক বৃহত্তম দল হয়েছে কংগ্রেস। জোটশরিক এনসিপি পেয়েছে ১৬টি। অন্যদিকে শিবসেনা ৮, বিজেপি ২৫, সিপিআইএম ৩, বিএসপি ৩ এবং নির্দল ও অন্যান্যরা ২টি ওয়ার্ড পেয়েছে।
৮৭টি ওয়ার্ডবিশিষ্ট অমরাবতী পুরসভাতেও ২৫টি'তে জিতে প্রথম স্থানে রয়েছে কংগ্রেস। এনসিপি ১৭, শিবসেনা ১০, বিজেপি ৭, প্রাক্তন কংগ্রেসি মন্ত্রী সুনীল দেশমুখের তৈরি  জনবিকাশ জনকল্যান ৭, বিএসপি ৬, মুসলিম লিগ ২ এবং নির্দল ও অন্যান্য দলগুলি ১৩টি তে জিতেছে।
উল্লাসনগর পুরসভার ৭৮টি আসনের মধ্যে শিবসেনা ১৯, বিজেপি ১১, এনসিপি ২০, কংগ্রেস ৮, এমএনএস ১, আরপিআই ২ এবং নির্দল ও অন্যান্যরা ১৭টি'তে জয়ের মুখ দেখেছে।
আকোলা পুরসভার ৭৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপি দু'দলই পেয়েছে ১৮টি করে। শিবসেনা ৮, এনসিপি ৫, এমএনএস ১ এবং নির্দল ও অন্যান্যরা ২১টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে।

.