ইউপিএর শেষ রেল বাজেটে আর্থিক সংস্কারের সিদ্ধান্ত, ভাড়া ঠিক করতে রেল ট্যারিফ অথরিটি গঠন
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শেষ রেল বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটল কংগ্রেস। যাত্রী ভাড়া ও পণ্য মাশুল ঠিক করতে স্বাধীন সংস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের কথাও বলা হয়েছে অন্তর্বর্তী রেল বাজেটে।
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শেষ রেল বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটল কংগ্রেস। যাত্রী ভাড়া ও পণ্য মাশুল ঠিক করতে স্বাধীন সংস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের কথাও বলা হয়েছে অন্তর্বর্তী রেল বাজেটে।
১০০ টাকা আয় করতে খরচ হয়ে যাচ্ছে ৯০ টাকা ৮০ পয়সা। রেলের আর্থিক স্বাস্থ্যের বেহাল দশা এই একটি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। রেলের আয়ের সিংহভাগই আসে যাত্রী ভাড়া ও পণ্য মাশুল থেকে। কিন্তু জনমোহিনী রাজনীতির চাপে বাস্তবে যা হওয়া উচিত তার সঙ্গে অনেক ফারাক থেকে যায় রেলের ভাড়া ও মাশুলের। অন্তর্বর্তী রেল বাজেটে রেলের অর্থনীতি থেকে রাজনীতিকে আলাদা করতে চেয়েছেন রেলমন্ত্রী।
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বাধীন রেল ট্যারিফ অথরিটি গঠনের।সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে স্বাধীন ভাবে যাত্রী ভাড়া ও পণ্য মাশুল ঠিক করবে এই সংস্থা। সুপারিশ পাঠাবে সরকারের কাছে। সংস্কারমুখী এই সিদ্ধান্তে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির দায়ও নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারবে সরকার।
তবে, রেল ট্যারিফ অথরিটির কার্যকারিতা নিয়ে সরকারের অন্দরেই প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, আইন মন্ত্রকের মতে, ১৯৮৯ সালের রেল আইন অনুযায়ী ভাড়া ঠিক করার ক্ষমতা রয়েছে রেলমন্ত্রকের হাতেই। সেই আইন না বদলানো পর্যন্ত রেল ট্যারিফ অথরিটি শুধুমাত্র ভাড়া ও মাশুল পরিবর্তনের সুপারিশটুকুই করতে পারবে।
যাত্রী ভাড়া নিয়ে আরও একটি পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। দিল্লি-মুম্বইয়ের মধ্যে একটি প্রিমিয়াম এসি স্পেশাল ট্রেন চালু করা হচ্ছে। যে ট্রেনে আগাম বুকিংয়ের সময়সীমা থাকবে কম আর বিমান সংস্থাগুলির ধাঁচে চাহিদা অনুযায়ী বদলে যাবে ততকাল টিকিটের খরচ।
অন্তর্বর্তী রেল বাজেটে সংস্কারের লক্ষ্যে আরও দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রেলমন্ত্রী। রেলের পরিকাঠামোকে বিশ্বমানে পৌছে দিতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। পরিকাঠামো তৈরিতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলির সঙ্গে খরচ ভাগ করে নেওয়ার কথাও। কর্ণাটক, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও হরিয়ানা সরকার ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
ভারতীয় রেলের স্বাস্থ্য ফেরাতে দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের কথা বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্তর্বর্তী বাজেটে কিছুটা হলেও সে পথে হাঁটার সাহস দেখিয়েছে কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের পর পূর্ণাঙ্গ রেল বাজেটে সংস্কারমুখী পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হয়, এখন সেদিকেই নজর সকলের।