বাদল অধিবেশনেই পেশ হবে জমি অধিগ্রহণ বিল

সংসদের বাদল অধিবেশনেই পেশ হতে চলেছে সংশোধিত জমি অধিগ্রহণ বিল। তার আগে আগামী সপ্তাহে বিলটিকে আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র দেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সংশোধিত বিলে বহুক্ষেত্রে অনেকটাই শিথিল হচ্ছে জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন শর্ত।

Updated By: Aug 10, 2012, 05:19 PM IST

সংসদের বাদল অধিবেশনেই পেশ হতে চলেছে সংশোধিত জমি অধিগ্রহণ বিল। তার আগে আগামী সপ্তাহে বিলটিকে আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র দেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সংশোধিত বিলে বহুক্ষেত্রে অনেকটাই শিথিল হচ্ছে জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন শর্ত। শিল্পায়নের গতি শ্লথ হয়ে পড়ায়, শিল্পমহলের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই সরকার জমি আইনে নমনীয়তা আনতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।  
১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনে পরিবর্তন আনতে সংসদে পেশ হয়েছিল নতুন বিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে এ নিয়ে আলোচনার সুযোগ দিতে সেটিকে পাঠানো হয় স্থায়ী কমিটিতে। তারা  জমি অধিগ্রহণের জন্য আরও কঠিন শর্তের সুপারিশ করে। যদিও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা স্থায়ী কমিটির সেইসব সুপারিশ গ্রহণ না করে জমি অধিগ্রহণ বিলটিকে আরও নমনীয় করার পক্ষপাতী। আগামী সপ্তাহেই সংশোধিত জমি বিলে পড়বে মন্ত্রিসভার আনুষ্ঠানিক শিলমোহর। ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন বিলটির নামেও এসেছে বদল। নতুন নাম দেওয়া হয়েছে রাইট টু ফেয়ার কমপেনসেশন, রিসেটেলমেন্ট, রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সি ইন ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন বিল, ২০১২।
খসড়া বিলে বলা হয়েছিল জনস্বার্থের সঙ্গে জড়িত সরকারি ও সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পে সরকার জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে। স্থায়ী কমিটির সুপারিশে বলা হয়, এই ধরনের প্রকল্পে সরকার জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না। সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, আশি শতাংশ জমি মালিকের সম্মতি পেলেই সরকারি ও সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পে জমি নেওয়া যাবে। খসড়া বিলে বলা হয়, বেসরকারি সংস্থার প্রকল্পের প্রভাব পড়বে এমন সব পরিবারের আশি শতাংশের সম্মতি পেলে জমি নেওয়া যাবে। স্থায়ী কমিটির সুপারিশ ছিল, বেসরকারি সংস্থার জন্য জমি নেওয়াই যাবে না। সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র প্রকল্প এলাকার আশি শতাংশ পরিবারের সম্মতি পেলেই জমি অধিগ্রহণ করা যাবে।
শুরুতে জমি বিলে বলা হয়, শহরাঞ্চলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ জমির বাজার দরের দ্বিগুণের কম হবে না। গ্রামাঞ্চলে তা কমপক্ষে চারগুণ হতে হবে। স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ জমির দামের দ্বিগুণ থেকে চারগুণের মধ্যে রাখতে হবে। খসড়া বিলে বলা হয়েছিল, জমি নিয়ে দশ বছর ফেলে রাখলে তা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জমি ব্যাঙ্কে ফেরত যাবে। স্থায়ী কমিটির বক্তব্য ছিল, জমি পাঁচ বছর ফেলে রাখলেই তা জমি মালিককে ফেরত দিতে হবে। সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, জমি পাঁচ বছর ফেলে রাখলে তা ফেরত দিতে হবে। তবে, অব্যবহৃত জমি কখনই মালিকের কাছে ফেরত যাবে না। শুরুতে বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছাড়া বহু-ফসলি জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। আর, সেক্ষেত্রেও এই ধরনের জমির পরিমাণ পাঁচ শতাংশের বেশি হবে না। বহু ফসলি সেচযোগ্য জমির বদলে অন্য যে কোনও কৃষি জমি অধিগ্রহণের সুপারিশ করে স্থায়ী কমিটি। এ ক্ষেত্রে সংশোধিত বিলে মূল বিলের বক্তব্য অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
খসড়া বিলে বলা হয়েছিল, সেজ, পরমাণু প্রকল্প সহ ষোলোটি ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ আইন প্রযোজ্য হবে না। যদিও, এই ধরনের প্রস্তাব গ্রহণের বিপক্ষে মত দেয় স্থায়ী কমিটি। সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, সেজ সহ তিনটি ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ আইনেই জমি নিতে হবে। বাকি তেরোটি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী জমি নেওয়া যাবে। সরকার জমি অধিগ্রহণের শর্ত শিথিল করতে চাইলেও জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় এই বিলের ভবিষ্যত কী হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে।
 
 

.