শেষ রক্ষা হল না! চিদাম্বরমকে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত

সিব্বল আরও বলেন, চিদাম্বরমকে গতকাল থেকে গ্রেফতার করা হলেও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ নাগাদ প্রশ্ন করা হয়। তাঁকে ১২টি প্রশ্ন করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৬টি প্রশ্ন এর আগে একাধিকবার জিজ্ঞাসা করা হয়

Updated By: Aug 22, 2019, 06:50 PM IST
শেষ রক্ষা হল না! চিদাম্বরমকে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত
ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন: আইএনএক্স দুর্নীতি মামলায় পি চিদাম্বরমকে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল সিবিআই আদালত। আগামী ২৬ অগস্ট পর্যন্ত সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকবেন চিদাম্বরম। সবপক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে এই রায় দেন বিচারক। তিনি জানিয়েছেন, পরিবার ও আইনজীবীর তাঁর সঙ্গে দিনে আধ ঘণ্টা দেখা করার সুযোগ পাবেন। জেরা করার সময় তাঁর ব্যক্তিগত সম্মানহানি যেন না তদন্তকারীদের সে দিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন বিচারক।  এদিন চিদাম্বরমকে আদালতে তোলার পর সিবিআই তরফের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সওয়াল শুরু করেন। চিদাম্বরমকে হেফাজতে নেওয়ার গুরুত্ব বোঝান তুষার মেহতা। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, তদন্তে সাহয্য করছেন না প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তিনি চুপ থাকতেই পারেন। ওটা ওর সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু প্রশ্ন করলে ঘুরিয়ে উত্তর দিচ্ছেন।”

তুষার মেহতা আরও বলেন,  চিদাম্বরমকে হেফাজতে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। চার্জশিট কার্যত প্রস্তুত। তাঁর সঙ্গে অন্যান্য অভিযুক্তদের মুখোমুখি বসিয়ে তদন্ত করতে চান সিবিআই ও ইডির আধিকারিকরা। এর পরই ৫ দিনের হেফাজতের আর্জি জানান তুষার মেহতা। চিদাম্বরমকে হেফাজতে নিলে তদন্তে কতটা সুবিধা হতে পারে এ নিয়ে বলতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় উল্লেখ করেন তুষার মেহতা। হেফাজতে নিলে তদন্ত আরও সহজ হয় বলে ওই রায়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল। এরপর বিচারকের কাছে তদন্তের সমস্ত নথি পেশ করেন তিনি।

সলিসিটির জেনারেলের সওয়ালে চিদাম্বরমের আইনজীবী কপিল সিব্বল জবাব দেন, এই মামলায় অভিযুক্ত সবাই এখন জামিনে রয়েছে। মূল অভিযুক্ত কার্তি চিদাম্বরম, আইএনএক্সের কর্ণধার পিটার ও ইন্দ্রাণী মুখার্জিও জামিনে রয়েছেন বলে জানান কপিল সিব্বল। চিদাম্বরমের ক্ষেত্রে গ্রেফতারের কী প্রয়োজন প্রশ্ন তোলেন তিনি। কপিল আরও জানান, আইএনএক্স মিডিয়াকে বিদেশি বিনিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র চিদাম্বরমের একার ছিল না। ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি ওই বোর্ডের প্রধান হলেও আরও ৬ সচিবের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানান কপিল সিব্বল।

আরও পড়ুন- বিদেশ সফরে মোদী, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানকে আরও কোণঠাসা করতে একাধিক বৈঠক

সিব্বল আরও বলেন, চিদাম্বরমকে গতকাল থেকে গ্রেফতার করা হলেও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ নাগাদ প্রশ্ন করা হয়। তাঁকে ১২টি প্রশ্ন করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৬টি প্রশ্ন এর আগে একাধিকবার জিজ্ঞাসা করা হয়। এরপর চিদাম্বরমের দ্বিতীয় আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ওঠেন সওয়াল করতে। তাঁর প্রশ্ন, এই মামলায় অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখার্জির বয়ানের ভিত্তিতে কীভাবে তাঁর মক্কেলকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে চিদাম্বরম চুপ থেকেছেন তুষার মেহতা যে অভিযোগ করেন, সেই প্রসঙ্গে মনু সিঙ্ঘভি বলেন, তদন্তকারীদের পছন্দ মতো উত্তর না দিতে পারা মানে চুপ করা নয়। তাঁকে যদি ১০ বার সমন করেও না আসেন তাহলে চিদাম্বরম অসহযোগিতা করছেন বলা যেতে পারে।

আইনজীবী মনু সিঙ্ঘভি বলেন, চিদাম্বরমের জামিন নাকচ হতে পারে ৩টি কারণে। অসহযোগিতা, প্রমাণ লোপাট এবং ফেরার হওয়া। চিদাম্বরমের ক্ষেত্রে কোনওটাই সাজে না বলে যুক্তি দেন মনু সিঙ্ঘভি। এরপর পি চিদাম্বরম নিজেই সওয়াল করেন। তিনি বলেন, তদন্তকারীরা যা জানতে চেয়েছেন, সব উত্তর দিয়েছি। চিদাম্বরমের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় তাঁর বিদেশে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে কিনা! তাঁর ছেলে কার্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে কিনা! এই দুটো প্রশ্নের উত্তরে না বলেছেন বলে জানান প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।  

.