শাসক বিরোধী তরজার মাঝেই বনধে প্রায় জনশূন্য মহানগর
ব্যুরো: পুরভোটের যুদ্ধ মিটেছে দুদিন আগে। আজ ফের নয়া যুদ্ধের ময়দানে মুখোমুখি হল সরকার ও প্রধান দুই বিরোধী পক্ষ।বামফ্রন্ট, বিজেপির ডাকা ধর্মঘট ব্যর্থ করতে সরকার, প্রশাসন বা শাসকদলের দিক থেকে চেষ্টার কসুর ছিল না। কিন্তু, ভোটের মতো একতরফা রেজাল্ট হল না আজ। রাজধানী কলকাতা দিয়েই শুরু করা যাক। রাস্তায় গাড়িঘোড়া চলল ঠিকই কিন্তু লোক হল না।
বিরোধীদের ডাকা বনধ যে কোনও মূল্যে রুখতে হবে। কড়া ফরমান ছিল মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে বনধের সকাল থেকে সক্রিয় ছিল প্রশাসন। রাস্তায় নেমেছিল অতিরিক্ত সরকারি বাসও। চূড়ান্ত তত্পর ছিল পুলিস- প্রশাসনও। তারপরও অনেকটাই বনধের চেহারা নিল কলকাতার রাস্তাঘাট।
শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা চত্বরের ছবিটা ছিল বাকি পাঁচটা দিনের তুলনায় একেবারে আলাদা। সরকারি বাস চললেও, যাত্রীর দেখা মেলেনি। নিউমার্কেট থেকে মেট্রো গলি সর্বত্রই দোকান খোলা ছিল। ছিল না ক্রেতা।
বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে সল্টলেকের তথ্য প্রযুক্তি তালুকেও। কর্মীদের হাজিরা অন্যান্য দিনের তুলনার সামান্য কম। প্রায় শুনসান ছবি ধরা পড়েছে করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডে। বাস থাকলেও যাত্রীর দেখা মেলেনি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আদালতে হাজির ছিলেন সরকারি আইনজীবীরা। কিন্তু, গরহাজির অপরপক্ষ। ফলে আরও একটা কর্মনাশা দিনের সাক্ষী রইল কলকাতা হাইকোর্ট। সোয়া এগারোটায় এজলাস ছাড়েন প্রধান বিচারপতি।
শিয়রে সরকারি ফরমান, তাই বনধের তেমন প্রভাব পড়েনি নবান্নে। উল্টে সময়ে অফিস ঢুকতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় কর্মীদের মধ্যে। কলকাতায় সরকারি অফিসগুলিতে হাজিরা ছিল নব্বই শতাংশ, জেলায় হার ছিল ৯৬ শতাংশ।
হাওড়া স্টেশনে প্রিপেড ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের সামনে ছিল লম্বা লাইন। ট্যাক্সির দেখা মেলেনি। চরম সমস্যায় পড়েন দূরপাল্লার ট্রেনে হাওড়া এসে পৌছোন যাত্রীরা। ঘড়ি মেনে ফেরি চললেও, লোক ছিল না।
হাওড়ার কিছুটা উল্টো ছবি শিয়ালদায়। ট্যাক্সি কম থাকলেও, সরকারি বাস রয়েছে। আর রয়েছেন জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে মরিয়া তৃণমূল কর্মীসমর্থকরা।
বনধের ভালো প্রভাব চোখে পড়েছে দমদম বিমানবন্দর এলাকায়। সকাল থেকেই খোলেনি দোকানপাট। যানবাহনের সংখ্যাও কম ছিল। রাস্তায় লোকএ ছিল হাতে গোনা। দফায় দফায় মিছিল বার করে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা।
অন্যান্য দিনের মতোই ঘড়ির কাঁটা মেনে চলেছে কলকাতার লাইফলাইন মেট্রো। তবে, ভিড়ের চাপ ছিল অন্যান্যদিনের তুলনায় অনেকাই কম। লোক ছিল না মানিকতলা, লেক মার্কেটেও। ল্যান্সডাউন মার্কেটও ছিল শুনসান।