‘সোমনাথ সিপিএম-ই নন’! কমিউনিস্ট নেতার প্রয়াণে আরও প্রকট বাংলা-কেরল দ্বন্দ্ব
দলের সঙ্গে আদর্শগত বিরোধে সৈফুদ্দিন চৌধুরীরও মেম্বারশিপ রিনিউ হয়নি। সফির পর এবার সোমনাথও প্রাক্তন সিপিএম নেতা হয়েই বিদায় নিলেন। তাঁর প্রয়াণে ফের একবার স্পষ্ট হয়ে গেল বাংলা-কেরলে সিপিএমের আড়াআড়ি বিভাজন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শেষযাত্রা আলিমুদ্দিন ছুঁল না। কেউ গায়ে জড়িয়ে দিল না লাল পতাকা। মৃত্যুতেও নিজের পুরন দলের কাছে একরাশ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে গেলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।
‘বিচ্যুত সোমনাথকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত সঠিক’, বলেছিলেন কারাত
আলিমুদ্দিনের বিবৃতি বলল, কমরেড সোমনাথের প্রয়াণে স্থগিত সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক। তবে, কেন্দ্রীয় কমিটির দায়সারা বিবৃতিতে বলাই হল না যে, তিনি সিপিএমেরই প্রাক্তনী। বাংলা-কেরল দ্বন্দ্বকে আরও একবার সামনে এনে দিয়ে বিদায় নিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।
আলিমুদ্দিনের নেতাকে ‘ঘার ধাক্কা’ দিলেন সোমনাথ পুত্র প্রতাপ! বিনয় দেখালেন বিমান
শেষ ইচ্ছেটা আর পূরণ হল না। রোগশয্যায় নৃপেন চক্রবর্তীকে সদস্যপদ ফিরিয়ে দিয়েছিল পার্টি। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় সিপিএমের প্রাক্তনী হয়েই চলে গেলেন। দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ১ দশক পর চলে গেলেন সোমনাথ। স্পিকারের নিরপেক্ষতা ছেড়ে আস্থাভোটে তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন না। দলীয় নির্দেশ অমান্য করেই একথা কারাটদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন সোমনাথ। পার্টি লাইন অমান্য করায় সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করে। দু-হাজার এগারোয় পালাবদলের পর ঘুরে দাঁড়াতে হলে সোমনাথকে চাই বলে সওয়াল করেন আলিমুদ্দিনের একাংশ।
সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেডের নেতারা বরাবরই চেয়েছেন, দলে ফিরে আসুন ‘সোমনাথ দা’।সোমনাথকে দলে ফেরানো নিয়ে গত একদশক ধরে সিপিএমে বেঙ্গল লাইন বনাম কারাট লাইনের দ্বন্দ্ব চলেছে। সীতারাম ইয়েচুরি সিপিএম সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে দলে ফেরানোর চেষ্টা হয়।
‘অন্য দলে গেলে স্ত্রী ডিভোর্স দিত’
তবে, সোমনাথ নিজে জানিয়ে দেন তিনি দলে ফেরার আবেদন করবেন না। পার্টি সংবিধান, কেন্দ্রীয় কমিটিতে কেরল লবির সংখ্যাগরিষ্ঠতা - সব মিলিয়ে সোমনাথের আর দলে ফেরা হয়নি। সোমনাথদার শেষযাত্রায় নার্সিংহোমে, বাড়িতে, বিধানসভায় ব্যক্তিগতভাবে হাজির হন আলিমুদ্দিনের নেতারা। কিন্তু, দল রয়ে গেল অনুপস্থিত। সোমনাথের প্রয়াণে এদিন রাজ্য কমিটির বৈঠক স্থগিত রাখে সিপিএম।
কমরেড সোমনাথ দার প্রয়াণে যখন আলিমুদ্দিনে বৈঠক হল না, তখন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির দায়সারা বিবৃতি সামনে এল। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় যে ১দিন সিপিএমেই ছিলেন তাঁর বিন্দুমাত্র উল্লেখ রইল না।
একদিকে বেঙ্গল বনাম কেরল লবির দ্বন্দ্বে দ্বিধাবিভক্ত সিপিএম। অন্যদিকে, পরিবারের অভিমান। শেষযাত্রা আলিমুদ্দিন ছুঁল না। কেউ সোমনাথের গায়ে জড়িয়েও দিল না রক্ত পতাকা। যা হল তা ভাল হল না। বলছেন, সিপিএমেরই এক বহিষ্কৃত নেতা।
দলের সঙ্গে আদর্শগত বিরোধে সৈফুদ্দিন চৌধুরীরও মেম্বারশিপ রিনিউ হয়নি। সফির পর এবার সোমনাথও প্রাক্তন সিপিএম নেতা হয়েই বিদায় নিলেন। তাঁর প্রয়াণে ফের একবার স্পষ্ট হয়ে গেল বাংলা-কেরলে সিপিএমের আড়াআড়ি বিভাজন।