Congress নয়, কিন্তু প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়কের উপরই ভরসা Raebareli-র
রায়বারেলি লোকসভা অঞ্চলের মধ্যে থাকা বিধানসভাগুলির মধ্যে দুটি আসনের বিধায়ক এবং রায়বারেলির নগরপালিকাকে নিজেদের দলে টেনে নেয় বিজেপি। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে প্রাক্তন বিধায়ক অদিতিকেই প্রার্থী করে তারা। খুব স্বাভাবিকভাবেই নিজের পারিবারিক গড়, হাতছাড়া হওয়ার সুযোগ দেননি তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: গত পাঁচ দশকে প্রথমবার কংগ্রেসের (Congress) গড় রায়বারেলি (Raebareli) আসন নিজেদের দখলে আনতে চলেছে বিজেপি (BJP)। এক সময়ের কংগ্রেসের ঘরের মেয়ে অদিতি সিং (Aditi Singh) এবার সেই রায়বারেইলিতে পদ্ম ফুটিয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) রায়বারেলি লোকসভা আসনে এখনও সাংসদ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই আসনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়লাভ করেন অদিতি সিং। ২০২৪ সালে রায়বারেলি লোকসভা আসনে কংগ্রেসকে ধাক্কা দেওয়ার কথা মাথায় রেখেই বিধানসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন অদিতি।
রায়বারেলি লোকসভা অঞ্চলের মধ্যে থাকা বিধানসভাগুলির মধ্যে দুটি আসনের বিধায়ক এবং রায়বারেলির নগরপালিকাকে নিজেদের দলে টেনে নেয় বিজেপি। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে প্রাক্তন বিধায়ক অদিতিকেই প্রার্থী করে তারা। খুব স্বাভাবিকভাবেই নিজের পারিবারিক গড়, হাতছাড়া হওয়ার সুযোগ দেননি তিনি। দল বদল করলেও রায়বারেলির মানুষ আস্থা রেখেছেন তাঁদের প্রাক্তন বিধায়কের উপরেই।
ফলে, বিজেপি অনেকাংশে তাদের লক্ষ্যের দিকে বেশ কিছুটা এগিয়ে গেল ২০২২-এর নির্বাচনের পরে। উত্তরপ্রদেশে গান্ধী পরিবারের শেষ দুর্গে ফাটল ধরাতে সক্ষম হয়েছে তারা। রাজনৈতিক মহলের ধারণা বিধানসভা নির্বাচনে রায়বারেলি আসনে কংগ্রেস হেরে গেলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষে এই আসন ধরে রাখা কঠিন হবে যদি সনিয়া গান্ধী আবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার সিদ্ধান্ত নেন। বিশেষত যেখানে তাদের অপর পারিবারিক গড় আমেঠীতে (Amethi) আগেই রাহুল গান্ধিকে (Rahul Gandhi) হারিয়ে দিয়েছে বিজেপি নেত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani)।
যদিও কম শক্তিশালি কংগ্রেস মানেই সেখানে বিজেপি জিতছে এমন সহজ আসন ছিলনা রায়বারেলি। স্থানীয়দের অনেকেই সপা (SP) প্রার্থী রাম প্রতাপ যাদব-এর (RP Yadav) পক্ষে বাজি ধরেন। রাম প্রতাপের সমর্থকরা এই আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা তুলে ধরেন কারণ শেষ নির্বাচনে অদিতি সিং এই আসনে সপা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। ফলত কংগ্রেস, বিজেপি এবং সপার ত্রিমুখি লড়াইয়ে কংগ্রেসের একার পক্ষে এই আসন জেতা কঠিন তা রাজনৈতিক মহলে অনেকেরই ধারণা ছিল।
আরও পড়ুন: Assembly Elections 2022 LIVE UPDATE: 'হাত' নয়, উত্তরের 'গড়' হাতে রাখছে বিজেপি, পঞ্জাবে আপের ছক্কা
বাহুবলী অখিলেশ সিং (Akhilesh Singh), কংগ্রেসের প্রতীকে তিনটি নির্বাচনে জয়লাভ করেন এই আসনে। এছাড়াও ২০০৭ এবং ২০১২ সালে যথাক্রমে নির্দল এবং পিস পার্টির প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করেন। কংগ্রেস থেকে দূরে সরে গেলেও তিনি কখনও বিজেপিতে যোগ দেননি। যদিও তাঁর মেয়ে অবশ্য কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর বিজেপিতে যোগ দেন। ২০১৭ সালে,আমেরিকা থেকে পড়াশুনা শেষ করে ফেরা অদিতি সিংকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রা (Priyanka Gandhi Vadra) প্রার্থী করেন। তার কাঁধে ভর করেই কংগ্রেস-সপার জোটপ্রার্থী হিসেবে রেকর্ড ১,২৮,৩১৯ ভোটে আসনটি জেতে কংগ্রেস।
ব্রাহ্মণ, কায়স্থ এবং মুসলমানদের অধ্যুষিত এই নির্বাচনী এলাকায়, এদের পরেই জনসংখ্যার ভিত্তিতে রয়েছে যাদব এবং ওবিসি-রা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছিলেন যে এই আসনে ব্রাহ্মণ ও মুসলিম ভোট নির্নায়ক হিসেবে দেখা দেবে। ফলে বিজেপি এবং কংগ্রেস ব্রাহ্মণ ভোটের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, অন্যদিকে মুসলিমদের একটি অংশ কংগ্রেসকে ভোট দিতে পারে। এর ফলে ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল সপা-র ভোটব্যাঙ্ক কারণ তাদের নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা বহুলাংশে নির্ভরশীল মুসলিম এবং যাদব সমীকরণের উপর। কার্যক্ষেত্রে দেখা গেছে কগ্রেসের উপর ভরসা না রাখলেও প্রাক্তন কংগ্রেস প্রার্থীকেই বেছে নিয়েছে রায়বারেলির জনতা।