হাতে আর মাত্র ৫ দিন, কবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে বিজেপি?
উত্তর-পূর্বে বিজেপির গড়ে ভাঙন ধরায় নতুন করে চিন্তায় ফেলেছে অমিত শাহদের। টিকিট না পাওয়ায় অরুণাচল প্রদেশে এক সঙ্গে ৬ বিজেপি নেতা ইস্তফা দিয়েছে
জ্যোতির্ময় কর্মকার: প্রথম দফায় ৯১ আসনে মনোনয়নপত্র তোলা এবং জমা দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই খোদ বিজেপি অন্দরে প্রশ্ন, আজও কি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে? এই বিজেপি বরাবরই নির্বাচন এগিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করে এসেছে। তাই স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, প্রার্থী তালিকা প্রকাশে কোন বিষয় এই মুহূর্তে দেওয়াল হয়ে দাঁড়াচ্ছে অমিত শাহদের কাছে? দু’দিন ধরে গভীর রাত পর্যন্ত চলে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। আজও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়া নিয়ে স্পষ্ট খবর নেই। কিন্তু কেন?
উত্তর-পূর্বে বিজেপির গড়ে ভাঙন ধরায় নতুন করে চিন্তায় ফেলেছে অমিত শাহদের। টিকিট না পাওয়ায় অরুণাচল প্রদেশে এক সঙ্গে ৬ বিজেপি নেতা ইস্তফা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন দুই সাংসদ এবং ৬ বিধায়ক। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনার্দ সাঙ্গমার ন্যাশনাল পিপল’স পার্টিতে যোগ দেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা। এনডিএ শরিক সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা এবং ন্যাশনাল পিপল’স পার্টি এ বারের লোকসভা নির্বাচনে একা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপি শাসিত ত্রিপুরাতেও টালমাটাল অবস্থা। দলের সহ-সভাপতি সুবল ভৌমিক নীতিপঙ্গুতার অভিযোগ এনে ইস্তফা দিয়েছেন। আজই ত্রিপুরায় রাহুল গান্ধীর সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিচ্ছেন কংগ্রেসে। অর্থাত্ নাগরিক সংশোধনী বিল (এনআরসি)-কে কেন্দ্র করে উত্তর পূর্ব ভারতে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তা প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে করা হচ্ছে, নতুন করে প্রার্থী তালিকা সাজাতে এবং শরিকদের ক্ষোভ ঢাকতে নয়া কৌশলী তৈরি করছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- ভোটের ফায়দা লুটতে পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা জিইয়ে রাখছে বিজেপি, বিতর্কিত অভিযোগ মেহবুবা
সূত্রে খবর, ছত্তিসগঢ়, কর্নাটকে একাধিক সাংসদকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না এ বারের লোকসভা নির্বাচনে। বিশেষ করে ছত্তিসগঢ়ের ১১টি আসনের নতুন মুখ নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে বিজেপি। যা নজিরবিহীন বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ে হারতে হয়েছে বিজেপিকে। কিন্তু ছত্তীসগঢ়ের পরাজয় বিজেপির কাছে ছিল অপ্রত্যাশিত। এক বিজেপি নেতার কথায়, দলের অন্তর্তদন্তের রিপোর্ট বলছে ছত্তীসগঢ়ের প্রত্যন্ত এলাকায় মোদী সরকারের প্রকল্প পৌঁছে দিতে ব্যর্থ রমন সিংয়ের প্রশাসন। দলের সংগঠনও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ যথাযথভাবে করতে পারেনি। সূত্রের খবর, ভোটের আগে তৃণমূল স্তরে মানুষের প্রতিক্রিয়া নিয়ে যে রিপোর্ট তৈরি হয় তা সন্তোষজনক ছিল না। সাংসদদের কাছে থেকেও কাজের খতিয়ান জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেশ কিছু রাজ্যে সাংসদদের কেন্দ্রও বদল করা হবে বলে সূত্রের খবর। যেমন, বিহারের নবাদা লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে আসা বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিংকে অন্য কেন্দ্রে দাঁড় করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী বারাণসী থেকই লড়ছেন কার্যত নিশ্চিত। তবে, গত বারের মতো দুটি কেন্দ্রে এ বারেও লড়বেন কি না তা নিয়ে চলছে আলোচনা।