২০২৩ সালেই ১০ বিধানসভা নির্বাচন, লোকসভার আগে শেষ অ্যাসিড টেস্ট

যদিও বিজেপি বেশিরভাগ রাজ্যে তার দখল পুনরুদ্ধার করতে চাইবে কিন্তু অন্যদিকে এটি কংগ্রেসের জন্য টিকে থাকার লড়াই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে, তারা এখন রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং হিমাচল প্রদেশ এই তিনটি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। এই তিনটির মধ্যে দুটি রাজ্যে ২০২৩ সালে নির্বাচন হবে।

Updated By: Dec 15, 2022, 04:48 PM IST
২০২৩ সালেই ১০ বিধানসভা নির্বাচন, লোকসভার আগে শেষ অ্যাসিড টেস্ট

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে ২০২২ সালে। ২০২৩ সালের বিভিন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা। এই নির্বাচনগুলিই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের মঞ্চ তৈরি করবে। ২০২৩ সালে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে হবে নির্বাচন। উত্তর পুর্বে ত্রিপুরা, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড এবং মিজোরামে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্র সরকার জম্মু এবং কাশ্মীরে নির্বাচন ঘোষণার বিষয়েও বিবেচনা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পরে এই অঞ্চলে এটাই প্রথম নির্বাচন হবে।

যদিও বিজেপি বেশিরভাগ রাজ্যে তার দখল পুনরুদ্ধার করতে চাইবে কিন্তু অন্যদিকে এটি কংগ্রেসের জন্য টিকে থাকার লড়াই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে, তারা এখন রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং হিমাচল প্রদেশ এই তিনটি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। এই তিনটির মধ্যে দুটি রাজ্যে ২০২৩ সালে নির্বাচন হবে।

রাজস্থান

২০১৮ সালের ডিসেম্বরের বিধানসভা নির্বাচনে, কংগ্রেস বসুন্ধরা রাজের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়। ২০০ আসনের বিধানসভায় ১০০টি আসন নিয়ে একক বৃহত্তম দল হয় তারা। সংখ্যাগরিষ্ঠতার তুলনায় মাত্র এক আসন কম পায় তারা। অন্যদিকে, বিজেপি আগের নির্বাচনের তুলনায় অনেক খারাপ ফল করে। সেই নির্বাচনে তারা মাত্র ৭৩টি আসন পায়। ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তারা ১৬৩টি আসন জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

২০২৩ সালে, রাজস্থানে বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে সরাসরি লড়াই হবে। কংগ্রেস তার টিকে থাকার জন্য কঠিন লড়াই করতে চাইবে। অশোক গেহলোত এবং শচীন পাইলটের মধ্যে দুরত্ব একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

ছত্তিসগড়

২০১৮ সালের ছত্তিশগড় বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জয় পেয়েছে, ৯০ সদস্যের বিধানসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপির ১৫ আসনের সামনে ৬৮ আসন জিতেছে। রাজ্যের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা রমন সিংকে সিংহাসনচ্যুত করে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি। নির্বাচনের ফলাফল এক্সিট পোল থেকে পাওয়া লড়াইয়ের সম্পূর্ণ বিপরিত ছবি তুলে ধরে।

ছত্তিশগড়ে জেতা যেমন কংগ্রেসের জন্য ইতিবাচক ছিল সেইরকম এই রাজ্যে ক্ষমতা হারানো বিজেপির জন্য একটা ধাক্কা ছিল। ছত্তিশগড় গঠিত হওয়ার পর থেকে কংগ্রেস কখনোই কোনও নির্বাচনে জয়লাভ করেনি। অজিত যোগীকে তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন যখন রাজ্যটি ১ নভেম্বর, ২০০০ সালে গঠিত হয়েছিল।

প্রথম নির্বাচন ২০০৩ সালে এখানে প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে বিজেপি যেতে এবং তারপর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে জিতেছিল তারা। রমন সিং ১৫ বছর ধরে একটানা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিজেপি-র দুর্গ ধরে রেখেছিলেন।

মধ্যপ্রদেশ

মধ্যপ্রদেশে এমন একটি প্রতিযোগিতা হবে যার জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং বিশ্লেষক অপেক্ষা করে থাকবেন। ২০১৮ সালের শেষ নির্বাচনের ফলাফলে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হয়। যদিও কংগ্রেস একক বৃহত্তম দল ছিল। কংগ্রেস ২৩০ সদস্যের বিধানসভায় ১১৪টি আসন যেতে। সমাজবাদী পার্টির একজন বিধায়ক, বহুজন সমাজ পার্টির দুই জন বিধায়ক এবং চার জন নির্দল বিধায়কের সমর্থনে সরকার গঠন করে তারা। কমলনাথ ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন।

যদিও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার অনুগত কংগ্রেসের ২২ জন বিধায়ক সিন্ধিয়ার সঙ্গেই দল থেকে পদত্যাগ করেন এবং বিজেপিতে যোগ দেন। এটি ২০২০ সালে মধ্যপ্রদেশকে একটি রাজনৈতিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেয়। বিজেপির শিবরাজ সিং চৌহান ২৩ মার্চ, ২০২০ সালে আবার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ফিরে আসেন।

বিজেপি ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস থেকে আসা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দলত্যাগের ফলে পাওয়া লাভ ধরে রাখার চেষ্টা করবে এবং রাজ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জয়লাভ করতে চাইবে।

আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: কুকুরের লেজ-কান কাটলেন মদ্যপ, নুন মাখিয়ে 'স্ন্যাকস' বানিয়ে খেলেন সেই মাংস!

কর্ণাটক

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর এটি আরেকটি ত্রিশঙ্কু বিধানসভা ছিল কর্ণাটক। এই নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিএস ইয়েদিউরাপ্পা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে না পাড়ায় তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।

কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট এইচডি কুমারস্বামিকে মুখ্যমন্ত্রী করে মন্ত্রিসভা গঠন করে। যদিও ১৪ মাস পরে, ক্ষমতাসীন জোটের ১৬ জন বিধায়ক দুই দিনের মধ্যে পদত্যাগ করেন এবং দুই নির্দল বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থন দেন।

জোট ২২৪ আসনের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় এবং বিরোধী বিজেপি-র কাছে এখন ১০৭ সদস্য রয়েছে। তিন সপ্তাহের অশান্তির পরে, ২৩ জুলাই, ২০১৯ সালে আস্থা ভোট হারার পর এইচডি কুমারস্বামি পদত্যাগ করেন। ২৬ জুলাই, ২০১৯ সালে, ইয়েদিউরাপ্পা ফের কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। যদিও বিজেপিতে অভ্যন্তরীণ পালাবদলের কারণে বাসভরাজ বোম্মাই ২৭ জুলাই, ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন: বিয়ের মণ্ডপে চুমু নয়, বর-বউয়ের তুমুল চুলোচুলি! ভাইরাল ভিডিয়ো

তেলেঙ্গানা

২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর বিজয়ী হন। ১১৯টি আসনের মধ্যে ৮৮টি জিতেছেন কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। অন্ধ্র প্রদেশ থেকে তেলেঙ্গানা তৈরি হওয়ার পর থেকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন তিনি। তার তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি বা টিআরএস (বর্তমানে ভারত রাষ্ট্র সমিতি, বা বিআরএস বলা হয়) ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে পারে। এর পাশাপাশি কেসিআর রাজ্য এবং কেন্দ্র স্তরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির বিরুদ্ধে অবাধ প্রচারে রয়েছেন।

অন্যদিকে গেরুয়া শিবির তেলেঙ্গানায় নিজেদের জমি শক্ত করার মাধ্যমে দক্ষিণের অন্য রাজ্যে ক্ষমতা লাভের চেষ্টা করতে পারে।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

 

.