পাইলিনের বিরুদ্ধে জয় ভারতীয় আবহাওয়া দফতরেরও
বিদেশি সংস্থাগুলিকে টেক্কা দিল ভারতের আবহাওয়া দফতর। টেক্কা দিল পাইলিনের গতি আর গতিবিধি নিয়ে পূর্বাভাসে। চমকে দিল প্রশাসনও। ২৩ বছরের সেরা পারফরম্যান্সে পাইলিন ধাক্কা দেওয়ার আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে। ফলে বিধ্বংসী পাইলিন তেমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারল না। মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৯জনের।
বিদেশি সংস্থাগুলিকে টেক্কা দিল ভারতের আবহাওয়া দফতর। টেক্কা দিল পাইলিনের গতি আর গতিবিধি নিয়ে পূর্বাভাসে। চমকে দিল প্রশাসনও। ২৩ বছরের সেরা পারফরম্যান্সে পাইলিন ধাক্কা দেওয়ার আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে। ফলে বিধ্বংসী পাইলিন তেমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারল না। মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৯জনের।
পাইলিন। থাই শব্দ। বাংলা অর্থ নীলকান্ত মণি। বিধ্বংসী সাইক্লোনের এমন নাম কেন, তা নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে। কিন্তু গত চোদ্দ বছরের সবচেয়ে জোরাল সাইক্লোন পাইলিন ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের মুকুটে নতুন মণি যুক্ত করে দিল। মার্কিন নৌসেনা, বিলেতের আবহাওয়া দফতরের মতো ডাকসাইটে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বলেছিল, পাইলিন আসলে ক্যাটিগরি ফাইভ সাইক্লোন। গতি হবে অন্তত ৩১৫ কিলোমিটার। ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন পাইলিনের গতিবেগ হবে ২০০ থেকে ২৪০ কিলোমিটার।
বাস্তবেও তাই হল। শনিবার রাত ৯টা ২১ নাগাদ গোপালপুরে পাইলিন যখন আছড়ে পড়ল, তখন তার গতিবেগ দুশো কিলোমিটারের কিছু বেশি।
নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের তীব্রতা ক্যাটিগরি ফাইভ হ্যারিকেনের সমতূল্য বলেছিল মার্কিন নেভির টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্র। কিন্তু, ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা শুরু থেকেই নিজের বক্তব্যে অনড় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ঝড়ের নিখুঁত পূর্বাভাস তাঁরাই দিলেন।
আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছে প্রশাসন আর সেনাবাহিনী। ঝড় ধাক্কা মারার আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্রায় দশ লক্ষ মানুষকে। ফলও মিলেছে হাতেনাতে। উনিশশো নিরানব্বইয়ে ওড়িশায় সুপার সাইক্লোনে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় দশ এগারো হাজার মানুষ। কিন্তু প্রায় নব্বই লক্ষ মানুষের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাইলিনের ধাক্কায় মারা গেছেন হাতে গোণা কয়েকজন। তবে পাইলিনের ধাক্কায় নষ্ট হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল। টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ চব্বিশশো কোটি। ভেঙে পড়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ বাড়ি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ওড়িশার গঞ্জাম জেলা।
পাইলিন আছড়ে পড়ার আগে থেকেই বিদ্যুত্হীন ওড়িশার উপকূলবর্তী সাতটি জেলা। বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাও। তবে উদ্ধার ও মেরামতির কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তত্পরতায়। বেশ কিছু রুটে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ট্রেন চলাচল। একটা সাইক্লোনের সঙ্গে যুদ্ধ যেন দেখিয়ে দিল একটি জাতির শক্তিকে।