করোনায় রাজনীতি? ২ মাসেই আগেই গোষ্ঠীসংক্রমণ? উঠে আসছে ৩ তত্ত্ব
এতকিছুর পরেও তাহলে কেন তাহলে গোষ্ঠী-সংক্রমণের তত্ত খারিজ করে দিচ্ছে আইসিএমআর?
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি, দাবি করেছে আইসিএমআর। তাহলে এভাবে ছড়াচ্ছে কেন? প্রশ্ন আম জনতার একাংশের। ফের নতুন করে কানাঘুষো, জোর জল্পনা চলছে দেশজুড়ে!
প্রায় দু-মাস আগে প্রথমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল! ২৮ মার্চ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানায়,দেশে 'নিয়ন্ত্রিত গোষ্ঠী সংক্রমণ' শুরু হয়ে গিয়েছে। ৯ এপ্রিল ICMR এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রকের গবেষকরা একটি রিসার্চ পেপার প্রকাশ করেন। তাতে বলা হয়, দেশের ১৫ রাজ্যের ৩৬ জেলায় গোষ্ঠী-সংক্রমণের ইঙ্গিত মিলছে। টাস্ক ফোর্সের তথ্য বলছে, এপ্রিলেই শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১০২ জনের মধ্যে ৪০ জনের করোনা ধরা পড়ে। তাঁদের কারও বিদেশযাত্রার ইতিহাস নেই, বিদেশফেরত কারও সংস্পর্শেও তাঁরা আসেননি। এতকিছুর পরেও তাহলে কেন তাহলে গোষ্ঠী-সংক্রমণের তত্ত খারিজ করে দিচ্ছে আইসিএমআর? দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বলেছেন রাজধানীতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। কিন্তু পরক্ষণেই তাঁর দাবি খারিজ করে দিয়েছে ICMR!
বিশেষজ্ঞদের একাংশ এই পরিস্থিতিতে বলছেন, এই অসুখে গোষ্ঠী সংক্রমণ ঠেকানো প্রায় অসম্ভব! সরকার এবার গোটা বিষয়টা ভেঙে বলুক! এপিডেমিওলজি সংক্রান্ত ICMR-সাবগ্রুপের এক সদস্য বলছেন,''আমরা জানি গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে। সেটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা বা সেটা থামানোর চেষ্টা করা প্রশ্নাতীত। এটাকে স্তিমিত করাই এখন একমাত্র লক্ষ্য। এখন আর কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং কাজ করবেনা, কারণ সবাইকে ট্রেস করা সম্ভব নয়! সরকার এবার গোষ্ঠী সংক্রমণের কথা বলুক, এতে তাদের কোনও হাত নেই''।
গোটা বিশ্ব করোনা সামলাতে নাজেহাল। আমেরিকা থেকে পাকিস্তান,এ ব্যাপারে সবাই এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে। তাহলে গোষ্ঠী সংক্রমণকে অস্বীকার করা হচ্ছে কেন? বিভিন্ন মহল থেকে ৩টি তত্ত্ব সামনে আসছে!
একটি সূত্র বলছে, হতেই পারে গোষ্ঠী সংক্রমণের আভাষ দিলে দেশজুড়ে আতঙ্কের পারদ চড়বে। বিপুল সংখ্যক টেস্টিং-ও বাড়াতে হবে! সেই চড়া হারে টেস্ট করানোর সম্পূর্ণ পরিকাঠামো এখনও আমাদের নেই।
অনেকে বলছেন, এতে রাজনীতির অঙ্কও আছে! দীর্ঘ আড়াই মাসের লকডাউনের পর গোষ্ঠী সংক্রমণের ঘোষণায় জনমানসে প্রশাসনিক ব্যর্থতার বার্তা যেতে পারে!
তৃতীয় সূত্র বলছে, গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘোষণা ধাক্কা দিতে পারে আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে। কোভিড-পরিস্থিতিতে চিন থেকে সরে আসা আর্থিক বিনিয়োগকে পাখির চোখ করতে চাইছে দিল্লি! ঠারেঠোরে,মেক-ইন-ইন্ডিয়া প্রজেক্টকেই ঢালাও করে আত্মনির্ভর-ভারতের ছাঁচে ফেলাও হয়েছে! এই পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকায় যখন করোনার-গ্রাফ একটু একটু করে নীচে নামছে, তখন ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণের ঘোষণা হলে সমস্যা হবে না তো?
তিন তত্ত্বের হিসেব নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে! অজানা আশঙ্কায় সিঁটিয়ে আমআদমি।
আরও পড়ুন- মাস্ক পরে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষে পেয়েছেন হাজার হাজার মানুষ, বলছে গবেষণা