মৃত ছেলের বীর্য সংরক্ষণ করে যমজ নাতির মুখ দেখলেন দম্পতি
২০১৬ সালে পুনেতে ফিরে মৃত্যু হয় ওই যুকবের। এরপরই ছেলের মৃত্যুশোকে কাতর যুবকের বৃদ্ধ বাবা-মা সিদ্ধান্ত নেন জার্মানির স্পার্ম ব্যাঙ্কে রাখা ছেলের বীর্যের নমুনা ভারতে নিয়ে আসবেন। তার থেকে সারোগেসির মাধ্যমে পাবেন নাতি বা নাতনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন : দু'বছর আগে ক্যানসারে মৃত্যু হয়েছে ছেলের। সেই ছেলের বীর্য সংরক্ষণ করে সারোগেসির মাধ্যমে এবার জমজ নাতি পেলেন এক বৃদ্ধ দম্পতি। এখন তাঁরা অনেকটাই ভুলে থাকতে পারছেন পুত্রশোক।
২০১৩ সালে জার্মানিতে পাঠরত অবস্থায় ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে ওই যুবকের। চিকিত্সক জানান, কেমোথেরাপি নিতে হবে তাঁকে। তখনই আশঙ্কা ভুগতে থাকেন তাঁর বাবা-মা। চিকিত্সার পর ছেলে ছেলে প্রজনন ক্ষমতা হারাবে, এই আশঙ্কায় তাঁর বীর্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেন বাবা-মা। এর পরই ওই যুবকের বীর্যের নমুনা সংরক্ষণ করে রাখা হয় জার্মানির একটি সংস্থায়।
২০১৬ সালে পুনেতে ফিরে মৃত্যু হয় ওই যুকবের। এরপরই ছেলের মৃত্যুশোকে কাতর যুবকের বৃদ্ধ বাবা-মা সিদ্ধান্ত নেন জার্মানির স্পার্ম ব্যাঙ্কে রাখা ছেলের বীর্যের নমুনা ভারতে নিয়ে আসবেন। তার থেকে সারোগেসির মাধ্যমে পাবেন নাতি বা নাতনি।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতিকে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন রূপান্তরকামী তরুণীর
ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করতে তাঁরা যোগাযোগ করেন জার্মানির স্পার্ম ব্যাঙ্কে। গত বছর সেখান থেকে ছেলের বীর্যের নমুনা নিয়ে আসা হয় পুনেতে। এরপরই পুনের আহমেদনগর রোডে সাহাদ্রি হাসপাতালে আইভিএফ প্রক্রিয়া শুরু করার আর্জি জানাতে যান তাঁরা। প্রথমে যুবকের ৪৯ বছর বয়সী মা নিজেই ডিম্বাণু দান করতে চান। যদিও, তাঁর গর্ভধারণের ক্ষমতা আর না থাকায় অবশেষে এক আত্মীয়ার সাহায্য নিতে হয় তাঁদের। তার থেকে পাওয়া ডিম্বাণু ও ওই শুক্রাণুর মিলন ঘটিয়ে ৪টি ভ্রুণ তৈরি করেন চিকিত্সকরা। এর পর তা ওই আত্মীয়ের জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। অবশেষে ২০১৭-র জুনে মেলে সাফল্য। গর্ভধারণ করেন ওই আত্মীয়া। চলতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি।
তবে গোটা প্রক্রিয়ার আইনি দিক নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকের প্রশ্ন, গোটা প্রক্রিয়াটি কি বৈধ? চেন্নাই সারোগেসি ল সেন্টারের কর্ণধার হরি জি রামাসুব্রহ্মণ্যম বলেন, এই ঘটনা ভারতে প্রথম নয়। এর আগে তিন থেকে চারবার এমন ঘটনা ঘটেছে এদেশে। তবে প্যাঁচে আটকে রয়েছে বৈধতা। কারণ, সারোগেসি রেগুলেশন বিল ২০১৬ এখনও পাস হয়নি সংসদে। ফলে কৃত্রিম প্রজনন নিয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই দেশে।