Manipur Violence: মণিপুরে ফের নতুন করে অশান্তি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জখম ২৮
ব্যারিকেড ভেঙে এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ৩০ হাজার জনের একটি ভিড়। যার জেরেই সংঘর্ষ বাঁধে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে। জোর সংঘর্ষ হয়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের নতুন করে হিংসা ছড়াল মণিপুরে। জখম ২৮ জন। বুধবার একটি সংগঠনের ৩০ হাজার জনের একটি ভিড় কারফিউ ভেঙে চাঁদচুরাপুর ও বিষ্ণুপুর সীমান্ত এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে। কুকি অধ্যুষিত এলাকায় মেইতেই বাড়িগুলি দখলের চেষ্টা করে। তখনই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। যে ঘটনায় কমপক্ষে ২৮ জন জখম হয়। জাতীয় সড়কের ২-এর ফৌগাকচাও ইখাইয়ের উপর ঘটনাটি ঘটে। ব্যারিকেড ভেঙে এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ৩০ হাজার জনের একটি ভিড়। যার জেরেই সংঘর্ষ বাঁধে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে। জোর সংঘর্ষ হয়। যার জেরে নতুন করে আরও ২৮ জন জখম হয়।
প্রসঙ্গত, 'গুরুতর মানবাধিকার লংঘন হয়েছে মণিপুরে। মানবাধিকারকে ধ্বংস করা হয়েছে মণিপুরে।' মণিপুরের হিংসায় কড়া রিপোর্ট রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞ কমিটির। রিপোর্টে উল্লেখ, মণিপুরে যৌন নির্যাতন-যৌন হিংসার ঘটনা ঘটেছে। নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞ কমিটির এই রিপোর্টকে খারিজ করেছে ভারত সরকার। ভারত সরকারের বক্তব্য, রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট 'অযৌক্তিক, অনুমানমূলক ও বিভ্রান্তিমূলক।' রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনে ভারতের দাবি, উত্তর-পূর্ব রাজ্যের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। ভারতীয় মিশন জোর দিয়ে বলেছে যে মণিপুরের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল এবং ভারত সরকার শান্তি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকার মণিপুরের জনগণ সহ ভারতের জনগণের মানবাধিকার রক্ষার জন্যও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই মর্মে নোটও দিয়েছে ভারতীয় মিশন।
প্রসঙ্গত, জাতিগত হিংসায় দীর্ণ উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট রাজ্য মণিপুর। রাজ্যের দুই বৃহত্তম গোষ্ঠী, সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি এবং সংখ্যালঘু কুকি-র মধ্যে গৃহযুদ্ধের কারণে পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে। নৃশংস খুন থেকে একের পর এক মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসার বিভিন্ন ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এরমধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল মেইতেই পুরুষদের হাতে দুই কুকি মহিলাকে ধর্ষণের পর নগ্ন করে সকলের সামনে প্যারেড করানো। মে মাসে এই আক্রমণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার একটি মর্মান্তিক ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় ২ মাস পর। তারপর সেই ঘটনায় ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। মে মাসে শুরু হওয়া হিংসার ঘটনায় কমপক্ষে ১৩০ জন নিহত হয়েছেন এবং ৪০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন এখনও পর্যন্ত। স্বাধীনতা সংগ্রামীর আশি বছরের বৃদ্ধা স্ত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে। এক ১৮ বছরের তরুণী অভিযোগ করেন, তাঁকে গণধর্ষণ করেছে কালো পোশাক পরিহিত অস্ত্রধারী ৪ যুবক। ওই তরুণী পুলিসকে জানান, তাঁকে অপহরণ করে মহিলাদের একটি দল। তারপর তাঁকে তুলে দেওয়া হয় অস্ত্রধারী ওই ৪ যুবকের হাতে। ঘরে ঢুকে ২ বোনকে গণঘর্ষণের পর খুনের অভিযোগও সামনে এসেছে। খুনের পর মুণ্ডু কেটে বাঁশের বেড়ার মাথায় টাঙিয়ে রাখার মত বীভৎসও ভিডিয়োও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই সব ঘটনা-ই মণিপুরের বীভৎসতাকে তুলে ধরে।
যে কারণে মণিপুর হিংসায় কড়া অবস্থান নিয়েছে সুপ্রিম কোর্টও। মণিপুর পুলিসকে উদ্দেশ করে কড়া তোপ দাগে শীর্ষ আদালত। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় মণিপুর পুলিসকে। মণিপুরে তদন্তে গা-ছাড়া মনোভাব দেখিয়েছে পুলিস। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি বিপর্যস্ত। এমনই জানায় প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। মণিপুরে হিংসার ঘটনায় তদন্তে বেনজির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ৩ প্রাক্তন মহিলা বিচারপতিকে নিয়ে কমিটি গঠন করে দেয় আদালত। একইসঙ্গে একজন ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসারের তত্ত্বাবধানে ৪২টি স্পেশ্যাল ইনভেস্টেগেশন টিম তথা 'সিট'কে মণিপুরে পাঠানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন, India Vs Bharat: 'ভারতের উল্লেখ সংবিধানেই', ইন্ডিয়া নাম পরিবর্তন বিতর্কে সওয়াল জয়শংকরের!