সিঙ্গাপুর সফরের হোমওয়ার্ক সেরে ফেললেন প্রতিনিধিরা
সিঙ্গাপুর সফরে মুখ্যমন্ত্রীর পাখির চোখ তথ্যপ্রযুক্তি। এই ক্ষেত্রে রাজ্যের বিপুল সম্ভাবনার দিকটা বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেজন্য ইতিমধ্যেই হোমওয়ার্ক সেরে ফেলেছেন রাজ্যের প্রতিনিধিরা।
পাঁচদিনের সফরে তথ্য প্রযুক্তির যাবতীয় খুঁটিনাটিঁ লগ্নিকারীদের সামনে শোকেস করবেন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রতিনিধি দল। ব্যাঙ্কিং, বায়োটেকনোলজির পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ টানতে তত্পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইলক্ষ্যে পাঁচদিনের সিঙ্গাপুর সফরে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছেন তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের একঝাঁক প্রতিনিধি। একনজরে দেখে নেওয়া যাক তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কোথায় বিনিয়োগ টানতে চায় রাজ্য
কোথায় বিনিয়োগ?
--------
আইটি পার্ক
ইএমসি বা ইলেট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার
হার্ডওয়ার পার্ক
লক্ষ্য ১
আইটি পার্ক
----------
রাজ্যে মোট ১৩টি আইটি পার্ক তৈরি করতে চাইছে রাজ্য সরকার।এরমধ্যে বারোটি তৈরির দায়িত্ব নিয়েছে ওয়েবেল। আটটি কাজও শুরু হয়ে গেছে।দু এক মাসের মধ্যেই বাকিগুলোর ছাড়পত্র দিয়ে দেবে সরকার। এগুলি ছাড়াও কৃষ্ণনগরে পিপিপি মডেলে আরও একটি আইটি পার্ক গড়ে তুলতে চায় রাজ্য। লগ্নিকারীদের কাছে আইটি পার্কের সম্ভাবনা তুলে ধরবে রাজ্য। আইটি পার্কগুলিতে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত যাবতীয় জিনিসপত্র মিলবে। থাকছে বিপিও-কেপিও-হার্ডওয়ার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা। দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য থাকবে ইনকিউবেশন সেন্টারও।
লক্ষ্য ২
ইএমসি
----------
তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের অন্যতম বড় জায়গা হতে পারে ইলেট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার বা ইএমসি।এরজন্য ইতিমধ্যেই নৈহাটিতে সত্তর একর ও ফলতায় ছাপান্ন একর জমি চিহ্নিত করেছে রাজ্য। দু হাজার পনেরোর মধ্যে দু জায়গাতেই পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ করে ফেলা যাবে বলে মনে করছে সরকার।
লক্ষ্য ৩
হার্ডওয়ার পার্ক
-------------
সোনারপুরে ১০ একর জমি রয়েছে। দু হাজার চোদ্দোর নভেম্বরের ওই জমি পার্ক তৈরির উপযোগী হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সরকার। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আরও তিন হাজার একর এমন জমি রয়েছে যেখানে হার্ডওয়ার পার্ক তৈরি করা যেতে পারে।কোনও শিল্পপতি চাইলে সেই জমি দিতে প্রস্তুত রাজ্য। শুধু জমি নয় তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ টানার উপযোগী পরিবেশও রয়েছে রাজ্যে। রয়েছে দক্ষ শ্রমিকও। বিনিয়োগকারীদের কাছে সেবিষয়টিও তুলে ধরবে রাজ্য সরকার।
কেন বিনিয়োগ?
১. প্রশিক্ষণরপ্রাপ্ত শ্রমিক
আমাদের রাজ্যেই রয়েছে আইআইটি খড়গপুর, শিবপুর, যাদপবুর, প্রেসিডেন্সি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রয়েছে আইআইএম জোকার মতো প্রথমসারি ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
২. অপেক্ষাকৃত কম পারিশ্রমিক
মুম্বই, হায়দরাবাদ, চেন্নাইয়ের তুলনায় এখানকার শ্রমিকদের পারিশ্রমিকের হার অনেক কম। ফলে লেবার ও নন লেবার চার্জও বাকি রাজ্যের তুলনায় সস্তা।
৩. কম চাকরি ছাড়ার প্রবণতা
CMIE -র পরিসংখ্যান অনুযায়ী এরাজ্যের শ্রমিকদের মধ্যে চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কম। যা শিল্পের ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
সবমিলিয়ে রীতিমতো হোমওয়ার্ক করেই তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে রাজ্যের বিপুল সম্ভাবনার কথা সিঙ্গাপুর সফরে তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার।