দুই সন্তানসহ ট্রাকের নিচে শ্রমিক দম্পতি, মর্মান্তিক পরিণতি
উত্তরপ্রদেশ থেকে ছত্তিশগঢ়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় একটি ট্রাক তাদের পিষে দিয়ে পালিয়ে যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন— লকডাউনে কাজ নেই। হাতে জমানো যেটুকু টাকা ছিল তাও শেষ হয়েছে। দুই সন্তানের মুখে কী করে খাবার তুলে দেবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়েই বাড়ির পথে রওনা দেন শ্রমিক দম্পতি। কিন্তু রাস্তায় তাদের জন্য যে মৃত্যু অপেক্ষা করেছিল, কে জানত! রাতের অন্ধকারে বিশাল ট্রাক পিষে দিল তাঁদের। দুই সন্তানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারা গিয়েছেন শ্রমিক দম্পতি। পুলিস জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ থেকে ছত্তিশগঢ়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় একটি ট্রাক তাদের পিষে দিয়ে পালিয়ে যায়।
ছত্তিশগঢ়ের শ্রমিক দম্পতি কৃষ্ণ ও তার স্ত্রী প্রমিলার মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের তিন বছরের ছেলে নিখিল ও চার বছরের মেয়ে চাঁদনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। লখনউতে দিনমজুরের কাজ করতেন এই দম্পতি। থাকতেন জানকি পুরম এলাকার একটি বস্তিতে। লকডাউনের ফলে কাজ হারান দুজনে। যে কটা টাকা সঞ্চয় করেছিলেন তা দিয়েই কোনওরকমে দিন গুজরান করছিলেন। কিন্তু জমানো টাকা দিয়ে আর কদিন! হাতের টাকা শেষ হওয়ায় গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন বলে ঠিক করেন কৃষ্ণ ও প্রমিলা। এর পর স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সাইকেলে রওনা দেন কৃষ্ণ। কিন্তু রাতের অন্ধকারে একটি ট্রাক তাঁদের চারজনকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান কৃষ্ণ ও তাঁর স্ত্রী।
আরও পড়ুন— একজন পরিযায়ী শ্রমিকও যেন হেঁটে বাড়ি না ফেরেন, প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
ভাই ও তাঁর স্ত্রীর শেষকৃত্যের জন্য লখনউ পৌঁছেছে কৃষ্ণর পরিবার। তাঁর ভাই রাজকুমার জানিয়েছেন, হাতে কোনও টাকা ছিল না তাঁর দাদার। বাড়ি ফেরা ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না। বুধবার রাতে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গিয়েছেন ১৪ জন শ্রমিক। একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে চলেছে শ্রমিকদের সঙ্গে। লকডাউনে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাঁরাই। বাড়ি ফিরতে পারছেন না। পকেটে টাকা নেই। পেটে খাবার নেই। কেউ হেঁটে, কেউ আবার সাইকেল চালিয়ে হাজার হাজার কিমি রাস্তা পেরিয়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। দুর্ভোগের আর শেষ নেই তাঁদের।