শ্মশানে দেহ পোড়ানোর খরচ বেড়ে দ্বিগুণ, রাস্তায় পাশেই পুড়ল গরিব শ্রমিকের দেহ

বেঁচে থাকতে শ্রমিকের দুবেলা পেট ভরে খাবার জোটা না। মৃত্যুর পর দেহ নিয়েও বিপদে পড়েন পরিবারের লোকজন। দেশ গড়ে যারা তাঁদেরই যেন কোনও দাম নেই। 

Updated By: Aug 26, 2020, 06:16 PM IST
শ্মশানে দেহ পোড়ানোর খরচ বেড়ে দ্বিগুণ, রাস্তায় পাশেই পুড়ল গরিব শ্রমিকের দেহ

নিজস্ব প্রতিবেদন- অনেকদিন ধরে ভুগছিলেন ৪৫ বছরের দিনমজুর মোহন রাঠোর। দীর্ঘদিন রোগভোগের পর মারা যান তিনি। খোঁজ নিয়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, দেহ শ্মশানে পোড়ানোর খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সেই টাকা জোগানোর সামর্থ নেই তাঁদের। তা হলে! শ্রমিকের দেহ তো। এদেশে গরিব শ্রমিকের দেহ জ্বলল নাকি ফেলে দেওয়া হল, কে খবর রাখে! বেঁচে থাকতে শ্রমিকের দুবেলা পেট ভরে খাবার জোটা না। মৃত্যুর পর দেহ নিয়েও বিপদে পড়েন পরিবারের লোকজন। দেশ গড়ে যারা তাঁদেরই যেন কোনও দাম নেই। সুরাতের এনআই গ্রামে রাস্তার পাশেই মোহন রাঠোরে চিতা সাজানো হল। পরিবারের লোকেরা শেষমেশ আর তাঁকে শ্মশানে নিয়ে যেতে পারেননি। শ্রমিক পরিবার। এত টাকা তাঁদের কাছে ছিল না।

করোনার প্রকোপ কমাতে দীর্ঘদিন লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। করোনার প্রকোপ সারা দেশে তেমন কমেনি। পাল্লা দিয়ে রোজ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তার উপর দারিদ্রের প্রকোপ বেড়ে চলেছে সারা দেশে। গরিব যেন আরো গরিব হয়েছে। সব থেকে বেশি দুর্দশার শিকার হয়েছেন শ্রমিকরা। ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে কাউকে করোনা পরিস্থিতিতে প্রাণ দিতে হয়েছে। কেউ আবার হাজার কিমি সাইকেল চালিয়ে বা পাঁয়ে হেঁটে অর্ধমৃত অবস্থায় বাড়ি ফিরেছেন। করোনার প্রকোপ কমেনি এখনও। লকডাউন অবশ্য কিছুটা শিথিল হয়েছে। ধীরে ধীরে আনলকের প্রস্তুতি শুরু করেছে সরকার। তবে কোনও পরিস্থিতিতেই দেশের শ্রমিকদের অবস্থায় কোনও পরিবর্তন হয়নি। সুরাতের ঘটনা যেন সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে। 

আরও পড়ুন-  ফর্সা মানেই সুন্দর নয়! আরও এক সংস্থা সব পণ্যের নাম থেকে Fair শব্দ সরাল

সুরাতের ওই গ্রামের পাশে যে শ্মশান ছিল তাতে আগে মরা পোড়ানোর খরচ ছিল ১২০০ টাকা। কিন্তু সেই খরচ এখন বেড়ে হয়েছে ২৫০০ টাকা। মোহনের পরিবারের পক্ষে এই টাকা জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তা ছাড়া লকডাউনের জেরে দুবেলা খাবারই জুটছিল না মোহনের পরিবারের। এমন অবস্থায় তাঁর দেহ রাস্তার ধারে পোড়ানো ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না পরিবারের লোকজনের কাছে। ওই গ্রামে প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন করে বিদেশে থাকেন। তাই গ্রামের নাম এনআরআই হয়েছে। বিদেশে থাকা লোকজন ডোনেশন দিত বলে এতদিন ওই শ্মশানের চার্জ কম ছিল। এমনই জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে এখন আর বিদেশে থাকা লোকজন ডোনেশন দিচ্ছে না। তবে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, কাউকে কিছু না জানিয়ে চার্জ বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

.