তেলেঙ্গানার পৃথকীকরণে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ব্যস্ত কংগ্রেস

তেলেঙ্গানার মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে স্বীকৃতি দিতে নয়। লোকসভা ভোটে রাজনৈতিক লাভ কুড়োতেই পৃথক রাজ্যের ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। এমনই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আলাদা রাজ্য গঠিত হলে তেলেঙ্গানা তো বটেই, সীমান্ধ্রের শাসনক্ষমতার চাবিকাঠিও তাদের হাতেই থাকবে বলে আশা আকবর রোডের নেতাদের।

Updated By: Aug 2, 2013, 09:00 AM IST

তেলেঙ্গানার মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে স্বীকৃতি দিতে নয়। লোকসভা ভোটে রাজনৈতিক লাভ কুড়োতেই পৃথক রাজ্যের ঘোষণা করেছে কংগ্রেস।
এমনই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আলাদা রাজ্য গঠিত হলে তেলেঙ্গানা তো বটেই, সীমান্ধ্রের শাসনক্ষমতার চাবিকাঠিও তাদের হাতেই থাকবে বলে আশা আকবর রোডের নেতাদের।
অন্যদিকে অন্ধ্র ভাগের বিরোধীতা করে শেষ পর্যন্ত রায়লাসীমা অঞ্চলের তিন রাজ্য মন্ত্রী গতকাল মধ্যরাতে ইস্তফা দিলেন। প্রাথমিক ভাবে ১৪জন ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও মুখ্যমন্ত্রী কিরণ কুমার রেড্ডির সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার ওই তিন জন ছাড়া বাকিরা ইস্তফা থেকে বিরত থাকেন।
ছ-দশকের পুরনো তেলেঙ্গানার দাবি হঠাত করে এখন কেন মেনে নিল কংগ্রেস? রাজনৈতিক অঙ্ক বলছে, রীতিমতো হিসাব কষেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দশ জনপথ। তেলেঙ্গানা এলাকায় জনসমর্থন বাড়িয়ে নেওয়ার পাশাপাশি জগনমোহন রেড্ডিকে সীমান্ধ্রে সীমাবদ্ধ রাখতেই খেলা হয়েছে তেলেঙ্গানা তাস।
তেলেঙ্গানার ১০ জেলায় রয়েছে ১৭টি লোকসভা আসন। এর মধ্যে কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ১৩টি আসন। দুটি আসন রয়েছে টিআরএসের দখলে। টিডিপি এবং এমআইএমের হাতে রয়েছে একটি করে আসন।
 
তেলেঙ্গানা রাজ্যের ঘোষণার পিছনে কংগ্রেসের লক্ষ্য আগামী লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের ১৩ আর টিআরএসের ২টি আসন মিলিয়ে কমপক্ষে ১৫টি আসন নিশ্চিত করে ফেলা। সঙ্গে থাকছে এমআইএমের একটি আসনও। 
বাকি অন্ধ্রের ২৫টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৫-৬টি আসন পাওয়ার আশা করছে কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে, সীমান্ধ্র ও তেলেঙ্গানা মিলিয়ে হাতে আসবে ২১-২২টি লোকসভা আসন। বাকি আসনের অধিকাংশ ওয়াইএসআর কংগ্রেসের দখলে গেলেও কেন্দ্রে সরকার গঠনের সময় জগনমোহন রেড্ডি বাইরে থেকে সমর্থন দেবেন বলে মনে  করছেন আকবর রোডের নেতারা। সেক্ষেত্রে, সিবিআই তদন্তে ওয়াইএসআর পুত্রকে কিছু বাড়তি সুবিধা দিতে হবে। নতুন সমীকরণে টিডিপি-কে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া যাবে বলেও মনে করছে কংগ্রেস।
তেলেঙ্গানার ১০ জেলায় রয়েছে ১১৯টি বিধানসভা আসন। টিআরএস এবং এমআইএম ইতিমধ্যেই কংগ্রেসকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে। ফলে,
তেলেঙ্গানা গঠিত হলে নতুন রাজ্যের ক্ষমতা দখলের দৌড়ে কংগ্রেসই এগিয়ে থাকবে।
 
রায়লসীমা অন্ধ্রে জগনমোহন রেড্ডি ক্ষমতায় এলেও বিধানসভা আসনের নিরিখে সেই সরকারের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতেই থাকবে বলে আশা করছে কংগ্রেস।
 
তেলেঙ্গানার ঘোষণায় অন্ধ্রের এক অংশের মানুষ খুশি। অন্য অংশ ফেটে পড়েছে প্রতিবাদে। কিন্তু, অঙ্ক বলছে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, লাভ হবে কংগ্রেসের।
 
বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ সংখ্যা ৩৩। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংখ্যাটা কমলেও যতটা বেশি সম্ভব আসন ধরে রাখা যায় তা নিশ্চিত করতেই ঘোষণা করা হয়েছে পৃথক তেলেঙ্গানা।
 

.