ভারতের ৭৯% শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করছেন স্মার্টফোনে, ৫৯% ক্লাস হয় WhatsApp, Zoom-এ!
দেশের কত শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুবিধা নিতে পারছেন? কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে তাঁদের? জেনে নিন কী বলছে সমীক্ষা...
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিগত প্রায় ৭-৮ মাস ধরে করোনা আতঙ্কের জেরে স্কুল, কলেজ-সহ সরকারি-বেসরকারি প্রায় সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাই বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলি বন্ধ থাকলেও অনলাইন ক্লাসের সাহায্যে পঠন-পাঠন চালু রাখা হয়েছে প্রায় সর্বত্র। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলি পঠন-পাঠন চালিয়ে যাচ্ছে অনলাইন ক্লাসের সাহায্যে।
কিন্তু ভারতের শিক্ষার্থীদের কাছে কী স্মার্টফোন, ইন্টারনেট সংযোগ, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার রয়েছে? দেশের কত শতাংশ শিক্ষার্থী এই অনলাইন ক্লাসের সুবিধা নিতে পারছেন আর কারা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন? সম্প্রতি এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একটি সমীক্ষা চালায় NSDL e-Governance দ্বারা পরিচালিত দেশের অন্যতম একটি স্কলারশীপ ম্যানেজমেন্ট পোর্টাল Vidyasaarathi। এই সমীক্ষার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়া লকডাউন লার্নিং’। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী কী তথ্য সামনে এসেছে এই সমীক্ষায়...
এই সমীক্ষায় দেশের ৪০০টি শহর জুড়ে ১০,০০০ এরও বেশি শিক্ষার্থীদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কী ভাবে শিক্ষার্থীরা ই-লার্নিং ব্যবস্থার সাথে মানিয়ে নিচ্ছেন এবং এই পরিবর্তনের রাস্তায় তাঁরা যে সকল বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা জানতে এই সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়েছে। এই ‘নিউ নর্মাল’-এর ভাল ও মন্দ— দুই দিকই সামগ্রিক ভাবে বিবেচনা করার জন্য সমীক্ষাটিতে প্রয়োজনীয় তথ্য সর্বাত্মক ভাবে সংগৃহিত হয়েছে।
এই সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৫৯ শতাংশ শিক্ষার্থীদের কাছে অনলাইন ক্লাসের জন্য পছন্দের মাধ্যম হয়ে উঠেছে হোয়াটসঅ্যাপ এবং জুম কল। তবে এখনও ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে তাঁদের স্কুলের বা কলেজের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন।
সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ‘নিউ নর্মাল’-এর অঙ্গ হিসাবে অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী মানিয়ে নিলেও এখনও ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের চেয়ে স্কুল, কলেজের শ্রেণিকক্ষ বসে পঠন-পাঠনকেই বেশি পছন্দ করেন। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থীরা ই-লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে তাঁদের বৃহত্তম বাধা হিসাবে দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগকে দায়ী করেছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন অনলাইন ক্লাসে মনযোগ দেওয়া কঠিন এবং ১২ শতাংশ শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পড়াশোনার সময় প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট ভাবে পেতে বা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দুপুরে কাজের ফাঁকে ছোট্ট ‘পাওয়ার ন্যাপ’ বাড়ায় কর্মদক্ষতা, স্মৃতিশক্তি!
এই সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৬০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী ই-লার্নিংয়ের জন্য প্রায় ১-৪ ঘন্টা ব্যয় করে। ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী ব্যয় করেন ৪-৮ ঘন্টা এবং ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ৮-১২ ঘন্টা অনলাইনে পড়াশোনার জন্য ব্যয় করে। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বয়স ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ৬২ শতাংশ পুরুষ ছিলেন। উত্তরদাতারা আন্ডারগ্রাজুয়েট এবং স্নাতকোত্তর কোর্সে করছেন। তাঁরা মধ্যবিত্ত পরিবারের এবং এদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীর পরিবারের বার্ষিক আয় ৭ লক্ষের কম।