গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে জেরা নয় মোদীকে, রায় হাইকোর্টের

লোকায়ুক্ত নিয়োগ বিতর্ক এবং সাজানো পুলিসি সংঘর্ষের মামলায় বিচারবিভাগের নির্দেশে জোরদার ধাক্কা খেয়েছিলেন নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদী। এবার গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার তদন্তে নিয়োজিত নানাবতী কমিশন-এ হাজিরার প্রশ্নে গুজরাত হাইকোর্টের রায় কিছুটা স্বস্তি দিল তাঁকে।

Updated By: Feb 1, 2012, 03:25 PM IST

লোকায়ুক্ত নিয়োগ বিতর্ক এবং সাজানো পুলিসি সংঘর্ষের মামলায় বিচারবিভাগের নির্দেশে জোরদার ধাক্কা খেয়েছিলেন নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদী। এবার গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার তদন্তে নিয়োজিত নানাবতী কমিশন-এ হাজিরার প্রশ্নে গুজরাত হাইকোর্টের রায় কিছুটা স্বস্তি দিল তাঁকে। সম্প্রতি জন সংঘর্ষ মঞ্চ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গাপীড়িত কয়েক`টি পরিবার নানাবতী কমিশনের কাছে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তিন আধিকারিককে জেরার আবেদন জানায়। কিন্তু বুধবার বিচারপতি আকিল কুরেশি এবং বিচারপতি সোনিয়া গোকানিকে নিয়ে গঠিত গুজরাত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
দুই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জি টি নানাবতী এবং অক্ষয় মেহতাকে নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিশন মুখ্যমন্ত্রী মোদী-সহ গুজরাত সরকারের ৪ কর্তাকে জেরার জন্য সমন পাঠানোর আর্জি খারিজ করার পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল জন সংঘর্ষ মঞ্চ। মঞ্চের আইনজীবী মুকুল সিনহার যুক্তি , ২০০২ দাঙ্গায় প্রশাসনিক নিশ্চেষ্টতা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মোদীর ভূমিকা নানাবতীকমিশনের খতিয়ে দেখা দরকার। এজন্য কমিশনের উচিত মোদীকে জেরার জন্য তলব করা। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, কমিশন আইন অনুসারে কোনও তৃতীয় পক্ষের কোনও একজন ব্যক্তিকে জেরা করার আর্জি জানানোর সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে কমিশনই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাই পুরো ব্যাপারটি কমিশনের হাতে ছেড়ে দেওয়া প্রয়োজন।

তা ছাড়া, ২০০৫-এ রাজ্য সরকারের তরফে নানাবতী কমিশনকে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা খতিয়ে দেখার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল বলে মঞ্চের তরফে দাবি করা হলেও এদিন দুই বিচারপতির বেঞ্চ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, কমিশনের গঠনতন্ত্র এবং ক্ষমতার পরিধি অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্যদের জেরার জন্য তলব করা সম্ভবপর নয়। প্রসঙ্গত, গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার বিষয়ে তথ্য জানার জন্য ২০১০ সালের মার্চ মাসে দু'দফায় মুখ্যমন্ত্রী মোদীকে জেরা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল।
গত ২৫ জানুয়ারি বিচারপতি আফতাব আলমের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে নরেন্দ্র মোদীর মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময়ের ভুয়ো পুলিসি সংঘর্ষের ২০টি মামলার নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতার এবং সাংবাদিক বি জি ভাগ্যশ্রীর দায়ের করা দু'টি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে  সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমবি শাহ'র নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩ মাসের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। এর আগে লোকায়ুক্ত নিয়ুক্ত প্রশ্নে রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়ালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মোদী সরকারের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দেয় গুজরাত হাইকোর্ট। উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের মুখে গুজরাত হাইকোর্টের এদিনের রায় তাই চাপে থাকা বিজেপি'কে কিছুটা স্বস্তি দেবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

.