অযোধ্যার জমি দেওয়া হোক হিন্দুদের, সুপ্রিম কোর্টে জানাল শিয়া ওয়াকফ বোর্ড
জমিটির মালিকানা হিন্দুদের ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অযোধ্যার বিতর্কিত জমি দেওয়া হোক হিন্দুদের। সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিল শিয়া ওয়াকফ বোর্ড। তাদের যুক্তি, এলাহাবাদ হাইকোর্ট জমির এক তৃতীয় দিয়েছে মুসলিমদের। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে নয়। ওই জমিটির আসল মালিক শিয়া ওয়াকফ বোর্ড। ওই অংশটি হিন্দুদের দিয়ে দেওয়া হোক।
অযোধ্যা মামলায় শুক্রবার ১৬তম দিনের শুনানি শেষ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। নমাজ পড়ার পদ্ধতি নিয়ে এদিন যুক্তি মেলে ধরেন রাম জম্মভূমি পুনরুদ্ধার সমিতির আইনজীবী পিএন মিশ্র। হাদিস উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মহম্মদ বলেছিলেন, ঘণ্টা বাজিয়ে নমাজ পড়া যায় না। কারণ, ঘণ্টা শয়তানের যন্ত্র। ঘণ্টা বাজালে ফরিস্তারা সেই জায়গা বা ঘরে যান না। কিন্তু ঘণ্টা ছাড়া মন্দিরে পুজো করা সম্ভব নয়।'
পিএন মিশ্রা আরও বলেন,'ইবন বতুতা ভারতযাত্রায় আশ্চর্য হয়েছিলেন। দেখেছিলেন, সব মসজিদেই বাজছে ঘণ্টা। ঘণ্টা বাজিয়ে পুজো করা হচ্ছে।' হাদিসের উল্লেখ করে মিশ্রা দাবি করেন, মহম্মদ বলেছিলেন, হিন্দু-মুসলিম এক জায়গায় থাকতে পারবেন না।
বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে প্রশ্ন করেন, বিতর্কিত জমি থেকে কি ঘণ্টা মিলেছে? পিএন মিশ্র জবাব দেন, হ্যাঁ ওখানে ঘণ্টা থাকার প্রমাণ মিলেছে। রয়েছে মৌখিক প্রমাণও। পিএন মিশ্রা আরও বলেন,'কবরস্থানের দিকে মুখ করে নমাজ পড়তে বারণ করেছেন মহম্মদ। কিন্তু বাবরির আশেপাশে রয়েছে একাধিক কবরস্থান। শাহজাহানকে এক ইসলামিক শিক্ষাবিদ আব্দুল হকিম বলেছিলেন, মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি হলে, সেটা মসজিদ হিসেবে গণ্য হয় না।'
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানতে চান, মসজিদ কীরকম হতে পারে? নমাজ পড়ার প্রক্রিয়া কী? পিএন মিশ্রা আদালতকে জানান, মসজিদের জমির মালিকানা থাকা উচিত ওয়াকফের হাতে। ওয়াকফই জমি দান করতে পারে। কমপক্ষে দিনে দু'বার নমাজ পড়া হয় মসজিদে। সেখানে হাত-পা ধোয়ার ব্যবস্থা থাকা দরকার। মসজিদে যে কোনও ধরনের পশু, ছবি বা পেন্টিং থাকলে চলবে না। থাকবে না ঘণ্টাও। একই জমিতে মসজিদ ও মন্দির একসঙ্গে হতে পারে না। মসজিদে রান্না করা যায় না। অন্য কারও জমিতে মসজিদ বানানো যায় না। মসজিদের আশেপাশে কবরস্থান থাকা উচিত নয়। অন্য ধর্মের লোকেদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না মসজিদ।
পিএন মিশ্রা সওয়াল করেন, অযোধ্যার জমি কখনও মুসলিমদের মালিকানায় ছিল না। মুসলিম শাসক থাকায় জোর করে সেখানে নমাজ পড়া হতো। ১৮৫৬ সালের আগে নমাজ পড়াও হতো না। ১৯৩৪ সাল থেকে শুধুমাত্র শুক্রবারেই নমাজ পড়তেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। এটা পুলিস রেকর্ডে নথিভূক্ত রয়েছে। ভগবান বিষ্ণুর সপ্তম অবতার শ্রী রাম অযোধ্যার ওই জমিতেই প্রকট বয়েছিলেন। ইসলামি আইন অনুযায়ী, মসজিদের মালিকানা সম্পূর্ণ থাকা উচিত। মন্দিরের উপরে মসজিদ তৈরির উপরে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আরও পড়ুন- ইতিহাস মনে করাল চিন, এটা ১৯৬২ সাল নয়, পাল্টা দিল ভারতীয় সেনা