SSC Scam: এসএসসি দুর্নীতিতে গ্রেফতার পার্থ, নিয়োগে গোলমাল কোথায়?

আবেদনকারীরা প্রাথমিকভাবে আদালতে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ২৫ জনের একটি তালিকা জমা দেন। পরবর্তি সময় এই ধরনের আরও পাঁচশোর বেশি নিয়োগ হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট, ২০০২ (পিএমএলএ) এর অধীনে তদন্ত করছে। অশিক্ষক কর্মীদের (গ্রুপ সি এবং ডি) বেআইনি নিয়োগ, শিক্ষাকর্মী (একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির সহকারি শিক্ষক) নিয়োগে মামলায় মানি ট্রেইলের তদন্ত করছে তারা।

Updated By: Jul 23, 2022, 07:00 PM IST
SSC Scam: এসএসসি দুর্নীতিতে গ্রেফতার পার্থ, নিয়োগে গোলমাল কোথায়?
নিজস্ব চিত্র

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অবশেষে দু'দিনের ইডি হেফাজতে শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। টানা ২৭ ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। শেষপর্যন্ত শনিবার সকালে পার্থ চট্টোপাধ্যাকে (Partha Chatterjee) গ্রেফতার করল ইডি (ED)। জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি থাকায় আটক, খবর ইডি সূত্রে।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট, ২০০২ (পিএমএলএ) এর অধীনে তদন্ত করছে। অশিক্ষক কর্মীদের (গ্রুপ সি এবং ডি) বেআইনি নিয়োগ, শিক্ষাকর্মী (একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির সহকারি শিক্ষক) নিয়োগে মামলায় মানি ট্রেইলের তদন্ত করছে তারা।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু নথি। নাকতলার বাড়িতে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু কী এই এসএসসি দুর্নীতি?

গত বছরের নভেম্বরে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি একক বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (ডব্লিউবিবিএসই) অধীনে রাজ্য সরকার চালিত স্কুলগুলিতে গ্রুপ ডি কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দেয়।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি প্রার্থীদের একটি আবেদনের শুনানির সময় এই আদেশ দেন। তাঁরা দাবি করেন যে রাজ্য পরিচালিত স্কুলে গ্রুপ ডি কর্মীদের নিয়োগের জন্য গঠিত প্যানেল মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও নিয়োগ করে।

আবেদনকারীরা প্রাথমিকভাবে আদালতে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ২৫ জনের একটি তালিকা জমা দেন। পরবর্তি সময় এই ধরনের আরও পাঁচশোর বেশি নিয়োগ হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

WBBSE, আদালতে জমা দেওয়া এক হলফনামায় দাবি করে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (WBSSC) সুপারিশের ভিত্তিতে সব নিয়োগ করা হয়। অন্যদিকে কমিশন আদালতে একটি হলফনামা জমা দিয়ে বলে যে ৪ মে, ২০১৯-এর পরে তারা কোনও সুপারিশপত্র জারি করেনি। এর কারন গ্রুপ ডি কর্মীদের নিয়োগের প্যানেল মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল।

ফেব্রুয়ারিতে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি একক বেঞ্চ সিবিআইকে নিয়োগ কেলেঙ্কারির অভিযোগের তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। যদিও একই দিনে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশে দু'সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করেন।

এরপরে আবার ৩১শে মার্চ, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ সিবিআইকে মধ্যরাতের মধ্যে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেয়।

এর মাঝে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ভারতের প্রধান বিচারপতি এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে জানান যে তাঁর সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে বার বার ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিত করছে।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইকে ডাব্লুবিএসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা সহ অন্য চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদেরও নির্দেশ দেয়। সিনহা সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন এবং অন্যরা এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান।

যদিও, বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ "ব্যক্তিগত কারণে" বিষয়টির পরবর্তী শুনানি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন। পরবর্তীকালে, বিচারপতি টি এস শিবগ্নানাম এবং সব্যসাচী ভট্টাচার্যের একটি ডিভিশন বেঞ্চও সেই আপিলের শুনানি করতে অস্বীকার করে। পরবর্তীকালে এটি বিচারপতি সৌমেন সেন এবং এ কে মুখার্জির একটি ডিভিশন বেঞ্চের কাছে আসে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁরাও আপিলের শুনানি করতে অস্বীকার করেন।

আরও পড়ুন: SSC Scam: কোনও অন্যায় করিনি; আমাকে ফাঁসানো হয়েছে, গ্রেফতার হয়ে চিত্কার পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার

বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা আসে শুনানির জন্য। এই বেঞ্চও আপিলের শুনানি করতে অস্বীকার করে এবং প্রধান বিচারপতির কাছে ফিরিয়ে দেয়। অবশেষে, বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং কৃষ্ণা রাও-এর পঞ্চম ডিভিশন বেঞ্চ এই বিষয়ে শুনানি করতে রাজি হয়।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আরেকটি নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা এস পি সিনহাকে সিবিআইয়ের আঞ্চলিক প্রধানের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসতে বলা হয়। যদিও, বিচারপতি সেন এবং মুখার্জির ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয়।

অবশেষে, বিচারপতি তালুকদার এবং রাও-এর ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আদেশ বহাল রাখে। যদিও এসপি সিনহা এবং রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা সচিব এ কে সরকাকে সিবিআইকে তাদের হেফাজতে নিতে পারবেনা সেই কথাও জানায় তারা।

অন্যদিকে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং আনন্দ কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আদেশ স্থগিত করে। এর ফলে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জিকে সেই সন্ধ্যায় সিবিআই-এর সামনে হাজিরার হাত থেকে রক্ষা পান।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.