Amazing story: মৃত্যুর পর ঠিক কী ঘটে! হাড়হিম অভিজ্ঞতা এই প্রথম প্রকাশ্যে...
Amazing story: মানুষ হতে চায় অবিনশ্বর এক প্রাণী, কিন্তু জাগতিক নিয়মে প্রাণের বিনাশ হবেই! এই নিয়ম পাল্টে ফেলার ক্ষমতা কারও নেই। কিন্তু পরপারের জগৎ আর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মানুষের আকর্ষন এখন উত্তর খোঁজার জন্য গবেষণা শুরু করেছে।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মৃত্যু কী? মৃত্য়ুর সময় মানুষের ভিতরে কী চলে? এই নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্নের শেষ নেই, কিন্তু চিরকালীন কিছু উত্তর অধরাই থেকে যায়। মানুষ হতে চায় অবিনশ্বর এক প্রাণী, কিন্তু জাগতিক নিয়মে প্রাণের বিনাশ হবেই! এই নিয়ম পাল্টে ফেলার ক্ষমতা কারও নেই। কিন্তু পরপারের জগৎ আর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মানুষের আকর্ষন এখন উত্তর খোঁজার জন্য গবেষণা শুরু করেছে।
মৃত্যু আপনাকে জীবনের মুখোমুখি দাঁড় করায়। এমন এক সত্য়ির সামনে নিয়ে আসে যা হয়তো জীবিত থাকাকালীন আপনি এড়িয়ে গেছেন। আপনার প্রতিবিম্ব হয়ে ওঠে আপনারই ভিতরে থাকা আরেক স্বরূপ। জীবনের সবচেয়ে বড় পিছুটান হল মানুষের জীবদ্দশায় গড়ে ওঠা তাঁদের সম্পর্কগুলো। আর সেই পিছুটানই মানুষকে বেঁচে থাকার রসদ জোগায়।
মার্কিন এক চিকিৎসক ক্রিস্টোফার কের, উনি ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছিলেন। যা তাঁর কর্মজীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ড. ক্রিস্টোফারের একজন রোগী ছিল যার নাম ছিল মেরি। একদিন তিনি দেখেন মেরি হাসপাতালের বিছানায় অসুস্থ অবস্থায় শুয়ে আছেন এবং তাঁকে ঘিরে আছে তাঁর চারজন সন্তান। যারা প্রত্যেকেই তখন প্রাপ্তবয়স্ক। মেরি তাঁর জীবনের অন্তিম পর্বে পৌঁছে যাওয়ার সময়ে অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করেন।
ড. ক্রিস্টোফার দেখতে পেয়েছিলেন ৭০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধা তখন বিছানায় উঠে বসেছেন এবং তিনি এমনভাবে নিজের হাত নাড়াচ্ছেন যেন তিনি একটি শিশুকে বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে আছেন। কিন্তু ক্রিস্টোফার ওখানে কাউকে দেখতে পাননি। ওই বৃদ্ধা ওই মুহূর্তে ড্যানি নাম ধরে ডাকাডাকিও করেন, তাঁর সন্তানরা সেই সময় উপস্থিত থাকলেও এইরকম আচরণের কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি, কারণ তাঁরা জানিয়েছিলেন যে ওনারা ড্যানি নামের কাউকে চেনেন না।
পরবর্তী দিন মেরির বোন ওনাকে দেখতে হাসপাতালে আসেন এবং তিনি জানান যে মেরি তাঁর প্রথম জীবনে ড্যানি নামে একটি মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। সেই সন্তান মৃত্যুর বেদনা এতটাই ক্ষতবিক্ষত করেছিল তাঁর হৃদয়কে যে মেরি তাঁর হারানো সন্তানের কথা আর কখনও কারোর সামনে আনেননি।
ক্রিস্টোফার কের ছিলেন আসলেই একজন চিকিৎসক। কিন্তু পরে তিনি তার প্রচলিত চিকিৎসাবিদ্যা থেকে সরে এসে, মৃত্যুর সময় মানুষ কেমন অভিজ্ঞতার অর্জন করেন সেই বিষয়ে গবেষণার সিদ্ধান্ত নেন। মৃত্যুর সময়কালে মানুষদের স্বপ্ন এবং তারা জীবনের শেষ সময়ে কী দেখেন সেই সংক্রান্ত গবেষণায় বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একজন হয়ে উঠেছেন।
ক্রিস্টোফার কের-এর বই, 'ডেথ ইজ বাট এ ড্রিম: ফাইন্ডিং হোপ অ্যান্ড মিনিং অ্যাট লাইফস এন্ড' এই বইটি ২০২০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং বইটি ১০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এত বছর ধরে, উনি এই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে কী জানতে পেরেছেন সেগুলোই নথিভুক্ত করেছেন বইয়ে। মৃত্যুর সময় আমরা মানুষের যে শারীরিক ক্ষয় হতে দেখি, আমরা মনে করি মৃত্যু তাঁর চেয়েও বেশি কিছু। মৃত্যুর সময় মানুষের ধারণার জায়গাটা বদলে যায়, উপলব্ধির জায়গায় পরিবর্তন আসে এবং এমন কিছু উপাদান যুক্ত হয় যা জীবনকে অন্য প্রেক্ষাপটে ভাবতে বাধ্য করে। আমরা যেটা মনে করি, মানুষ যখন শেষ মুহূর্তের মুখোমুখি হয় তখন তারা এক মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যায়। আমরা প্রায়শই সেটা দেখতে পাই না। এই গবেষণা অনুযায়ী, জীবনের শেষ মুহূর্তের অভিজ্ঞতা সবার সাথেই একেকরকম ঘটে? এই গবেষণায়, প্রায় ৮৮ শতাংশ মানুষ অন্তত একবার হলেও এমন অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার কথা নথিভুক্ত করেছেন। ওনার মতে এই হার আরও বেশি। কারণ আমরা আমাদের গবেষণায় প্রতিদিন এই মানুষদের তাদের অভিজ্ঞতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করি। এর হয়তো ২০ শতাংশ নথিভুক্ত করা হয়। মৃত্যু একটি প্রক্রিয়া। যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)