এজেন্টদের বিরুদ্ধে সই জাল করার অভিযোগ তুললেন সুদীপ্ত

সারদা সাম্রাজ্য পতনের জন্য সংস্থার বেশকিছু এজেন্ট ও কর্মীদের দিকেই আঙুল তুলেছেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। সে তালিকায় উপরের দিকেই নাম রয়েছে বারুইপুরের এজেন্ট অরিন্দম দাস ওরফে বুম্বার। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বেতাজ বাদশা বুম্বা একসময়ে এলাকা থেকে মাসে বারো কোটি টাকার ব্যবসা দিলেও, পরের দিকে সুদীপ্ত সেনের সই জাল করে চালু করেন নকল পলিসি তৈরির কারবার।

Updated By: May 12, 2013, 09:15 PM IST

সারদা সাম্রাজ্য পতনের জন্য সংস্থার বেশকিছু এজেন্ট ও কর্মীদের দিকেই আঙুল তুলেছেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। সে তালিকায় উপরের দিকেই নাম রয়েছে বারুইপুরের এজেন্ট অরিন্দম দাস ওরফে বুম্বার। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বেতাজ বাদশা বুম্বা একসময়ে এলাকা থেকে মাসে বারো কোটি টাকার ব্যবসা দিলেও, পরের দিকে সুদীপ্ত সেনের সই জাল করে চালু করেন নকল পলিসি তৈরির কারবার।  
সারদা সাম্রাজ্যে বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুরের। শুধুমাত্র এই এলাকা থেকেই মাসে বারো কোটি টাকা জমা পড়ত সারদার কোষাগারে। বারুইপুরে সারদার বাড়বাড়ন্তের পিছনে ছিলেন অরিন্দম দাস ওরফে বুম্বা। পদাধিকারবলে কোম্পানির ডিভিশনাল ম্যানেজার হলেও,সারদায় অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন বুম্বা। জেলাতেও বেশ নামডাক ছিল। স্থানীয় ক্লাবের পুজো থেকে পাড়ার ফাংশন, যে কোনও অনুষ্ঠানে দু হাতে টাকা ঢালতেন বুম্বা। রেলের কর্মচারী সন্তোষ দাসের ছেলে অরিন্দমের উত্থানও তাঁর মালিক সুদীপ্ত সেনের মতোই চমকপ্রদ।
 
ফুলতলার বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা সন্তোষ দাসের দুই ছেলে অরিন্দম ও অনিরুদ্ধ ওরফে বুম্বা ও জুম্বা। পড়াশোনা শেষ করে বাইপাসের ধারে চামড়া কারখানায় কাজ শুরু একইসঙ্গে শুরু বারুইপুর এলাকায় জমির দালালির কাজ। জমির দালালি করতে গিয়ে পরিচয় উত্পল দাস ওরফে বাচ্চুর সঙ্গে। ২০০৫-০৬ বাচ্চুর হাত ধরেই সারদায় যোগ দেন বুম্বা। এইসময় শিল্পসাথী নামে নিজের একটি চিটফান্ড সংস্থা তৈরি করেন উত্পল। উত্পলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে সুদীপ্ত সেনের খুব কাছে চলে আসেন বুম্বা। কয়েকদিনের মধ্যেই বুম্বা সেন স্যারের ডান হাত হয়ে ওঠেন। বারুইপুরে এসডিও অফিসের নাকের ডগায় কুলপি রোডের ওপর ভাড়া বাড়িতে শুরু হয় সারদার অফিস।
এরপর থেকে প্রতিদিনই সারদার প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে বারুইপুরে।সেইসঙ্গেই রাতারাতি জীবনযাত্রার মান বদলে যায় বুম্বার।বিদেশে গাড়ি, দামী গ্যাজেট ব্যবহারের অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন।নামে বেনামে প্রচুর জমি কিনতে থাকেন বারুইপুর এলাকায়। বিশাল পরিমান টাকা লগ্নি করা হয় স্থানীয় নার্সিংহোম ও সিনেমা হলেও। সুদীপ্ত সেনের অত্যন্ত আস্থাভাজন বুম্বা ধীরে ধীরে তাঁরই পিঠে ছুরি মারেন। সেন স্যারের সই জাল করে শুরু হয় নকল পলিসি তৈরির কাজ।
নবগ্রামে ৩০ বিঘা জমি। রামনগরে ৩ বিঘা জমির ওপর বিশাল বাগানবাড়ি। ফুলতলায় দুটি অ্যাগ্রো ডিভিশন। একাধিক গাড়ি ও চারতলা বাড়ি। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন গা ঢাকা দেওয়ার পরও বারুইপুর এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় বুম্বাকে। এমনকি এপ্রিল মাসের বাইশ তারিখ বারুইপুর থানায় তাঁর নামে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরও এলাকায় ছিলেন বুম্বা। আমানতকারীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুবাদেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যাওয়ার পর শেষপর্যন্ত গা ঢাকা দিতে বাধ্য হন বুম্বা।
 
 

.