৮৯ বছর বয়সেও পরীক্ষা দিচ্ছেন এই স্বাধীনতা সংগ্রামী
আইনে ডিগ্রি আছে, মাস্টার্স ডিগ্রিও করেছেন। তবু, পড়াশোনায় খামতি রাখতে চান না শরণ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বয়সটা নিতান্তই তাঁর কাছে একটা সংখ্যা মাত্র। বয়স 'মাত্র' ৮৯ বছর। এই বয়সেও তিনি লক্ষ্যে অবিচল। পড়তে চান, আরও পড়তে চান শরণবাসবরাজ বিসারাহল্লি। কর্ণাটকের কোপ্পাল এলাকার এই স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা সমাজসেবী এই মুহূর্তে পিএইচডি করছেন। যদিও একাধিকবার চেষ্টা করেও আসছে না সাফল্য। বয়স বাড়ছে, জীবনের এই ইচ্ছে পূরণের উদ্দেশ্যেই জোরকদমে চলছে পড়াশোনা। এবার যে কন্নড় সাহিত্যে পিএইচডি পরীক্ষায় পাশ করতেই হবে। সময় পেলেই বই নিয়ে পড়তে বসে যান। পড়াশোনা ছাড়া যে তিনি বাঁচতেই পারেন না। তাই তো হাম্পি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবার পিএইচডি পরীক্ষায় পাশ করতে মরিয়া তিনি।তিনিই সম্ভবত বেশি বয়সি প্রার্থী হিসেবে পিএইচডি এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে চলেছেন। ইতিমধ্যে ১৫টি বই লেখা হয়ে গেছে তাঁর। আইনে ডিগ্রি আছে, মাস্টার্স ডিগ্রিও করেছেন। তবু, পড়াশোনায় খামতি রাখতে চান না শরণ।
#Karnataka: 89-year-old freedom fighter Sharanabasavaraj Bisarahalli from Koppal aspires to complete his PhD Programme in Hampi University. He holds a degree in law & Masters degrees from Karnataka University in Dharwad & Hampi Kannada University as well. pic.twitter.com/XKfxtKI28b
— ANI (@ANI) September 9, 2018
১৯২৯ সালে কর্ণাটকের কোপ্পালে জন্ম হয় শরণবাসবরাজ বিসারাহল্লির। অল্প বয়সেই জড়িয়ে পড়েছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনে। কিশোর বয়সেই পেয়েছিলেন স্বাধীনতার লড়াইয়ে জয়ের স্বাদ। এরপর ইন্টারমিডিয়েট শেষ করে তিনি লৈথাদেবীকে বিয়ে করেন। সেইসময় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন একটি প্রাইমারি স্কুলে। ১৯৯১ সালে শিক্ষক পদ থেকে অবসরগ্রহণ করেন শরণ। এরপরই ঠিক করেন, নিজেকে আরও উচ্চশিক্ষিত করে তুলবেন। শুরু করেন আইন নিয়ে পড়াশোনা। আইনে স্নাতক হওয়ার পর স্নাতকত্তোরের লক্ষ্যে ঝাঁপান তিনি। কর্নাটক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কন্নড় সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। কিন্তু তাঁর পিএইচডি-র স্বপ্নপূরণ হয়নি তখন কারণ, তিনি ৫৫ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছিলেন বলে। ফের ওই বিষয়ে আবার মাস্টার্স করেন। এবার ৬৬ শতাংশ নম্বর পাওয়ায় তাঁর সামনে খুলে গেছে পিএইচডি এন্ট্রান্স পরীক্ষার দরজা। আগামী বছরে শেষ করতেই হবে লেখাপাড়ার পাঠ। শরনবাসবরাজ বিসারাহাল্লি বলেন, "গত বছরে পরীক্ষা দিয়েছিলাম কিন্তু পাশ করতে পারিনি। এই বছরেও পরীক্ষা দেব। এবারে পরীক্ষা নিয়ে আমি আশাবাদী।"
আরও পড়ুন - রাজীব হত্যাকারীদের মুক্তি দিতে রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানাবে তামিলনাড়ু সরকার
শরণের বড় ছেলে শিবানন্দ বলেন, "বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। হায়দরাবাদ মুভমেন্টে ওঁনার অবদান অনস্বীকার্য। উনি শৃঙ্খলাপরায়ণ মানুষ। ভোর তিনটের সময় ঘুম থেকে ওঠেন। প্রার্থনা করেন। এরপর খবরের কাগজ পড়েন। এরপরই পড়তে বসে যান। ঘুমিয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত পড়তে ভালোবাসেন। স্বাধীনতা সংগ্রামী ও শিক্ষকতার জন্য দু'ক্ষেত্রেই পেনশন পান বাবা। একটা টাকাও নিজের কাছে রাখেন না। সব দিয়ে দেন সমাজসেবায়।" পিএইচডি এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করলে কী করবেন? উত্তরে শরন বলেন, "বচন সাহিত্য নিয়ে পড়ব। এটা কন্নড় সাহিত্যের একটা অংশ। পাশ করলেই আগে আমি একটা গাইড খুঁজব। তাঁর সাহায্যেই এগিয়ে যাব।"