হাতছাড়া হতে পারে পুরনো ভোটব্যাঙ্ক, গুজরাটে অ্যাসিড টেস্টের মুখে মোদী

গড় বাঁচাতে শনিবার পরীক্ষায় বসছেন নরেন্দ্র মোদী। তরুণ তুর্কিদের মোকাবিলায় মোদীর অস্ত্র ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মা।

Updated By: Dec 8, 2017, 06:27 PM IST
হাতছাড়া হতে পারে পুরনো ভোটব্যাঙ্ক, গুজরাটে অ্যাসিড টেস্টের মুখে মোদী
ঘুড়িতে নরেন্দ্র মোদী। ছবি সৌজন্য- কমলিকা সেনগুপ্ত

শুভঙ্কর মিত্র

 

গুজরাটে বিজেপি মানেই বৈশ্য, পটেল ও জৈন। সেই নিউক্লিয়াসেই এবার হামলা করেছেন হার্দিক পটেল। ২০১৫ সাল পর্যন্ত পটেলরা ছিলেন একনিষ্ঠ বিজেপি সমর্থক। কিন্তু চাকা ঘুরিয়ে দিলেন ২৪ বছরের তরুণ। সৌরাষ্ট্রে ভোটের আগে বিজেপি নেতৃত্বকে চাপে রেখে দিয়েছেন পটেলরা। ২৪ ঘণ্টাকে একান্ত সাক্ষাত্কারে হার্দিক বলেছিলেন, ‘’রাবণের মৃত্য ওর নাভিতে।’’ মোদী জমানার পতনের সূচনাও কি তবে গুজরাট দিয়ে হবে? আশায় বিরোধীরা।   

 

প্রথম দফায় ভোট হচ্ছে সৌরাষ্ট্রে। ২০১২ সালে সৌরাষ্ট্রের বেশিরভাগ আসনই জিতেছিল বিজেপি। তবে এবারের পরিস্থিতি আলাদা। এখানে পটেলরা অন্যতম নির্ণায়ক শক্তি। মোরবি থেকেই শুরু হয়েছিল পটেল সংরক্ষণ আন্দোলন। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে ভাবনগর, আমরেলি, রাজকোট ও জুনাগড়ে। দক্ষিণ গুজরাটে পটেলদের জনসংখ্যা হেলাফেলার নয়। সুরাটে ব্যবসা করেন বহু পটেলভাই। সেখানে হার্দিকের চেয়ে জিএসটি ও নোট বাতিলের প্রভাব বেশি। মোদী দু’টি সিদ্ধান্ত নিয়েই ক্ষোভ রয়েছে হিরে ও কাপড়ের ব্যবসায়ীদের মধ্যে। দুটি সিদ্ধান্তই ধাক্কা দিয়েছে তাঁদের। 

আরও পড়ুন- উন্নয়ন শুধু নগরকেন্দ্রিক, ‘গুজরাট মডেল’-কে কটাক্ষ চাষিদের

হার্দিকের মোকাবিলায় জোড়া হাতিয়ার ব্যবহার করছে বিজেপি। জাতপাতের ছক ভাঙতে প্রচারে নামানো হয়েছিল হিন্দুত্বের মুখ যোগী আদিত্যনাথকে। পাশাপাশি ‘নরম হিন্দুত্বে’র পথে হেঁটেছেন বিজেপি নেতারাও। খোদ নরেন্দ্র মোদীর মুখেও ‘রাম মন্দির’ শোনা গিয়েছে। পটেলদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টাতেও কসুর করেনি গেরুয়া শিবির। বিজেপির আশা, কংগ্রেসের জমানায় ‘খাম’ নীতির জেরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন পটেলরা। খাম বা KHAM অর্থ- ক্ষত্রিয়, হরিজন, আদিবাসী ও মুসলিম। যুব সম্প্রদায় হার্দিকের সঙ্গে থাকলেও, প্রবীণরা এখনও বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক। পাশাপাশি হুজুগে আন্দোলনে সামিল হওয়া এবং ভোটদানের মধ্যে ফারাক রয়েছে বলেও মত বিজেপি থিঙ্কট্যাঙ্কের। 

আরও পড়ুন- ''ইন্দিরার পর মমতা,'' ২৪ ঘণ্টাকে বললেন হার্দিক পটেল

দক্ষিণ গুজরাটে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষও বাস করেন। সেখানে আবার কাঁটা দলিত নেতা জিগনেশ মেবানি ও ওবিসি নেতা অল্পেশ ঠাকোর।নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জিগনেশ মেবানি। তাঁকে সমর্থন দিয়েছে কংগ্রেস। আর রাহুল গান্ধীর দলে যোগ দিয়েছেন অল্পেশ। আর  হার্দিক-জিগনেশ-অল্পেশ ত্রয়ীর সঙ্গে রাহুল গান্ধী- সবমিলিয়ে নিজের ভূমে এই প্রথমবার বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে গুজরাটের ‘হিন্দু হৃদয় সম্রাট’ নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় গুজরাটের অস্মিতা ও নিজের ক্যারিশ্মাকে বাজি রেখে নেমে পড়েছেন গুজরাটের 'ছেলে'। গুজরাট জিতলে কংগ্রেসকে নিশ্চিতভাবেই মোদী আইসিইউ-তে পাঠিয়ে দেবেন, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। আর হারলে ২০১৯-এর আগে মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধীদের লড়াই আরও জমাট হবে। অনেকেরই মত, এককালের জেতা বাজি আজ নরেন্দ্র মোদীর মরণবাঁচন লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে।     

.