Maha Shivratri: জানেন, শিব সব চেয়ে খুশি হন কোন বিশেষ স্তোত্রে?
চিত্ররথ একদিন রাত্রে তাঁর বাগানে শিবের নির্মাল্য ছড়িয়ে রাখলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: স্তোত্রটির নাম 'শিবমহিম্ন স্তোত্র'। এটি রচনা করেছিলেন পুষ্পদন্ত।
পুরাকালে চিত্ররথ নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি একটি সুন্দর বাগান তৈরি করেছিলেন। সেই বাগান থেকে ফুল তুলে তিনি নিত্য তাঁর আরাধ্য দেবতা শিবের পুজো করতেন। এদিকে এক গন্ধর্ব ছিলেন যাঁর নাম পুষ্পদন্ত। তিনি সঙ্গীতে অতীব পারদর্শী ছিলেন। ছিলেন ইন্দ্রের সভার শ্রেষ্ঠ গায়কও। ঘটনাচক্রে তিনিও শিবের ভক্ত ছিলেন।
একদিন এই পুষ্পদন্ত রাজা চিত্ররথের বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। যেতে যেতে তিনি সেই কাননের ফুলসম্ভারে বিমুগ্ধ হন। দ্রুত সেখান থেকে ফুল তুলে নিয়ে তিনি তাঁর আরাধ্য দেবতা শিবের পূজা করেন। এদিকে রাজা চিত্ররথ পরে বাগানে এসে একটিও ফুল না পেয়ে সেদিন ফুলহীন পূজাই সারেন। এবং এর পর থেকে রোজই এরকম হতে থাকল। রাজা ফুল-চোরকে ধরার অনেক চেষ্টা করলেন। কিন্তু ব্যর্থ হলেন। কেননা, গন্ধর্বরা মায়াবী হন, তাঁরা তাঁদের দেহ অদৃশ্য রেখেই কাজকর্ম সারতে পারেন।
চিত্ররথ একদিন এক পরিকল্পনা করলেন। তিনি রাত্রে তাঁর বাগানে শিবের নির্মাল্য ছড়িয়ে রাখলেন। স্ববভাবতই যে নির্মাল্যে বেলপাতাও ছিল। পরদিন যথারীতি পুষ্পদন্ত ফুল চুরি করতে এসে অজান্তেই শিবনির্মাল্যের সেই বেলপাতায় পা দিয়ে ফেললেন। সঙ্গে সঙ্গে শিব রুষ্ট হলেন, এবং পুষ্পদন্তের অলৌকিক ক্ষমতা হরণ করলেন। এদিকে তাঁর ভুল বুঝতে পেরে পুষ্পদন্ত শিবের স্তুতি শুরু করলেন। সে এক অপূর্ব অলৌকিক স্তুতি। এই স্তুতিই শিব মহিম্ন স্তোত্র হিসেবে জগতে বিখ্যাত।
স্তুতিমন্ত্রটি শুরু হচ্ছে এই ভাবে--- মহিম্নঃ পারং তে পরমবিদুষো যদ্যসদৃশী/ স্তুতির্ব্রহ্মাদীনামপি তদবসন্নাস্ত্বযি গিরঃ/ অথাঽবাচ্যঃ সর্বঃ স্বমতিপরিণামাবধি গৃণন্/ মমাপ্যেষ স্তোত্রে হর নিরপবাদঃ পরিকরঃ; পুষ্পদন্ত বলছেন-- হে ভগবান শিব, আপনি সমস্ত দুঃখ হরণ করুন। ব্রহ্ম বা অন্য দেবতাদের স্তুতি দিয়েও আপনাকে ব্যাখ্যা করা যায় না। ফলে, যে আপনার গুণবর্ণনা করতে চায় তাঁর বাক্যে অনেক খামতি থাকে। আপনি নিজগুণে ও করুণায় সেই খামতি পুষিয়ে দিন, এই প্রার্থনা দিয়ে আমি শুরু করছি।
তারপর পুষ্পদন্ত তাঁর স্তুতি বর্ণনা করতে থাকেন। আর তা শুনে পরমেশ্বর মুগ্ধ হতে থাকেন। স্তুতি সমাপ্ত হলে তিনি হৃষ্টমনে পুস্পদন্তের হারিয়ে যাওয়া ক্ষমতা ফিরিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, তিনি পুষ্পদন্তকে বলেন--এই স্তব বা স্তোত্র আমার মহিমা স্তব বা মহিম্ন স্তোত্র নামে খ্যাত হবে। যে বা যারা শ্রদ্ধাভরে এই স্তব পাঠ করবে তাদের উপর আমার অশেষ আশিস বর্ষিত হবে। পরলোকে সে শিবলোক প্রাপ্ত হবে।
বলা হয়, শিবের যে কোনও পূজা আরাধনার ক্ষেত্রেই এই স্তোত্রের গভীর মূল্য আছে।
আরও পড়ুন: Maha Shivratri: কোন মন্ত্রে করবেন শিবপূজা? জেনে নিন শিবপূজার বিধি