‘সুপ্রিম রায়ে’ বেড়েছে জটিলতা! সবরীমালা মন্দির দর্শনে মহিলাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেবে না কেরল সরকার
অন্য দুই বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় পুরনো রায়কে বলবত্ করার পক্ষে মত দেন। তাঁদের রায়ে বলা হয়, আদালতের কাছে ভারতের সংবিধান পবিত্র ধর্মগ্রন্থ
নিজস্ব প্রতিবেদন: সবরীমালা ইস্যুতে ‘সুপ্রিম রায়’ খতিয়ে দেখতে গতকাল ৭ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে মামলাটি পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে সবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারে চূড়ান্ত রায়ও ঝুলে রইল। এ দিনের রায় প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানান, এই মুহূর্তে সবরীমালা বিষয়টি আরও জটিল হয়ে দাঁড়াল। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সঠিক দিশা পাওয়া গেল না। এর জন্য মহিলা পুণ্যার্থীদের আয়াপ্পা দর্শনে সরকার বাড়তি নিরাপত্তা দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিল কেরলের এলডিএফ সরকার।
সাংবাদিক বৈঠকে পিনারাই বিজয়ন জানান, এ দিনের রায় আরও জটিলতা তৈরি করেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের তাত্পর্য বুঝতে গভীর আলোচনার প্রয়োজন। আইন বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়েই সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করা হবে। তবে, এ দিন আরও এক ধাপ এগিয়ে আইনমন্ত্রী এ কে বালান জানান, এই রায় সরকারকে আরও সমস্যায় ফেলেছে। এই মুহূর্তে সবরীমালায় মহিলা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে অক্ষম সরকার। উল্লেখ্য, মহিলা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে পিনারাই বিজয়নের। তবে, সুপ্রিম কোর্টের রায়কে বাস্তবায়ন করতে কোনও ক্রটি রাখেনি তাঁর সরকার।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ মামলাটিকে ৭ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-সহ ৩ বিচারপতি একটি রায়ে বলেছেন, শুধু সবরীমালা নয়, অন্যান্য ধর্ম এবং সম্প্রদায়ে ধর্মীয় স্থানে মহিলাদের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে সবরীমালার সমস্যার সঙ্গে ভীষণ মিল রয়েছে। ধর্মাচরণের মহিলাদের স্বাধীনতা এবং অধিকারের প্রশ্নেই বৃহত্তর বেঞ্চে মামলাটি খতিয়ে দেখার সম্মতি জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি খানউইলকর এবং বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র। প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বরে সবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারে সুপ্রিম কোর্টের সিলমোহরে ভিন্ন মত পোষণ করেন বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র।
অন্য দুই বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় পুরনো রায়কে বলবত্ করার পক্ষে মত দেন। তাঁদের রায়ে বলা হয়, আদালতের কাছে ভারতের সংবিধান পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। সংবিধানকে মান্যতা দিতে সুপ্রিম কোর্টের রায় পালন করা উচিত। এই রায় লঙ্ঘন করা হলে কড়া হাতে রুখতে হবে। উল্লেখ্য, এ দিন পুরনো রায়ের উপর কোনও স্থাগিতাদেশ জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাত্ সবরীমালা মন্দিরে ঋতুযোগ্য মহিলাদের প্রবেশে এখনও পর্যন্ত বাধা নেই।
আরও পড়ুন- সতীচ্ছদ অক্ষত না থাকলেও প্রথম রাতে রক্তপাত নিশ্চিতের দাওয়াই বিকোচ্ছে আমাজনে
তবে, সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পর বিজয়ন সরকারের উপর চাপ তৈরি করে বিজেপি এবং কংগ্রেস। প্রথম থেকেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা জানিয়ে এসেছিল তারা। কংগ্রেস এ দিন জানায়, ‘নাস্তিক মহিলাদের’ আয়াপ্পা দর্শনে বাধা দেওয়া উচিত সরকারের। বিজেপির হুঁশিয়ারি, মহিলাদের মন্দির প্রবেশাধিকারে সরকার সদর্থক ভূমিকা নিলে ফল ভাল হবে না।