জোটের জটে দিগভ্রান্ত সরকার, কবুল করলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়
জোট রাজনীতির দুর্বহ বাধ্যবাধকতার জেরেই আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটতে পারছে না মনমোহন সিং সরকার। বুধবার একথা স্বীকার করে নিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রণব মুখোপাধ্যায়।
জোট রাজনীতির দুর্বহ বাধ্যবাধকতার জেরেই আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটতে পারছে না মনমোহন সিং সরকার। বুধবার একথা স্বীকার করে নিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রণব মুখোপাধ্যায়। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, লোকসভা ও রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় সরকারের আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়া আটকে যাচ্ছে। পাশ করানো যাচ্ছে না গুরুত্বপূর্ণ বিল। শরিকি বাধ্যবাধকতার জন্যই যে সরকারকে এভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে পিছিয়ে আসতে হচ্ছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
দুহাজার নয়ের লোকসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার জের যে কংগ্রেসকে অন্তত পরবর্তী লোকসভা ভোট পর্যন্ত টানতে হবে, অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে তা পরিষ্কার। কার্যত বিভিন্ন ইস্যুতে জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কাছে যে সরকারকে আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছে, তার প্রমাণ এর আগে পাওয়া গেছে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বক্তব্যে। স্পষ্ট হয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার জন্য প্রতি পদে জোট শরিকদের নানা দাবিদাওয়া মেনে চলতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। আটকে যাচ্ছে সরকারের আর্থিক সংস্কার কার্যকরের নীতি। ঝুলে থাকছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিল। এবার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের সেই শরিক-নির্ভর রাজনীতির অসহায়তার কথাই খোলাখুলি স্বীকার করে নিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের বিলগ্নিকরণ, বিমাক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের ইস্যুতে বা তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আপত্তি না তুললেও রাজ্য রাজনীতির সমীকরণের কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রের নতুন জমি অধিগ্রহণ বিল বা তিস্তা জলবন্টন চুক্তির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। ফলে কেন্দ্রকে এক পা এগিয়ে দু পা পিছিয়ে আসতে হয়েছে। এমনকী একাধিক ইস্যুতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জয়রাম রমেশ, আনন্দ শর্মাদের সঙ্গে সরাসরি বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন দীনেশ ত্রিবেদী। সেই বিরোধ মেটাতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকেও। সেই নিরিখে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বুধবারের মন্তব্য ফের শরিকি চাপের মুখে সরকারের সেই দুর্বলতার কথাই তুলে ধরল।