রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা চেপে মেয়ে ফিরল বাড়িতে, শেষ রক্ষা হল না, উত্তরপ্রদেশ যেন নরক!
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, শরীরের ভেতর ও বাইরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে গুরুতর চোট ছিল। ব্যাপক রক্তক্ষরণের জন্যই সেই যুবতীর মৃত্যু হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন- ফের সেই উত্তরপ্রদেশ। হাথরাসের পর এবার বলরামপুর। দলিত ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। ২২ বছর বয়সী সেই দলিত ছাত্রীকে অপহরণের পর জোর করে মাদক জাতীয় দ্রব্য সেবন করানো হয়। তার পর সুযোগ বুঝে সেই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে কিছু দুষ্কৃতী। গণধর্ষণের পর সেই ছাত্রীকে রিকশা চাপিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার কয়েক ঘণ্টা পরই সেই যুবতী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
উত্তরপ্রদেশের পুলিস প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা যোগী সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে। ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে গোটা দেশ। কিন্তু বরাবরই প্রতিটি ঘটনার তদন্তে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রশাসনের গাফিলতি ধরা পড়ছে।
হাথারাসের পর বলরামপুরের এই ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বলরামপুরের গোসরি থানার অন্তর্গত এলাকায় থাকতেন ওই যুবতী। কমার্স-এর ওই ছাত্র ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল দশটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মেয়ে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকেন। তারপর শুরু হয় সেই যুবতীর খোঁজ। সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ রক্তাক্ত অবস্থায় সেই যুবতী রিকশায় চেপে বাড়ি ফিরে আসেন। কাউকে কিছু বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না সেই যুবতী। এরপর গ্রামেরই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তাররা তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন।
গ্রামের চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, ওই যুবতীকে ভাল কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই যুবতী। তাঁর বাড়ির লোকের অভিযোগ, গ্রামেরই ৫-৬ জন যুবক তাঁকে অপহরণ করে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে। মাদক জাতীয় কোনও দ্রব্য সেই যুবতীকে খাওয়ায় ওই যুবকেরা। তারপর দুষ্কর্ম চলে। পীড়িতার মায়ের অভিযোগ, তাঁর মেয়ে যখন বাড়ি ফেরে তখন রক্তে সারা শরীর ভেসে যাচ্ছিল। তিনি আরো জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের কোমর ও দুটি পা ভেঙে রিকশায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাড়ি ফেরার পর সেই যুবতী কোন কথাই বলতে পারছিলেন না। শুধু বলেছিলেন, সারা শরীরে প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছে। তিনি হয়তো আর বাঁচবেন না।
আরও পড়ুন- হাথরাসের পুনরাবৃত্তি হতে পারত বুলন্দশহরে! ধর্ষকের হাত থেকে কোনওরকমে বাঁচল নাবালিকা
মেধাবী ছাত্রী হিসাবে গ্রামে ওই যুবতীর নামডাক ছিল। একটি সংস্থায় কমিউনিটি রিসার্চ পার্সন হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। পুলিস ওই যুবতীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, শরীরের ভেতর ও বাইরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে গুরুতর চোট ছিল। ব্যাপক রক্তক্ষরণের জন্যই সেই যুবতীর মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু'জনকে আটক করেছে পুলিস।