শোভনকাণ্ডে মুকুলকে টেক্কা দিতে গিয়ে দলের মুখ পোড়ালেন দিলীপ, ক্ষুব্ধ দিল্লি নেতৃত্ব

প্রাক্তন মেয়রকে নিয়ে হারাকিরিতে মুখ পুড়েছে দলের। তা মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না দিল্লির নেতৃত্ব।

Reported By: অঞ্জন রায় | Updated By: Nov 1, 2019, 10:20 PM IST
শোভনকাণ্ডে মুকুলকে টেক্কা দিতে গিয়ে দলের মুখ পোড়ালেন দিলীপ, ক্ষুব্ধ দিল্লি নেতৃত্ব

অঞ্জন রায়: লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ভাঙিয়ে অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিং ও ভারতী ঘোষদের বিজেপিতে এনেছিলেন মুকুল রায়। তার ডিভিডেন্ট পেয়েছে গেরুয়া শিবির। স্বাভাবিকভাবে চাপ বাড়ছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতির উপরে। মুকুলকে টেক্কা দিতে দিলীপ ঘোষকে আনলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু সেটাই এখন ব্যুমেরাং। শোভনকে ধরে রাখতে পারলেন না দিলীপরা। তার জেরে মুখ পুড়ল বিজেপির। আর এতে যারপরনাই ক্ষুব্ধ দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে গুচ্ছের নালিশ।      

রাজনীতিতে দলের অন্দরেই থাকে প্রতিযোগিতা। একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন নেতারা। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ছাপিয়ে যেতে গিয়েই গোল খেলেন দিলীপ ঘোষ। দল ভাঙানোর খেলায় রীতিমতো মাস্টারি করে ফেলেছেন মুকুল রায়। লোকসভা ভোটের আগে তাঁর আনা নিশীথ প্রামাণিক, সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিংসরা এখন সাংসদ। ঘাটালে হারলেও ভারতী ঘোষ লড়াই ছুড়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। নিজেকে প্রমাণের তাগিদে শোভনকে তৃণমূল থেকে ভাঙিয়ে আনার পরিকল্পনা করেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও দিলীপ ঘোষ। জয়প্রকাশই উদ্যোগ নেন। এরপর শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। এরপরই দিল্লিতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান শোভন-বৈশাখী। ওই সাংবাদিক বৈঠকে ডেকে নেওয়া হয় মুকুল রায়কে। কিন্তু শোভনকে দলের আনার নেপথ্যে আগাগোড়া ছিলেন দিলীপ ঘোষ। 

শোভন চট্টোপাধ্যায় দলে আসার পর থেকে তাঁকে নিয়ে জেরবার হয়েছে বিজেপি। দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছিল, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় কত দরের নেত্রী যে তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে যোগদান করাতে হবে? দিলীপ ঘোষরা তখন শোভনের সাংগঠনিক দক্ষতা ও দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছিলেন। কিন্তু দেবশ্রীকে নিয়ে বেঁকে বসেন শোভনবাবু। দেবশ্রীকে নিলে তাঁর পক্ষে বিজেপি করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন। দিল্লিতে গিয়েও কথা বলে আসেন শোভন-বৈশাখী। কিন্তু রাজ্য সভাপতিও গোঁ ধরে থাকেন, কারও ব্যক্তিগত আপত্তি থাকতেই পারে তবে দল এসবের ঊর্দ্ধে। এরপর দলীয় অনুষ্ঠানেও দেখা যায়নি তাঁদের। অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা রাজ্যে ঘুরে গিয়েছেন। কিন্ত বেপাত্তাই ছিলেন তাঁরা।

মানভঞ্জন করে ভাইফোঁটায় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান শোভন-বৈশাখী। রাজনৈতিক সম্পর্কের বাইরে শোভনকে স্নেহ করেন 'দিদি' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়, শোভনের তৃণমূলে যোগদান সময়ের অপেক্ষা। শুক্রবার শোভনকে ওয়াই ক্যাটগরির নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। 

নারদাকাণ্ডে অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই শোভনকে দলে নেওয়া মানে নারদাকে হাতিয়ারকে ভোঁতা করে দেওয়া। প্রাক্তন মেয়রকে নিয়ে হারাকিরিতে মুখ পুড়েছে দলের। তা মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না দিল্লির নেতৃত্ব। দিলীপের হঠকারিতায় নেতারা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। তবে দলের মুখ পুড়েছে মানতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। তাঁর যুক্তি, রাজনীতিতে এমনটা হয়েই থাকে।      

আরও পড়ুন- পরের পুজোয় সরকারি কর্মীদের ১৫ দিনের টানা ছুটি ঘোষণা মমতার, ছটপুজোয় ৩দিন ছুটি
    

 

.