One Nation One Election :'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর লক্ষ্যে কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি, বিশেষ অধিবেশনেই কি বিল পাস?
১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ৫ দিনের বিশেষ অধিবেশন। মনে করা হচ্ছে, এই বিশেষ অধিবেশনে 'এক দেশ, এক ভোট'-এর লক্ষ্যে বিলও আনতে পারে কেন্দ্র।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন। এক দেশ, এক নির্বাচন। এই লক্ষ্যে প্যানেল গঠন করল কেন্দ্র। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ থাকছেন সেই কমিটির মাথায়। তাঁর নেতৃত্বেই কমিটি পর্যালোচনা করে দেখবে যে, ভারতে 'এক দেশ, এক নির্বাচন' ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব কি না।
এই বিষয়ে আলোচনার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশনও ডাকা হয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ৫ দিনের বিশেষ অধিবেশন। প্রসঙ্গত, গতকালই সেপ্টেম্বর মাসে সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা টুইট করে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। কিন্তু তখন এটা স্পষ্ট করে বলা হয়নি যে, কী বিষয়ে অধিবেশন ডাকা হচ্ছে। অধিবেশনের অ্যাজেন্ডা স্পষ্ট করেনি তখন। এদিন 'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর লক্ষ্যে কেন্দ্র কমিটি গঠন করতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়। মনে করা হচ্ছে, এই বিশেষ অধিবেশনে 'এক দেশ, এক ভোট'-এর লক্ষ্যে বিলও আনতে পারে কেন্দ্র। যদিও সরকারের তরফে এখনও কেউ এই বিষয়ে কিছু চূডান্ত করে কিছু জানায়নি।
উল্লেখ্য, 'এক দেশ, এক নির্বাচন' বলতে বোঝায় সারা দেশে লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনগুলি একযোগে অনুষ্ঠিত হওয়া। যেমনটি ভারতে প্রথম কয়েক দফা নির্বাচনের সময় হয়েছিল। ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ভারতে একযোগে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনার নিয়ম ছিল। আর সেইভাবে চারটি নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৬৮-৬৯ সালে কিছু রাজ্যের বিধানসভা অকালে ভেঙে যাওয়ার পর এই একযোগে ভোট ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এখন বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। পাশাপাশি এটি ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে দলের ইশতেহারেও ছিল।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনী ইশতেহারে, বিজেপি বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচন একসঙ্গে করার জন্য একটি পদ্ধতি তৈরি করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ইশতেহারের ১৪ নম্বর পাতায় বলা হয়েছিল, "বিজেপি অপরাধীদের নির্মূল করতে নির্বাচনী সংস্কার শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিজেপি অন্যান্য দলগুলির সাথে পরামর্শের মাধ্যমে, বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচন একইসঙ্গে করার পদ্ধতি তৈরি করতে চাইবে। নির্বাচনী খরচ কমানোর পাশাপাশি রাজনৈতিক দল এবং সরকার উভয়ের জন্যই ভালো। এটি রাজ্য সরকারের জন্য নির্দিষ্ট স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। আমরা বাস্তবসম্মতভাবে ব্যয়ের সীমা সংশোধনের দিকেও নজর দেব।"
এখন কেন্দ্র 'ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন' বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করতেই সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার মন্তব্য, 'বিজেপি এক দেশ, এক দলের ভাবনায় আচ্ছন্ন। বিরোধীরা ইন্ডিয়া ব্যানারে একজোট হওয়ার পর থেকেই তা বিচলিত করেছে বিজেপিকে। এক দেশ, এক নির্বাচন কোনও নতুন বিষয় নয়। এটি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচনা চলছে। বিজেপি যখন থেকে ক্ষমতায় এসেছে, তখন থেকেই তারা এক দেশ, এক সংস্কৃতি; এক দেশ, এক ধর্ম; এক দেশ, এক ভাষা; এক দেশ, এক কর নিয়ে আচ্ছন্ন। এখন এক দেশ, এক নির্বাচন; তারপর এক দেশ, এক দল; এক দেশ, এক নেতা। বিজেপি এই অবসেশনেই ভুগছে।'
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০ জুলাই থেকে ১১ অগাস্ট চলে সংসদের বর্ষকালীন অধিবেশন। মেয়াদ ছিল ১৭ দিন। মণিপুর ইস্যুতে বর্ষাকালীন অধিবেশনে উত্তাল হয় সংসদের উভয় কক্ষ। শুধু বিক্ষোভ প্রদর্শনই নয়, সংসদের বর্ষকালীন অধিবেশনে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও এনেছিল বিরোধী I.N.D.I.A জোট। তবে লোকসভায় সেই অনাস্থা প্রস্তাব অবশ্য খারিজ হয়ে যায় ধ্বনি ভোটে। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, 'উত্তর-পূর্বের লোক এই সমস্যার জন্য দায়ী নয়। কংগ্রেসের রাজনীতি দায়ী। যেসব জায়গায় কম আসন তা নিয়ে কংগ্রেস কোনওদিন ভাবেনি। নেহেরুর বিরুদ্ধে লোহিয়াজির অভিযোগ ছিল জেনেবুঝে উত্তর-পূর্বের উন্নয়নে অগ্রহ দেখাচ্ছে না সরকার। চিন হামলার সময় নেহেরুর রেডিও বার্তা অসমবাসী আজও মনে রেখেছে। উত্তর-পূর্বের মানুষের বিশ্বাসকে হত্যা করেছে কংগ্রেস। সেই ক্ষোভেরই নানা ভাবে বহিঃপ্রকাশ হয়'।
আরও পড়ুন, I.N.D.I.A Mumbai Meet: পাওয়ারের নৈশভোজে মমতা-লালু-কেজরির ৩ প্রস্তাব, শুরু মুম্বইয়ের বৈঠক