চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ব্যবহার করুন কলা!
চুলের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তার সৌন্দর্য বাড়িয়ে নিন একেবারে ঘরোয়া উপায়ে, সামান্য খরচে।
বিশ্বজুড়ে সহজলভ্য একটি ফল হল কলা। সারাবছরই পাওয়া যায় এই ফলটি। জানেন কি, চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্যেও কলা খুবই উপকারি। শুধুমাত্র কলা বা কলার সঙ্গে অন্য কোনও উপাদানের মিশ্রণ চুলের খুশকি দূর করে। পাশাপাশি চুলের রুক্ষতা ও চুল ঝরা নিয়ন্ত্রণেও কলা অত্যন্ত কার্যকরী। কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম, প্রাকৃতিক তেল ও ভিটামিন, যা চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করে তোলে। এ বার জেনে নেওয়া যাক চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য কলার নানান ব্যবহার।
(১) কলা, পাতিলেবু ও টকদই:
চুলের খুশকি দূর করতে অর্ধেক পাকা কলার সঙ্গে তিন চামচ টক দই ও এক চামচ পাতিলেবুর রস মেশিয়ে চটকে নিন। মিশ্রণটি শুধুমাত্র চুলের গোড়া ও মাথার তালুর ত্বকে ভাল করে লাগান। খেয়াল রাখতে হবে, এই মিশ্রণটি যাতে কোনও ভাবেই মাথার বাকি চুলে না লাগে। ২০-২৫ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। পাতিলেবু আর টকদই চুলকে খুসকিমুক্ত করতে সাহায্য করে। এই মসৃণ করতে কলার ব্যবহার আসলে কন্ডিশনারের কাজ করে।
(২) কলা, ডিম ও লেবুর রস:
চুলের বৃদ্ধি এবং নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে এই মিশ্রণ খুবই কার্যকরী। সপ্তাহে অন্তত দুদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করা যেতে পারে। দুটি চটকে নেয়া কলা, একটি ডিমের শুধু কুসুমের অংশটুকু ও এক চামচ লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে এই মিশ্রণটি তৈরি করে নিন। এই মিশ্রণটি ভাল করে মাথার ত্বকে ও চুলে মাখিয়ে একটি প্লাস্টিক বা ফয়েল জাতীয় কিছু দিয়ে মাথা মুড়ে ফেলুন। এর ওপরে একটি তোয়ালে বা কাপড় জড়িয়ে নিন। এ ভাবে এক ঘণ্টা রাখার পর ভালো করে জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
(৩) কলা ও নারকেলের দুধ:
পাকা কলার সঙ্গে নারকেল দুধ ভাল করে মেখে এই মিশ্রণটি তৈরি করুন। সময় নিয়ে ভাল করে চুলে এই মিশ্রণটি মাখিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। এই মিশ্রণটির ব্যবহারে রুক্ষ চুলে ময়েশ্চারাইজার ফিরে আসে এবং চুলকে মোলায়েম, ফরফুরে করে তোলে। এই মিশ্রণের সঙ্গে কফির গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে চুলের মধ্যে একটা প্রাকৃতিক বাদামি (ব্রাউন) রং আসবে।
(৪) কলা ও মধুর মিশ্রণ:
চুল যাঁদের রুক্ষ হয়ে গিয়েছে, তাঁরা কলা এবং মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। এর ব্যবহারে চুলের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে আর সেই সঙ্গে চুল হয়ে উঠবে মোলায়ম। দুটি পাকা কলা এবং দুই চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে ভাল করে চটকে নিন। এ বার এই মিশ্রণটি চুলে ভাল ভাবে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ বা ওই জাতীয় কিছু দিয়ে মাথা ঘণ্টাখানেক ঢেকে রাখার পর ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে মোটামুটি দু’বার এই মিশ্রণ ব্যবহার করলেই চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে আর উজ্জ্বল।
(৫) কলা আর অলিভ অয়েল:
চুলে অতিরিক্ত রং বা কেমিক্যাল ব্যবহারের ফলে যাঁদের চুল ভঙ্গুর হয়ে গিয়েছে বা চুল ঝরার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে তাঁদের জন্য এই মিশ্রণটি অত্যন্ত কার্যকরী। এই মিশ্রণ ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হয়। একই সঙ্গে চুল হয়ে উঠবে মোলায়েম, ফরফুরে। একটি পাকা কলা এবং দুই চামচ অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে ভাল করে চটকে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি চুলে ভাল ভাবে মাখিয়ে শাওয়ার ক্যাপ বা ওই জাতীয় কিছু দিয়ে মাথা মিনিট কুড়ি ঢেকে রাখুন। এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ভাল করে ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। তবে এ ক্ষেত্রে অলিভ অয়েলের বদলে নারকেল তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে।
তাহলে, শরীরের সঙ্গে সঙ্গে চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য কলার নানা ব্যবহার আমরা জানলাম। এ বার চুলের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তার সৌন্দর্য বাড়িয়ে নিন একেবারে ঘরোয়া উপায়ে, সামান্য খরচে।