Coromandel Express Accident: শতাব্দীর ভয়ংকরতম দুর্ঘটনার নেপথ্যে কোন টেকনিক্যাল সমস্যা? জানতে পড়ুন

দুর্ঘটনার পরই একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। হাওড়ার হেল্পলাইন নম্বর - ০৩৩ ২৬৩৮২২১৭, খড়গপুরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯, বালেশ্বরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮২৪৯৫৯১৫৫৯, ৭৯৭৮৪১৮৩২২, শালিমারের হেল্পলাইন নম্বর - ৯৯০৩৩৭০৭৪৬, চেন্নাইয়ের হেল্পলাইন নম্বর - ০৪৪ ২৫৩৩০৯৫২/০৪৪-২৫৩৩০৯৫৩/০৪৪-২৫৩৫৪৭৭১, ভদ্রক- ৮৪৫৫৮৮৯৯০০, কেওনঝড় রোড- ৮৪৫৫৮৮৯৯০৬, কটক- ৮৪৫৫৮৮৯৯১৭, ভুবনেশ্বর- ৮৪৫৫৮৮৯৯২২, খুরদা রোড- ৬৩৭০১০৮০৪৬।   

Edited By: সব্যসাচী বাগচী | Updated By: Jun 3, 2023, 04:05 PM IST
Coromandel Express Accident: শতাব্দীর ভয়ংকরতম দুর্ঘটনার নেপথ্যে কোন টেকনিক্যাল সমস্যা? জানতে পড়ুন

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: একটা ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। সেই কারণে অনেক মানুষের প্রাণ চলে যাওয়া। এবং আহত মানুষদের আর্তনাদের মধ্যেই উঠে আসে একাধিক তত্ত্ব। চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস ফের একবার দুর্ঘটনার কবলে পড়তেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ড্রাইভারের ভুল না টেকনিক্যাল সমস্যা? শুধু তাই নয়, কীভাবে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল, সেটা নিয়ে উঠে গিয়েছে একাধিক প্রশ্ন। তাছাড়া দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রেলের অত্যাধুনিক কবচ (Kavach) প্রযুক্তি নিয়েও। কোথায় গেল কবচ? সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা লিঙ্ক হফম্যান বুশ বা LHB কামরা থাকলে সম্ভবত ক্ষয়ক্ষতি আরও কম হত। 

শুক্রবার ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ১২৮৪১ চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস হাওড়ার শালিমার থেকে দুপুর বেলায় রওনা দেওয়ার পর সন্ধ্যায় ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে নাকি একটি মালগাড়িকে ধাক্কা মারে। মালগাড়ির সঙ্গে ট্রেনটির সংঘর্ষ এতটাই জোরালো ছিল যে করমণ্ডলের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপর চেপে যায়।

শালিমার থেকে ট্রেনটি ২৩ টি কামরা নিয়ে চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। সন্ধ্যার সময় ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় অধিকাংশ কামরা ক্ষতির সম্মুখে। অসংখ্য কামরা এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। সাম্প্রতিককালে যে সকল ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে করমণ্ডলের দুর্ঘটনা সবচেয়ে ভয়াবহ এবং ভয়ঙ্কর। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত  এখনও যে আপডেট পাওয়া গিয়েছে তাতে মৃতের সংখ্যা ২৬১। আহতের সংখ্যা অগনিত।  

তবে প্রশ্ন উঠছে কীভাবে এমন বীভৎস দুর্ঘটনা ঘটলো? করমণ্ডলের এমন ভয়ংকর পরিণতি নিয়ে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে, একাধিক কারণ সামনে আসছে। এর পাশাপাশি যেভাবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লোহার দলায় পরিণত হয়েছে তাতে উদ্ধারকার্য যত এগোবে ততই মৃতের সংখ্যা এবং আহতের সংখ্যা বাড়বে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident: মোদী সরকারের 'কবচ' পদ্ধতি অচল! কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident: LHB কামরা ছিল না বলেই কি দেশলাইয়ের বাক্সের মতো উড়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস?

দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে মূলত দুটি ব্যাখ্যা সামনে আসছে। প্রথমত মনে করা হচ্ছে, একটি মালগাড়ি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের আগে যাচ্ছিল। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে একই লাইনে দুটি ট্রেন চলে আসে। এই সময় করমণ্ডল এক্সপ্রেস সোজা গিয়ে ওই মাল গাড়িকে ধাক্কা মারে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপরে উঠে যায় আর কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়ে এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।

দ্বিতীয় ব্যাখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে মনে করা হচ্ছে, প্রথমেই লাইনচ্যুত হয় যশবন্তপুর হাওড়া ট্রেনটি। সেই সময় আপ লাইনে আসছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বেলাইন হওয়া যশবন্তপুর হাওড়া ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা বাঁধে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এবং লাইনচ্যুত হয়ে করমণ্ডল থার্ড লাইনে থাকা মাল গাড়িতে ধাক্কা মারে। যদিও এখনও পর্যন্ত রেলের তরফ থেকে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। এই মুহূর্তে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধার কার্য এবং খুব তাড়াতাড়ি এমন দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্ত শুরু করবে রেল।

তবে রেলের তরফ থেকে যাই বলা হোক, মালগাড়িকে পিছন থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধাক্কা মেরেছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শনিবার সকালেই রেলমন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের ঘোষণা করেছেন। গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন রেলের সেফটি কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব রেল)। যদিও রেলেরও দাবি, বাহানগা বাজারে কোনও মুখোমুখি বা পিছন থেকে সংঘর্ষের ঘটনা হয়নি। পাশাপাশি সংঘর্ষ হয়েছে।

কিন্তু যেভাবে মালগাড়ির উপরে করমণ্ডলের ইঞ্জিন উঠে গিয়েছে, সেটা দেখলে মনে হবে, পিছন দিক থেকে সজোরে ধাক্কা মারার অভিঘাতের ফল। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, কত গতিতে ধাক্কা মারলে করমণ্ডলের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপর উঠে যেতে পারে? রেল যদিও তাদের বিবৃতিতে মালগাড়ির প্রসঙ্গ আনেনি। করমণ্ডল এবং বেঙ্গালুরু সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের বেলাইন হওয়া এবং পাশাপাশি ধাক্কাকেই কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। দুর্ঘটনায় সময় কত গতিতে ছুটছিল ট্রেনটি সে বিষয় এখনও স্পষ্ট নয়। তবে করমণ্ডল যে ভালো গতিতেই ছুটছিল, ধাক্কার অভিঘাতে সেটাই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর পরই করমণ্ডলের সামনের দিকের কয়েকটি কামরা একেবারে দুমড়েমুচড়ে যায়। মোট ১৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে যে দৃশ্য বার বারই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে, কীভাবে মালগাড়ির উপরে চেপে বসল ইঞ্জিন? রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অভিজ্ঞদের মতে, যে কোনও ইঞ্জিনের সামনে, বা কামরার মধ্যে ও পিছনে ‘বাফার’ থাকে।

ছবিতে মালগাড়িটি দেখে মনে হচ্ছে, সেটি ভর্তি ছিল। তাঁদের মতে, ধরে নেওয়া যাক ওই মালগাড়ির পিছনে করমণ্ডল ধাক্কা মেরেছে। সেক্ষেত্রে মালগাড়ি খালি থাকলে তার কামরার পিছন দিকে ঢুকে যেত ইঞ্জিন। কিন্তু ওয়াগনগুলি ভর্তি ছিল বলেই ধাক্কার সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনের সামনে থাকা বাফার সেটিকে ঠেলে উপরের দিকে তুলে দিয়েছে। যে কারণে ওয়াগনের উপর গিয়ে আটকে গিয়েছে ইঞ্জিন। যদিও এসবই প্রকাশ্যে আসা ছবি দেখে মনে করা হচ্ছে। বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও মিল আছে কি না, সেটা বোঝা যাবে তদন্ত শেষ হওয়ার পর। 

এদিকে দুর্ঘটনার পরই একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। হাওড়ার হেল্পলাইন নম্বর - ০৩৩ ২৬৩৮২২১৭, খড়গপুরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯, বালেশ্বরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮২৪৯৫৯১৫৫৯, ৭৯৭৮৪১৮৩২২, শালিমারের হেল্পলাইন নম্বর - ৯৯০৩৩৭০৭৪৬, চেন্নাইয়ের হেল্পলাইন নম্বর - ০৪৪ ২৫৩৩০৯৫২/০৪৪-২৫৩৩০৯৫৩/০৪৪-২৫৩৫৪৭৭১, ভদ্রক- ৮৪৫৫৮৮৯৯০০, কেওনঝড় রোড- ৮৪৫৫৮৮৯৯০৬, কটক- ৮৪৫৫৮৮৯৯১৭, ভুবনেশ্বর- ৮৪৫৫৮৮৯৯২২, খুরদা রোড- ৬৩৭০১০৮০৪৬। 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.