আডবাণী এবং বাজপেয়ী একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ! একজন মুখ, অন্য জন মুখোশ

আরএসএসের বীজমন্ত্রই সারাজীবন জপে এসেছেন বাজপেয়ী। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেই হিন্দুবাদী রাষ্ট্রদর্শনকেই সার্বজনীন রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন, নিজের ইমেজকে এতটুকুও কালিমালিপ্ত না করে।

Updated By: Aug 17, 2018, 05:21 PM IST
আডবাণী এবং বাজপেয়ী একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ! একজন মুখ, অন্য জন মুখোশ

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতীয় রাজনীতির সবচেয়ে সফল অ-কংগ্রেসি মুখ। রাষ্ট্রীয় স্তরে জোট রাজনীতির পিতামহ ভীষ্ম। দলের জন্ম থেকে ক্ষমতার অলিন্দে পা রাখার কাণ্ডারি। এভাবেই অটল বিহারি বাজপেয়ীকে মনে রাখবে ইতিহাস। আরও একটা পরিচয় অবশ্য আছে এই প্রবাদ প্রতিম বিজেপি নেতার। সমালোচকদের মতে সেটাই বাজপেয়ীর একমাত্র পরিচয়। সঙ্ঘের প্রচারক, হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রাণপুরুষ। অন্যদিকে, হিন্দুত্বের পোস্টার বয় হিসাবে বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে আডবাণীকে। 

"দুই দেশের সম্পর্ক অটল থাকুক", বাজপেয়ীর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন ইমরানের

অথচ, শুরু থেকে শেষ, সঙ্ঘের অ্যাজেন্ডা থেকে একবারের জন্যও সরেননি বাজপেয়ী। কিন্তু, হিন্দুবাদী তকমায় কেউ তাঁকে বিঁধতে পারেনি। সমালোচকদের মতে আডবাণী এবং বাজপেয়ী একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। একজন মুখ, অন্য জন মুখোশ। বিরোধী শিবিরের কেউ নন। প্রাক্তন সঙ্ঘ নেতা গোবিন্দাচার্যই বাজপেয়ী সম্পর্কে এমনটা বলেছিলেন। যা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। 

প্রেক্ষাপট: গুজরাট হিংসা 

গুজরাট হিংসার পর নরেন্দ্র মোদীকে প্রকাশ্যে রাজধর্মের শিক্ষা দেওয়া, বাজপেয়ীর গ্রহণযোগ্যতাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপোষে যে তিনি রাজি নন, এই বার্তা ছড়িয়ে যায় গোটা দেশে। যদিও, ইতিহাস বলে, বন্ধ ঘরে অন্য কথাই বলেছিলেন অটলবিহারি বাজপেয়ী। দু-হাজার দুইয়ে গোধরা পরবর্তী হিংসার পর গোয়ায় বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক বসে। সেখানে তাঁর বক্তব্য কিন্তু এই মুখ-মুখোশের বিতর্ককেই সামনে এনে দেয়। কী বলেছিলেন বাজপেয়ী!

যদি সবরমতী এক্সপ্রেসের নিরীহ যাত্রীদের পুড়িয়ে মারার ষড়যন্ত্র না হতো, তাহলে হয়তো তার পরের ঘটনাগুলিও ঘটত না। গুজরাটের ঘটনার শুরু কোথায় তা আমাদের ভুললে চলবে না। পরে যা হয়েছে তা অবশ্যই নিন্দনীয়, কিন্তু প্রথমে আগুন কে লাগিয়েছিল? 

প্রেক্ষাপট:  রাম জন্মভূমি আন্দোলন

বাবরি-কাণ্ডে আডবাণীদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা চলছে। অটলবিহারী বাজপেয়ী কিন্তু সুকৌশলে সেই বিতর্ক থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পেরেছিলেন। বিরানব্বইয়ের ছয়ই ডিসেম্বর তিনি অযোধ্যাতেই থাকেননি। আগের দিন লখনউয়ে অবশ্য রামমন্দির ইস্যুতে তাঁর এই বক্তব্য, সেই মুখ-মুখোশের তত্ত্বকেই সামনে এনে দেয়।  

"দুই দেশের সম্পর্ক অটল থাকুক", বাজপেয়ীর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন ইমরানের

সমালোচকরা তাই বলেন আরএসএসের বীজমন্ত্রই সারাজীবন জপে এসেছেন বাজপেয়ী। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেই হিন্দুবাদী রাষ্ট্রদর্শনকেই সার্বজনীন রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন, নিজের ইমেজকে এতটুকুও কালিমালিপ্ত না করে।

.