Ghost Detector Device: আপনি কি ভূতে ভয় পান? আর চিন্তা নেই, হাতের কাছেই এবার ভূত ধরার যন্ত্র...
Ghost Detector Device: ভূতুড়ে কোনও পরিবেশে কিছু একটা আছে ধরে নিয়ে তাঁরা কাজ শুরু করেন। প্রথমে সেখানে 'যদি সত্যিই কিছু থেকে থাকে' তবে 'তার' সঙ্গে কমিউনিকেট করার চেষ্টা করেন। এজন্য কিছু ডিভাইস ব্যবহার করেন তাঁরা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভূতে কে না ভয় পায়? কিন্তু ভূত নিয়ে অনেকেরই ধারণা ঠিক নেই। অনেক সময়েই যে কোনও আবছা অস্পষ্ট বিষয়কেই অনেকে কিছু আনন্যাচারাল এগজিসটেন্স হিসেবে ধরে নেন। ভূত, আত্মা, স্পিরিট, ঘোস্ট, সুপারন্যাচারল এগজিস্টেন্স ইত্যাদি নিয়ে মানুষের বহুদিনের আগ্রহ। শুধু আগ্রহ নয়, সঙ্গে রয়েছে ভয়, আশঙ্কাও।
কিন্তু সেই আশঙ্কাকে মিথ্যা প্রমাণিত করতে বিজ্ঞানের সাহায্যে মানুষকে যুক্তিসিদ্ধ একটা প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন এ শহরের 'ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারাল' সংস্থা। 'ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারালে'র ফাউন্ডার প্রতিষ্ঠাতা দেবরাজ সান্যাল, তাঁর সঙ্গে আছেন 'ডিরেক্টর অফ ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারাল' ঈশিতা দাস সান্যাল। রয়েছেন 'ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারালে'র সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিজ্ঞানের অধ্যাপক শুভজ্যোতি রায়চৌধুরী, 'ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারালে'র টেকনিক্যাল হেড অনিন্দম ঘোষাল, লিড ফিল্ড ইনভেসটিগেটর ও চিকিৎসক উজ্জ্বল গুপ্ত এবং গবেষক ও ইনভেস্টিগেটর আয়ুষ মজুমদার।
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে 'ফাউন্ডার অফ ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারাল' দেবরাজ সান্যাল এবং 'ডিরেক্টর অফ ডিটেকটিভস অফ সুপারন্যাচারাল' ঈশিতা দাস সান্যাল বলছেন--জীবিত মানুষ যখন কোনো কিছু ভাবেন তখন তাঁর মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রন ও প্রোটনের দেওয়া-নেওয়া চলে। তিনি বেঁচে থাকাকালীন এটা সারাক্ষণ দারুণভাবে ঘটে। মৃত্যুর পরেও সেটা বন্ধ হয় না। থেকে যায়।
আরও পড়ুন: Vastu Tips for Money: আপনার এই কাজে রাগ করেন মা লক্ষ্মী, অভ্যাস বদলে ঘরে আনুন টাকার বৃষ্টি
থেকে তো গেল! কিন্তু সেটাকে বুঝতে হবে তো! কী ভাবে সম্ভব সেটা? এই ধরনের অশরীরী অস্তিত্ব যা মানুষ সহজে বুঝতে পারে না, তার একটা প্যারানর্ম্যাল অথবা সুপারন্যাচারাল তাৎপর্য আছেই। স্থির বিদ্যুৎশক্তি, উচ্চ তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্র, উচ্চ আলট্রাসাউন্ড, ইনফ্রাসাউন্ড অথবা বাতাসের আয়ন ইত্যাদি সামগ্রিক ভাবে একটা হ্যালুসিনেশনের আবহ তৈরি করে। হ্যালুসিনেশন হল-- হঠাৎ করে একটা ঘণ্টাধ্বনি শুনতে পাওয়া, কারও পদশব্দ শোনা, কারও অদেখা-উপস্থিতি অনুভব করা ইত্যাদি। কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়াতেও এরকম হ্যালুসিনেশনের আবহ তৈরি হতে পারে।
যখন এরকম পরিবেশ তৈরি হয় তখন কী করেন ভূতের গোয়েন্দারা?
দেবরাজ-ঈশিতা বলছেন, ভূতুড়ে কোনও পরিবেশে কিছু একটা আছে ধরে নিয়ে তাঁরা শুরু করেন তাঁদের প্যারানর্ম্যাল ইনভেস্টিগেশনের কাজ। সেখানে 'যদি সত্যিই কিছু থেকে থাকে' তবে প্রথমে 'তার' সঙ্গে কমিউনিকেট করার চেষ্টা করেন। এজন্য কিছু ডিভাইস ব্যবহার করেন তাঁরা। দেখে নেওয়া যাক ভূত ধরার যন্ত্র হিসেবে যাকে আমরা উল্লেখ করছি সেগুলি মোটামুটি কী কী:
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ডিটেক্টর-- সেই অশরীরী অস্তিত্বের জেরে সংশ্লিষ্ট জায়গাটির পরিবেশে কোনও বদল ঘটছে কিনা, বা ঘটলেও সেটা কী ধরনের বদল, তা ধরার চেষ্টা করা হয়। এজন্য এই ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ডিটেক্টর জরুরি। চাঁদের অবস্থান ও প্রকৃতি, সৌরঝড়, পৃথিবীর চুম্বকত্ব, যাকে ভূচৌম্বকত্ব বলে ইত্যাদির কারণে কোনও পরিবেশে এই ইলেকট্রোম্যাগনেটিজম তৈরি হয়।
সাউন্ড রেকর্ডার-- প্যারানর্ম্যাল ইনভেস্টিগেশনের সময়ে যে কোনও শব্দই খুব জরুরি। মানুষের কান শুনতে পারে না এমন ইনফ্রা বা আলট্রা সাউন্ড পর্যন্ত ধরা হয়।
মোশন সেনসর-- হন্টেড এরিয়ার যে কোনও বস্তুর নড়াচড়ার ঘটনা ধরার জন্য এই যন্ত্র। দেখা হয়, বস্তু স্বাভাবিক কারণে নিজে থেকে নড়ছে, নাকি অন্য কোনও 'তৃতীয় কারণ' আছে!
লেজার গ্রিড-- বলতে গেলে ছায়া ধরার যন্ত্র এটি। অনেকেই এই সব জায়গায় গিয়ে বলেন, তাঁরা নাকি ছায়া সরে যেতে দেখেছেন। ফলে লেজার গ্রিড ফিক্স করে সারাক্ষণ ভিডিয়ো তোলা হয়। দেখা হয়, সত্যিই কিছু আছে কিনা।
থার্মোমিটার-- পরিবেশের উষ্ণতা পরিমাপ করার জন্য এর প্রয়োজন। এলাকার কোল্ড অথবা হট স্পটগুলিকে 'লোকেট' করা হয়। অনেকেই বলেন, তাঁরা একটা ঠান্ডা কিছু অনুভব করছেন। তাই এই ব্যবস্থা।
পাউডার এক্সপেরিমেন্ট-- যেখানে ভূত-পরীক্ষার কাজ হয় সেখানে পাউডার ছড়িয়ে ঘণ্টাখানেক পরে দেখা হয় সেই ছড়ানো পাউডারের প্যাটার্নে কোনও বদল এসেছে কিনা। যদি কিছু হেঁটে যায়, তবে তার পায়ের ছাপ বা কোনও চিহ্ন তো থাকবে!
বেলুন এক্সপেরিমেন্ট-- হন্টেড হাউজে যদি প্রায় হাওয়া ঢোকে না এমন কোনো স্পেস পাওয়া যায়, তবে সেখানে বেলুন টাঙিয়ে দেওয়া হয়। বেলুন স্থির রয়েছে না নড়ছে সেটা দেখা হয়।
দেবরাজ-ঈশিতা জানাচ্ছেন, কোথাও কাজ করতে গেলে এগুলিই মোটামুটি নিত্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তাঁদের। বেসিক যন্ত্র। তবে কাজ করতে গিয়ে পরিস্থিতি বিচারে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করেন তাঁরা, মানে দরকার পড়লে অন্য যন্ত্রপাতিও আমদানি করেন। তার পর কাজ এগোন। এবং মিথ ও মিথ্যা ভেঙে ভূতকে টেনে বের করে সত্যের আলোর সামনে দাঁড় করাবার চেষ্টা করেন। তখন যদি ভূতের সাহস থাকে, তবে তিনি প্রকাশিত হয়, নচেৎ পালান।