ক্ষমা করবেন, সাইকেল চুরি করে চিঠি শ্রমিকের, পুলিসে গেলেন না মালিক
মহম্মদ ইকবাল খান। বাস উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে। কর্মসূত্রে থাকেন রাজস্থানের ভারতপুরে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ''আমি অসহায় শ্রমিক। প্রতিবন্ধী ছেলের বাবা। ও হাঁটতে পারে না। সেজন্য আপনার সাইকেলটি নিয়ে যাচ্ছি। পারলে ক্ষমা করে দেবেন।'' এমন চিঠি পাওয়ার পর কীভাবে পুলিসে যাবেন? কীভাবে লেখাবেন খোয়া গিয়েছে সাইকেল, চোর ধরে দিন। না, পারেননি প্রভু দয়াল। 'সাইকেল চোর' পরিযায়ী শ্রমিক মহম্মদ ইকবালের বিরুদ্ধে পুলিসে যাননি। লকডাউনের সঙ্কটেও মানবিকতায় উজ্জ্বল 'ভারত'। এমন ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানের ভারতপুর গ্রামে।
মহম্মদ ইকবাল খান। বাস উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে। কর্মসূত্রে থাকেন রাজস্থানের ভারতপুরে। লকডাউনে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। চিঠির বয়ান অনুযায়ী, ছেলে প্রতিবন্ধী হাঁটাচলায় সক্ষম নয়। এমন পরিস্থিতিতে আর পাঁচটা বাবার মতোই মরিয়া চেষ্টা করেছেন মহম্মদ ইকবাল খান। সাইকেল চুরি করেই ছেলেকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাইকেলের মালিকের জন্য রেখে গিয়েছেন একখানি চিঠি। চিঠির বয়ান,''আমি এক হতভাগা শ্রমিক। প্রতিবন্ধী ছেলের বাবা। ওর জন্যই আপনার সাইকেলটি নিয়ে যাচ্ছি। ছেলে হাঁটতে পারে না। আর কোনও রাস্তা নেই ফেরার। কিন্তু বরেলিতে ফিরতেই হবে আমাকে। আপনার অসহায় শ্রমিক মহম্মদ ইকবাল খান।''
সকালে উঠে সাইকেলটি দেখতে না পেয়ে পুলিসে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন প্রভু দয়াল। কিন্তু 'অসহায় বাবা'র চিঠি পড়ার পর সিদ্ধান্ত বদল করেন। তাঁর কথায়,''প্রথমে ভেবেছিলেন সাইকেলটি চোর নিয়ে গিয়েছে। চিঠি পড়ার পর থানায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।'' প্রভুর এমন সিদ্ধান্তে গর্বিত এলাকাবাসী।
এর পাশাপাশি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল আরও একটা ছবিও। কোটি কোটি টাকা ঋণ বকেয়া রেখে দেশ ছেড়েছেন তথাকথিত শিক্ষিত, বিত্তবান শিল্পপতিরা। সেই দেশেই রয়েছেন মহম্মদ ইকবাল খানের মতো হতদরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিকূল সময়ে সন্তানের জন্য সাইকেল চুরি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আত্মগ্লানিতেও ভুগছেন। চিঠি লিখে ক্ষমাপ্রার্থনা করে লিখে গিয়েছেন নিজের নাম-ঠিকানা।
আরও পড়ুন- লকডাউনের মাঝেই বিধি মেনে খুলল বদ্রীনাথ, প্রথম পুজো প্রধানমন্ত্রীর