যাঁদের মাথায় চুল কম বা টাক, তাঁদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি! জানুন কী বলছেন গবেষকরা
সম্প্রতি ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ডারামাটোলজি’ নামের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছেন একদল গবেষক।
নিজস্ব প্রতিবেদন: চুল ঝরে যাওয়া বা টাক পড়ে যাওয়া আমাদের সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যা। প্রায় সব বয়সের মানুষের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে এ নিয়ে বেশি চিন্তায় পড়েছেন অল্প বয়সীরা। কিন্তু মাথায় চুল কম থাকাটা এখন যে কোনও বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ, যাঁদের মাথায় চুল কম বা টাক, তাঁদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি! অন্তত এমনটাই দাবি করেছেন একদল গবেষক।
সম্প্রতি একদল মার্কিন গবেষক জানিয়েছেন, যাঁদের মাথায় চুল কম, তাঁদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি! এই নতুন করোনা আশঙ্কার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্যাব্রিন সাইন’ (Gabrin sign)। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে এক মার্কিন চিকিৎসক ডঃ ফ্র্যাঙ্ক গ্যাব্রিনের (Dr Frank Gabrin) মৃত্যুর পরেই এই নতুন করোনা আশঙ্কার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্যাব্রিন সাইন’। বলা বাহুল্য, গ্যাব্রিনের মাথাতেও চুল কম ছিলা বা টাক ছিল।
আমেরিকার ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্লোস ওয়াম্বিয়ার জানান, মাথায় চুল কম থাকলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ও তার প্রভাব অনেকটাই বেশি হয়। করোনায় এর আগেই দেখা গিয়েছে, ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় মহিলাদের তুলনায় পুরুষের সংখ্যাই বেশি।
কিন্তু কেন পুরুষরাই করোনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন?
এ পর্যন্ত একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মূলত পুরুষের সঙ্গে মহিলাদের জীবনযাত্রা ও প্রতিরোধ ক্ষমতার পার্থক্যই এর জন্য দায়ি। এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হল এই ‘গ্যাব্রিন সাইন’।
সম্প্রতি ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ডারামাটোলজি’ (American Academy of Dermatology) নামের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে অধ্যাপক ওয়াম্বিয়ার জানান, স্পেনের মাদ্রিদের তিনটি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ১২২ জন রোগীর মধ্যে ৭৯ শতাংশ পুরুষের মাথাতেই চুল নেই বা খুব কম রয়েছে। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, যাঁদের চুল কম, তাঁদের শরীরেই ভাইরাসের সংক্রমণ অন্যান্য রোগীদের তুলনায় অনেক বেশি দেখা গিয়েছে। মার্কিন গবেষকরা জানান, পুরুষদের চুল ঝরে পড়ার ক্ষেত্রে তাদের শরীর থেকে নিঃসৃত এন্ড্রোজেন (androgens) হরমোনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাঁদের দাবি, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গতিও বাড়িয়ে দেয় এই এন্ড্রোজেন হরমোন।
আরও পড়ুন: শুরু হল অক্সফোর্ডের করোনার টিকার উৎপাদন! সেপ্টেম্বরে মধ্যেই মিলতে পারে ২০০ কোটি ডোজ
কতটা নির্ভরযোগ্য এই তত্ত্ব?
তবে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তত্ত্ব মেনে নিতে নারাজ একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের মতে এই সমীক্ষার রিপোর্ট অসম্পূর্ণ। কারণ, এই রিপোর্টে রোগীদের বয়সের কোনও উল্লেখ নেই। তার উপর ৫০ থেকে ৭০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে করোনার ঝুঁকি এমনিতেই বেশি। তাই এ ক্ষেত্রে ঠিক কোন বয়সের আক্রান্তদের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তাছাড়া, এন্ড্রোজেন হরমোন যে করোনা সংক্রমণের গতি বাড়িয়ে দেয়, তার কোনও সরাসরি তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেননি ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাই তাঁদের তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়।