'আসল পরিবর্তন' নয় দিদির প্রত্যাবর্তনের জনাদেশ বাংলার
তৃণমূলের এই জয়ের কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর
নিজস্ব প্রতিবেদন: অব কি বার দোশো পার! বিজেপির স্লোগান ফিরল ব্যুমেরাং হয়ে। হ্যাটট্রিক করলেন তৃণমূল নেত্রী। বাংলা আস্থা রাখল 'নিজের মেয়ে'র উপরেই। মোদী-অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ বিজেপির শীর্ষস্তরের প্রায় সব নেতানেত্রীদের লাগাতার হাইভোল্টেজ প্রচার, মাটি কামড়ে পড়ে থাকাও কাজে এল না এ যাত্রায়। কিন্তু কেন?
তৃণমূলের এই জয়ের কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর। এই ফল প্রমাণ করে দিল ‘বাংলার মেয়ের’ ওপরেই আস্থা বজায় রয়েছে বঙ্গবাসীর। সে কারণেই তৃণমূলকে এমন ঢেলে ভোট বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। উন্নয়ন নিয়েও বাংলার মানুষের রায় তৃণমূলের পক্ষে গেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভোটপর্বের আগেই চালু করা স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পের ফল ঘরে তুলল তৃণমূল। এছাড়াও সবুজসাথী, কন্যাশ্রী, করোনাকালে পড়ুয়াদের ট্যাব, কৃষকবন্ধু প্রকল্প সহ আরও একগুচ্ছ প্রকল্প জনতার মন জয়ের কারণ হয়ে উঠেছে। তৃণমূলের জয়ের অন্যতম কারিগর মহিলারাও। এবার রাজ্যজুড়ে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে বারবার ঝড় তোলেন মহিলা ভোটের লক্ষ্যে।
বহিরাগত ইস্যু। এবার ভোটে এটিও তৃণমূলের অন্যতম অস্ত্র। বিজেকে রুখতে যা বারবারই ব্যবহার করেছে ঘাসফুল শিবির। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ সহ নানা রাজ্য থেকে নেতা-মন্ত্রীদের এবার ভোটপ্রচারে নামায় বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ বিজেপির শীর্ষনেতারা রাজধানী থেকে বাংলায় ছুটে এসেছেন। তাঁদের বহিরাগত বলে বারবার নিশানা করেছে তৃণমূল। আমজনতার মধ্যেও এই বহিরাগত তত্ত্ব কাজ করেছে, যার প্রমাণ ভোটের ফলাফল।
এর বাইরেও এনআরসি, সিএএ নিয়ে আশঙ্কা-আতঙ্ক তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে, যার প্রভাব পড়েছে ভোটবাক্সে। রাজ্যে মোদী ম্যাজিক ফিকে করতে সফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মত পর্যবেক্ষদের। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে যে শক্ত জমি কিছুটা হলেও তৈরি করেছিল বিজেপি, তার ভিত নাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল। এ কাজে টিম পিকের সাফল্য অনেকটাই বলে মত পর্যবেক্ষক মহলের। একের পর এক জনসংযোগ কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে ব্লক নেতৃত্ব সকলেই পথে থেকেছেন। একেবারে তৃণমূল স্তরে পৌছে প্রচার চালিয়ে মানুষের আরও কাছাকাছি পৌছে যেতে পেরেছে ঘাসফুল শিবির, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
এই সব ফ্যাক্টরের সম্মিলিত ফলেই, এবার বাজিমাত তৃণমূলের। সোনার বাংলা গড়ার ডাক, বদলের আহ্বানকে অগ্রাহ্য করে তাই তৃণমূলেই আস্থা রাখল বাংলা। মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল। পরিবর্তন নয়, সিলমোহর পড়ল প্রত্যাবর্তনেই!
আরও পড়ুন- নন্দীগ্রামে ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ, পুনর্গণনা চেয়ে কমিশনে চিঠি TMC-র