মতাদর্শগত দলিলের খসড়া প্রকাশ করল সিপিআইএম
পার্টি কংগ্রেসের আগে প্রকাশিত হল সিপিআইএমের মতাদর্শগত দলিলের খসড়া। আজ দিল্লির এ কে গোপালন ভবনে খসড়া দলিল প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নয়া অর্থনৈতিক অর্থনীতির জেরে বামেদের সামনে যে নতুন চ্যালেঞ্জ হাজির হয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা রয়েছে মতাদর্শগত দলিলে।
পার্টি কংগ্রেসের আগে প্রকাশিত হল সিপিআইএমের মতাদর্শগত দলিলের খসড়া। সোমবার দিল্লির এ কে গোপালন ভবনে খসড়া দলিল প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ১৯৯২ মাদ্রাজ কংগ্রেসের দুদশক পর প্রকাশিত সিপিআইএমের খসড়া মতাদর্শগত দলিলে নয়া অর্থনৈতিক অর্থনীতির জেরে বামেদের সামনে যে নতুন চ্যালেঞ্জ হাজির হয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। মতাদর্শগত দলিলে দেশে জাতপাতের রাজনীতির প্রভাবের কথা স্বীকার করে, এই রাজনীতিকে মোকাবিলা করতে দলীয় চৌহদ্দির বাইরে বেরিয়ে আন্দোলনের কথা বলা হয়েছে খসড়ায়। এপ্রিল মাসে কেরলের কোঝিকোড়ে দলের ২০ তম পার্টি কংগ্রেসে আলোচনার মাধ্যমে এই মতাদর্শগত দলিলের খসড়া চূড়ান্ত হবে।
সোমবার নয়া মতাদর্শগত দলিলের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ উপলক্ষ্যে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দলের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যসভার নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, বিশ্বায়নের হাত ধরে চাপিয়ে দেওয়া নয়া উদারনৈতিক অর্থনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গডে তোলা সিপিআইএমের অন্যতম প্রধান কাজ। সেই আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে এই মতাদর্শগত দলিলের খসড়ায়।
নয়া মতাদর্শগত দলিলে দেশে জাতপাতের রাজনীতির প্রভাবের কথাও স্বীকার করে নিয়েছে সিপিআইএম। এই রাজনীতিকে মোকাবিলা করতে দলীয় চৌহদ্দির বাইরে বেরিয়ে আন্দোলনের কথা বলা হয়েছে খসড়ায়। জাতপাতের রাজনীতিকে মোকাবিলা করতে বিভিন্ন আঞ্চলিক ইস্যু, আদিবাসীদের দাবিদাওয়াকে সামনে নিয়ে আন্দোলনের কথা বলেছে সিপিআইএম। বস্তুত, সত্তরের দশকে সালকিয়া প্লেনামে গৃহীত প্রস্তাবে হিন্দি বলয়ে দলের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধির উপর বিশেষ জোর দেওয়া হলেও তা কার্যকর করার পথে দলের সামনে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতপাতের রাজনীতির সমীকরণ।
অন্যদিকে ভারতে বাম আন্দোলন তীব্রতর করতে লাতিন আমেরিকার প্রতিরোধ আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেবে সিপিআইএম। গত কয়েক দশকে বিশ্বজুড়ে বদলেছে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সমীকরণ। এই খসড়ায় ওয়ালস্ট্রিট আন্দোলনের মতো উদার অর্থনীতির বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া প্রতিরোধ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে তৈরি হওয়া বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা নেওয়ার উপরও জোর দিয়েছে সিপিআইএম। পাশাপাশি উঠে এসেছে অর্থনৈতিক সংষ্কারের জেরে চিনের বদলে যাওয়া আর্থসামাজিক পরিস্থিতির কথাও। সংষ্কারের ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও চিনের উত্পাদন সম্পর্ক বদলে যাওয়ায় সামাজিক ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়েছে বলে বলা হয়েছে খসড়া দলিলে।