Nitish Kumar vs BJP: ফের দল বদলাবেন নীতীশ? বিহারের রাজনীতিতে ফের পটপরিবর্তন?
নীতীশ কুমার আবেগপ্রবণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত নন। তাই তিনি পরবর্তীতে যা করবেন তা মূলত নির্ভর করবে বর্তমানে কোনও বিকল্প রয়েছে কিনা তার উপর। নির্ভর করবে অন্য দলগুলি, বিশেষ করে বিজেপি, আরজেডি এবং কংগ্রেস তাকে কী প্রস্তাব দিতে ইচ্ছুক তার উপর।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) 'অন্তরত্মা' কি তাকে আবারও তাঁকে পক্ষ বদলাতে ঠেলে দেবে? নাকি বিহারে জনতা দল (ইউনাইটেড) (JDU) এবং বিজেপি-র (BJP) মধ্যে রাজনৈতিক কোন্দল তীব্র হবে? তবে বিজেপি-জেডি(ইউ) দূরত্ব আরও বাড়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট। যাবতীয় জল্পনার পারদ আরও চড়িয়ে দিয়েছেন খোদ জেডি(ইউ) সুপ্রিমো নীতীশ কুমার। এবার কি বিহারেও পালাবদল? গত কয়েক মাস ধরেই নানা ইস্যুতে জোটসঙ্গী বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে নীতীশের জেডি(ইউ)-এর। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের বৈঠকও এড়িয়েছেন তিনি। নীতীশ কুমার আবেগপ্রবণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত নন। তাই তিনি পরবর্তীতে যা করবেন তা মূলত নির্ভর করবে বর্তমানে কোনও বিকল্প রয়েছে কিনা তার উপর। নির্ভর করবে অন্য দলগুলি, বিশেষ করে বিজেপি, আরজেডি এবং কংগ্রেস তাকে কী প্রস্তাব দিতে ইচ্ছুক তার উপর।
আরও পড়ুন, Bihar Politics: বিহারে দ্রুত বদলাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ! ফিরতে চলেছে মহাগাঁটবন্ধন সরকার?
১. দল পরিবর্তন, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মহাগঠবন্ধনে ফিরে যাওয়া
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, পাঁচ বছর পরে ফের বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে ‘মহাগঠবন্ধন’ গড়তে সক্রিয় হতে পারেন নীতীশ। এর অর্থ হল রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ২০১৫-১৭ ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া। বর্তমানে, সিপিআই-এমএল, সিপিআই এবং সিপিআই(এম) এর মতো বাম দলগুলিও জোটের অংশ। তবে নীতীশ কুমারের পক্ষে মহাগঠবন্ধনে ফিরে যাওয়া সহজ হবে না। কারণ ২০১৫ থেকে ১৭ অনেক কিছু পরিবর্তিত হয়েছে এবং এর জন্য তিনি নিজেই মূলত দায়ী।
* ২০১৭-য় তিনি যেভাবে এনডিএ-তে চলে যান তার পরিপ্রেক্ষিতে নীতীশ কুমারের প্রতি মহাগঠবন্ধনের আস্থার বড় ঘাটতি রয়েছে।
* জেডি(ইউ) ২০১৭-র তুলনায় অনেক দুর্বল দল। তখন ৭১টি আসন ছিল, এখন আসন সংখ্যা মাত্র ৪৫। অন্যদিকে, আরজেডি শক্তিশালী হয়েছে এবং এখন ৮০ আসনে দাঁড়িয়েছে।
* নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে ক্ষমতাবিরোধী শক্তি অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি শক্তিশালী। অতএব, আরজেডি-র পক্ষে নীতীশ কুমার-নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন করা পাল্টা অর্থপূর্ণ হতে পারে কারণ এতে তার বিরুদ্ধে ক্ষমতাবিরোধীতার বোঝা বহন করা হবে।
২. আরও কিছু ছাড়ের জন্য বিজেপির সঙ্গে থাকা
এটা কোন গোপন বিষয় নয় যে নীতীশ কুমারকে ছোট করার চেষ্টা করছে বিজেপি। যেভাবে চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি রাজ্যের বাকি অংশে বিজেপিকে সমর্থন করার সময় বিধানসভা নির্বাচনের সময় শুধুমাত্র জেডি(ইউ) কে পরাজিত করার জন্য প্রার্থী দিয়েছিল, তাতেই বিজেপির পরিকল্পনার স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল। ফলে জেডি(ইউ) এর সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায় এবং বিজেপি ৭৭ আসন পর্যন্ত পৌঁছয়।
৩. তেজস্বী যাদবের হাতে বিহার হস্তান্তর করে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তেজস্বী যাদবকে সমর্থন করা এবং নন-এনডিএ ফ্রন্টের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসাবে জাতীয় রাজনীতিতে স্থানান্তরিত করা জড়িয়েও পরাও একটি কারণ। কিছু উপায়ে, এটি নীতীশ কুমারের জন্য একটি আকর্ষণীয় পথ। কারণ বিহারের রাজনীতিতে তিনি তার শিখর পেরিয়ে গেছেন। তার আর ২০০৫, ২০১০ বা ২০১৫ সালের সুশাসনের প্রয়োজনীয়তায় নেই । জেডি(ইউ) শক্তিতে দুর্বল হয়েছে এবং তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তাও হ্রাস পেয়েছে। প্রসঙ্গত, ২৪৩ আসনবিশিষ্ট বিহার বিধানসভায় জেডি (ইউ)-র আসনসংখ্যা ৪৫, বিজেপির ৭৭। অন্য দিকে আরজেডি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের দখলে ১১৬টি আসন। সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় আসনসংখ্যা ১২২। সুতরাং, বিরোধী জোটের সমর্থনে নীতীশের সরকার গড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না কেউই।